অবশেষে বিদ্রোহ করা পুরো ১৮ নারী ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাফুফে। শুধু চুক্তিই করেনি, বিদ্রোহী মেয়েদের বেতনও বেড়েছে। সব মিলিয়ে বাফুফের সঙ্গে চুক্তি হওয়া ফুটবলারের সংখ্যা ৫৩ জন।
মোট তিন ক্যাটেগরিতে বেতন পাবেন সাবিনারা। সিনিয়রদের বেতন পাঁচ হাজার বেড়ে হয়েছে ৫৫ হাজার টাকা। আর সর্বনিম্ন ২০ হাজার করে পাবেন জুনিয়ররা।
সামনে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের দুটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ আছে। আগামী ৩১ মে তারা মুখোমুখি হবে জর্ডানের, ৩ জুন খেলবে ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে। এই ম্যাচের জন্য ভুটানে খেলতে যাওয়া ১০ জনের মধ্যে পাঁচজনকে জাতীয় দলে ডেকেছেন পিটার বাটলার।
দ্রুতই পিটারের ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার কথা মনিকা, মারিয়া, রুপনা, শামসুন্নাহার ও ঋতুপর্ণার।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র ফ টবল র ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
ঠান্ডা মাথায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ের বার্তা মমতার
পাকিস্তান ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় যুদ্ধের ডামাডোলে ঐক্যের ডাক দিয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ের জোরালো বার্তা দিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেছেন, “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমাদের একত্রিত থাকতে হবে। এই সময় আমাদের মধ্যে যেন কোনো বিভেদ না আসে।”
বুধবার (৭ মে) রাজ্য সরকারের সচিবালয় নবান্নে সংবাদ সম্মেলনে এসে ঐক্যের বার্তা দিয়ে মমতা বলেন, “রাজ্যের নাগরিক হিসেবে, সংবাদমাধ্যমের কর্মী হিসেবে আপনাদের দায়বদ্ধতা আছে; এই সময়টা শান্ত এবং সংযত থেকে মানুষকে সঠিক সত্য পরিবেশন করার, যাতে কোনো অশান্তি তৈরি না হয়, কোনো প্ররোচণামূলক পরিস্থিতি তৈরি না হয়, কোনো সহিংসতা না ছড়ায় বা কোনো সন্ত্রাস না ছড়ায়। সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করার জন্য আবেদন করছি।”
আরো পড়ুন:
মোদিকে মমতা: দাঙ্গায় নয়, সীমান্ত সুরক্ষায় নজর দিন
পশ্চিমবঙ্গের সহিংসতার বিষয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য নাকচ ভারতের
এদিন বিকালেই পাকিস্তান, নেপালের পাশাপাশি বাংলাদেশ, ভুটানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে থাকা ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
দিল্লীতে ওই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীর, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পাঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাট, উত্তরাখন্ড, সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে রাজ্যগুলোর মুখ্য সচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি, লাদাখের লেফটেনেন্ট গভর্নরও উপস্থিত ছিলেন। যদিও তাদের অনেকেই অন্য রাজ্য থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠকের বিষয়ে মমতা বলেন, “আজকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সীমান্তবর্তী কয়েকটি রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করেছেন; বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “সমস্ত রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দপ্তরগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী কর্মকর্তাদের ডেকে আমরা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। পহেলগামে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করছে, আমরা সকলেই তাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করব। এই সময় আমাদের মধ্যে যাতে কোনো বিভেদ না হয়। আমরা সবাই দেশের পক্ষে। এই মানসিকতা নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
মমতা বলেন, “আমরা দেশটাকে ভালোবাসি। আমাদের বাংলা চিরকাল দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে। কাজেই আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য কোনো রকম ভয় না পেয়ে একদম ঠান্ডা মাথায় সবটা আগলে রাখতে হবে।”
আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, “আমাদের সকলের সাথেই যোগাযোগ থাকবে, মনিটারিং চলবে। যদিও চিন্তার কিছু নেই, আতঙ্কিত হওয়ারও কোনো কারণ নেই। যদি সেরকম কিছু হয় তথ্য থাকলে আগাম জানিয়ে দেওয়া হবে।”
ফেসবুক, ইউটিউবসহ ডিজিটাল মিডিয়া, গণমাধ্যমে সঠিক তথ্য পরিবেশনের আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অন্যথায় কেন্দ্রীয় সরকারের গাইডলাইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মনে রাখতে হবে এটা টিআরপি বাড়ানোর সময় নয়, এটা দেশ রক্ষার সময়।”
গুরুতর কোনো তথ্য থাকলে রাজ্য সরকারের প্রদেয় নির্দিষ্ট নম্বরে তথ্য জানানোর আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কলকাতা আমাদের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম দিনরাত ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। আজকের বৈঠকে উত্তরবঙ্গেও চালু করার কথা বলা হয়েছে। পুলিশকে সতর্ক করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট জেলার শাসক, পুলিশ সুপারদের সতর্ক করা হয়েছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মোবিলিটি বাড়বে, ভিজিলেন্স থাকবে। এখন সমস্ত ছুটি বাতিল করা হয়েছে।”
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের বেসরকারি এবং ইংরেজি মাধ্যম স্কুল কর্তৃপক্ষকে ছুটি ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের রাজ্যে সরকারি স্কুলগুলোতে গরমের ছুটি পড়ে গেছে। বেসরকারি এবং ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোকে আহ্বান জানাব, তারাও যাতে এই পরিস্থিতিতে ছুটি ঘোষণা করে। ৯ এপ্রিল শুক্রবার রবীন্দ্রজয়ন্তীর দিন থেকে ছুটি ঘোষণা দিলে ভালো হয়। বাচ্চারা যত বাড়িতে থাকে ততই ভালো।”
এরকম এক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীরা যাতে কোনো জিনিসের দাম বাড়াতে না পারেন, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বৃহস্পতিবার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা জানেন সেই ১৯৭১ সালে শেষ যুদ্ধ হয়েছিল। এরপর কার্গিলের যুদ্ধ কাশ্মীরের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, পরবর্তীতে বালাকোট বা পুলওয়ামাতেও যে ঘটনা ঘটেছিল, তার রেশ এদিকে আসেনি। আজকের যে পরিস্থিতি... যদিও এখানকার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, তবু যেহেতু আমাদের সঙ্গে অনেকগুলো দেশের সীমান্তে রয়েছে, পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের সীমান্ত রয়েছে; তাই সবাইকে একসাথে ভালো করে চলতে হবে, শান্তিতে রক্ষা করতে হবে।”
ঢাকা/সুচরিতা/রাসেল