ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার সাথে তারা সংহতি প্রকাশ করে এই অবস্থান নিয়েছে।

শুক্রবার (৯ মে) দিবাগত রাত ৪টার দিকে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ যমুনার সামনে এসে ছাত্র-জনতার সাথে সংহতি জানিয়েছেন।

এর আগে, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছিল ইসলামী ছাত্রশিবির।

আরো পড়ুন:

যমুনার সামনে রাজপথে জুলাই আহতরা

যমুনার চারপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থান

বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ ঘোষণা দেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সংগঠক ও ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ।

উল্লেখ্য, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ নেতৃত্বে রাত ১০টা থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়েছেন নেতাকর্মীরা। রাত একটার  দিকে মিছিল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে আসেন জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তাদের সঙ্গে রয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।

ঢাকা/সুকান্ত/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ অবস থ ন ন

এছাড়াও পড়ুন:

রাতভর অবস্থানের পর সকালেও যমুনার সামনে বিক্ষোভ

আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি এখনও চলছে।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৬টার সময়ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কয়েক শ’ নেতাকর্মী বিক্ষোভ করছেন। তাঁরা কিছুক্ষণ পরপর স্লোগান দিচ্ছেন।

এতে জাতীয় নাগরিক পার্টি, জুলাই ঐক্য, শিবির, আপ বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, কওমী মাদরাসার শিক্ষার্থী, ইনকিলাব মঞ্চ, ছাত্র পক্ষের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন উপস্থিত হচ্ছেন। ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে মিছিল। 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দায়িত্ব ছিল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা: নাহিদ ইসলাম

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সেখানে অবস্থান নেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। রাত ২টার দিকে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দায়িত্ব ছিল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা। কিন্তু আমাদের আবারও এই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন করতে হচ্ছে।’

এ সময় তিনি ‘ব্যান ব্যান আওয়ামী লীগ’, ‘আমার সোনার বাংলায়, আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, মুজিববাদের কবর দে’, ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদসহ নানা স্লোগান দেন। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশ-র‍্যাবের অবস্থান

এদিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশ-র‍্যাব অবস্থান নেয়। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান করেন। তারা নানা স্লোগান দিচ্ছেন। তারা 'ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামী লীগ নো মোর', খুনি লীগের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে হবে, ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা' ইত্যাদি স্লোগান দেন। 

কর্মসূচিতে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, আপ বাংলাদেশের আলী আহসান জুনায়েদ, রাফে সালমান রিফাত, মোহাম্মদ হিযবুল্লাহ, শিবিরের দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, ইনকিলাব মঞ্চের শরীফ ওসমান হাদিসহ কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়া এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক তাসনীম জারা, যুগ্ম আহবায়ক মনিরা শারমিন, নুসরাত তাবাসসুম, তাজনূভা জাবীন, সারোয়ার তুষার অংশ নিয়েছেন। 

ছাত্রসংগঠনের মধ্যে সমন্বয়ক আব্দুল কাদের, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সদস্যসচিব জাহিদ আহসান, জুলাই ঐক্যের এবি জুবায়ের, মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ প্রমুখ উপস্থিত আছেন। 

শিক্ষার্থীদের অবস্থানকে কেন্দ্র করে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনের সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে পুলিশ। এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। 

কর্মসূচিতে এনসিপির যুব উইংয়ের প্রধান তারিকুল ইসলাম বলেন, আমরা দীর্ঘ সময় এখানে অপেক্ষা করবো। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আগে আমরা যমুনার সামনে থেকে যাচ্ছি না। 

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে ইন্টেরিমকে আর সময় দিতে রাজি নই, লাশ হয়ে ফিরবো না হয় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। 

কর্মসূচিতে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, নয় মাস কেটে গেছে দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম নেই। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা পালিয়ে যাচ্ছে। আমরা দেখেছি- বিচার না করে ছয়শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাদের পালিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছে। এজন্য আমরা দাবি জানিয়েছি, আওয়ামীলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে। 

নিষিদ্ধ হচ্ছে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ: আসিফ মাহমুদ
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ। সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই প্রসেস করে সব ফরমালিটি শেষ করে এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। 

তিনি আরও বলেন, গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনগুলোর নিষিদ্ধ এবং রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্ন করণ নিশ্চিত করাই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অঙ্গীকার।

এ দিকে নাহিদ ইসলাম ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন  যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নিষিদ্ধ করার প্রহসন মেনে নেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী ও ফ্যাসিস্ট সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে। আইসিটি আইনে দল হিসেবে বিচার করার বিধান যুক্ত করতে হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মধ্যরাতে জাবি শিক্ষার্থীদের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ
  • জুমার পর সবাইকে আন্দোলন মঞ্চে আসার ডাক
  • আ. লীগ নিষিদ্ধের দাবি, বাদ জুমা বড় জমায়েতের ডাক হাসনাত আবদুল্লাহর
  • আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবি: যমুনার সামনে তৈরি হচ্ছে মঞ্চ
  • আ. লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বাদ জুমা বড় জমায়েতের ঘোষণা হাসনাত আবদুল্লাহর
  • রাতভর অবস্থানের পর সকালেও যমুনার সামনে বিক্ষোভ
  • ইন্টেরিম কী কী বিচার ও সংস্কার করেছেন: হাসনাত আবদুল্লাহ
  • প্রথম ধাপের চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন গণঅভ্যুত্থানে আহত খোকন 
  • জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে ওসমানী উদ্যানে নির্মিত হবে স্মৃতিস্তম্ভ