তিনি গোল করেন নিখুঁত আঁচরে। যেন রঙতুলিতে ফুটিয়ে তোলেন ফুটবলের একেকটি দৃশ্যপট। মাঠজুড়ে তার দাপট। পরিসংখ্যানজুড়ে তার রাজত্ব। অথচ একটা শূন্যতা ঠিক বুকের মধ্যিখানে বাসা বেঁধে ছিল—শিরোপার পরম আরাধনা।
হ্যারি কেন। এক নামেই যার ইতিহাস, অথচ এতদিন সেই ইতিহাসে ছিল না কোনো সোনালি ট্রফির অক্ষর। যেন ফুটবল ঈশ্বরও তার ভাগ্যে শুধু কীর্তি রেখেছিলেন, কিন্তু জয়োৎসব ছিনিয়ে নিয়েছিলেন বারবার।
টটেনহ্যামের হয়ে এক যুগেরও বেশি সময়; শত শত গোলের উল্লাস, দর্শকদের কণ্ঠভরা প্রশংসা—সবই ছিল, শুধু একবারের জন্যও হাতে ওঠেনি কোনো শিরোপা। জাতীয় দলের হয়ে তার প্রজ্ঞা ও নেতৃত্বে ছিল ঔজ্জ্বল্য, কিন্তু শেষ হাসি ছিল না তার জন্য।
আরো পড়ুন:
লিভারপুল ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানালেন আর্নল্ড, যাচ্ছেন কোথায়?
লিভারপুল ও ম্যানইউ হোঁচট, চেলসি-ব্রেন্টফোর্ডে হাসি
বায়ার্ন মিউনিখে এসে নতুন স্বপ্ন বুনেছিলেন তিনি। কিন্তু হায়, নতুন দলের পুরোনো সৌভাগ্য যেন সঙ্গ ছেড়ে দেয় তখনই। গত এক দশক ধরে বুন্দেসলিগার একচ্ছত্র অধিপতি বায়ার্ন সেই বছরই শিরোপা হাতছাড়া করে দেয়—আর হ্যারি কেন যেন আরও একবার পরিণত হন ট্র্যাজেডির নায়ক।
ফুটবল বিশ্ব মেতে ওঠে হাসির খোরাকে— “কেন যেদিকে যান, ট্রফি সেদিকে পিঠ দেখায়।” মিম আর ব্যঙ্গ বিদ্রুপের সেই ঝড়েও হ্যারি ছিলেন অবিচল, নিঃশব্দে চালিয়ে গেছেন তার কাজ—গোল করে যাওয়া।
এবং অবশেষে সময় এসেছে শ্রুতিমধুর এক প্রতিশোধের। নাটকীয় এক মোড় ঘুরিয়ে, রোববার (০৪ মে) লেভারকুসেনের পা হড়কাল। আর বায়ার্নের হাতে উঠল বুন্দেসলিগার রেকর্ড ৩৩তম শিরোপা। আর সেই ট্রফির গায়ে প্রতিফলিত হলো হ্যারি কেনের চোখের আলোর রেখা—এক অপেক্ষার অবসান। এক যন্ত্রণা ভরা যাত্রার পর কাঙ্ক্ষিত সাফল্য।
এই মৌসুমেও কেন ছিলেন দুর্দান্ত। ২৪ গোল করে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে আতঙ্ক ছড়িয়েছেন প্রতিনিয়ত। প্রতিটি গোল যেন তার নিজের ক্ষতগুলোয় বাঁচার ও লড়াইয়ের প্রতিচ্ছবি।
তবে ফুটবল রসিকেরা থেমে নেই। তারা বলছেন, “কেনের নাকি কাপের প্রতি এলার্জি”। কারণ, যে ট্রফিটি জিতেছেন, সেটি ‘কাপ’ নয়, দেখতে অনেকটা বড় এক থালার মতো!
কিন্তু হ্যারি কেন জানেন, আকৃতি নয় অর্জনের গৌরবই মুখ্য। আজ হয়তো হাতে এসেছে এক শিল্ড, কিন্তু তা-ই তো তার জীবনের প্রথম সত্যিকার ট্রফি। প্রথম ভালোবাসার মতো অমূল্য।
এটা এক সূচনা মাত্র। জার্মানির মাঠে তিনি এসেছেন শুধু গোল করতে নয়, এসেছেন ভাগ্যকে উল্টো পথে হাঁটাতে। আর তার ফুটবল-জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলো এক সোনালি শিরোনাম দিয়ে ‘‘অবশেষে হ্যারি কেন জিতেছেন.
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল গ ল কর ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
পর্যটকে পরিপূর্ণ কুয়াকাটা
দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটির তৃতীয় দিন শুক্রবার (৩ অক্টোবর) পর্যটকে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে পটুয়াখালীর পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা। ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকতের তিন নদীর মোহনা, লেম্বুর বন, শুটকি পল্লী, ঝাউবাগান, গঙ্গামতি, চর গঙ্গামতি ও লাল কাঁকড়ার চড়ে এখন পর্যটকদের সরব উপস্থিতি। তাদের নিরাপত্তায় তৎপর রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, আগত পর্যটকরা সৈকতের বালিয়াড়িতে উচ্ছ্বাসে মেতেছেন। তাদের অনেকে সমুদ্রের ঢেউয়ে গা ভিজিয়ে এবং ওয়াটর বাইকে চড়ে আনন্দ করছেন। অনেকে আবার সৈকতের বেঞ্চিতে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। পর্যটকদের কেউ কেউ মোটরসাইকেল কিংবা ঘোড়ায় চরে বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখছিলেন। সব মিলিয়ে সৈকতের উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
আরো পড়ুন:
চার দিনের ছুটিতে কক্সবাজার রুটে চলবে ‘ট্যুরিস্ট স্পেশাল’ ট্রেন
১ অক্টোবর থেকেই কেওক্রাডং যেতে পারবেন পর্যটকরা, মানতে হবে ৬ নির্দেশনা
পাবনা থেকে আসা হোসেন শহীদ ও সোনিয়া দম্পতি জানান, পূজা ও সরকারি ছুটি থাকায় তারা কুয়াকাটায় এসেছেন। সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করেছেন তারা। এই দম্পতির অভিযোগ, হোটেল ভাড়া কিছুটা বেশি রাখা হয়েছে।
বরিশালের কাউনিয়া থেকে আসা সম্রাট বলেন, “কয়েকটি পর্যটন স্পট ঘুরে দেখেছি। বৃহস্পিতবার বিকেলে বৃষ্টির মধ্যে লাল কাকড়ার চড়, গঙ্গামতি ও লেম্বুর বন ঘুরেছি। দারুন এক অনুভূতি হয়েছে।”
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, “পর্যটকদের নিরপত্তা নিশ্চিতে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্য মোতায়েন রয়েছে।”
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ