আফজাল হোসেন ও শাকিব খান– দুই সময়ের সেরা দুই তারকা। প্রথমজন এখন অভিনয়ে অনিয়মিত, পরেরজনের এখন ব্যস্ত সময়। একজনের অভিনয়জীবন ৪৭ বছরের, আরেকজনের ২৪ বছরের। উভয়েই একে অপরের প্রতি মুগ্ধতার কথা জানিয়েছেন আগেই। যদিও দু’জনের সামনা-সামনি দেখা খুব বেশি দিনের নয়। সেটি ২০২১ সালে। সে বছরের ১২ নভেম্বর ভোরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বোর্ডিং পয়েন্টে প্রথম দেখা। এরপর একসঙ্গে নিউইয়র্ক যাত্রা। মাঝে কেটে গেছে লম্বা সময়। এক সময় শাকিব খানকে নিয়ে মুগ্ধতার কথা জানিয়েছেন আফজাল হোসেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, এটি কারও অস্বীকার করার উপায় নেই, শাকিব একটি চমৎকার অবস্থান তৈরি করেছে। তার বিশাল এক দর্শক শ্রেণি আছে। সে শুধু বাংলাদেশি ফিল্মের হিরো, তা-ও নয়। যখন সে ভারতের বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেছে, আমি দেখেছি, একজন কনটেম্পোরারি হিরোর যা কিছু থাকা লাগে, তার মধ্যে সবই আছে। তার মধ্যে দারুণ একটা পাওয়ার আছে।
শাকিব খানও জানিয়েছিলেন, ছোটবেলা থেকেই আফজাল হোসেনের অভিনয় ও স্টাইলে মুগ্ধ তিনি। এই দুই সেরা তারকা এবার একসঙ্গে একই সিনেমায় অভিনয় করছেন। সেটি ‘তাণ্ডব’। রায়হান রাফী পরিচালিত সিনেমাটির ৭০ শতাংশ শুটিং ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে শাকিব খানকে নিয়ে এ নির্মাতার ‘তুফান’ দারুণ প্রশংসিত হয়। নির্মাতা রায়হান রাফী জানিয়েছেন, ‘তুফান’-এর তুলনায় এবার অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছেন তিনি। এবার তাঁর নির্মাণে এক হচ্ছেন দুই সময়ের শীর্ষ এ দু’জন। তাদের একসঙ্গে কাজ করার বিষয়টি এখনও অফিসিয়ালি কিছু জানায়নি পরিচালক ও প্রযোজনা সংস্থা। সূত্রের বরাতে নিশ্চিত হওয়া গেছে বিষয়টি। জানা গেছে, সিনেমায় পুলিশের স্পেশাল ফোর্স ‘সোয়াট’-এর প্রধানের ভূমিকায় দেখা যাবে আফজাল হোসেনকে।
‘তাণ্ডব’ মুক্তি পাবে আগামী ঈদুল আজহায়। এতে শাকিব খানের বিপরীতে বড়পর্দায় অভিষেক হতে যাচ্ছে সাবিলা নূরের। ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ছবির বেশ কিছু লুক ভাইরাল হয়েছে। প্রথমে বেশ গোপনীয়তার সঙ্গে শুটিং শুরু করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। একাধিক ভিডিও ও স্থিরচিত্রে সেটি প্রকাশ্যে আসে। রাজধানীর এফডিসি ছাড়াও রাজশাহীর বিভিন্ন লোকেশনে শুটিং করছেন শিল্পীরা। সিনেমাটিতে বিদেশি ফাইট ডিরেক্টর ও টেকনিশিয়ানদের যুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্মাতা রাফী। তিনি বলেন, ‘এখনই কিছু বলতে চাই না। আগে কাজটা শেষ হোক। অনেক চমক থাকছে সিনেমাটিতে।’ এ ছবির একটি বিশেষ চরিত্রে থাকছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। বিভিন্ন চরিত্রে এতে দেখা যাবে শহীদুজ্জামান সেলিম, ফজলুর রহমান বাবু, এফএস নাঈমসহ অনেককেই।
এদিকে আফজাল হোসেনকে সর্বশেষ দেখা গেছে ‘কোনো একদিন’ নামে একটি নাটকে। যে নাটকটি ফারিয়া হোসেনের লেখা ঈদের জন্য নির্মাণ করেন চয়নিকা চৌধুরী। এতে আফজাল হোসেনের সঙ্গে অভিনয় করেন সাদিয়া ইসলাম মৌ। তার আগে ওটিটিতে কনটেন্ট কারাগার সিরিজেও ছিল তাঁর দারুণ উপস্থিতি। সিনেমা নির্মাণেও হাত দিয়েছেন এ অভিনেতা। তাঁর পরিচালিত ডকু-ফিকশন সিনেমা ‘মানিকের লাল কাঁকড়া’। এর আগে নাটক ও বিজ্ঞাপনচিত্র পরিচালনা করলেও পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এটিই তাঁর প্রথম।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আফজ ল হ স ন পর চ ল
এছাড়াও পড়ুন:
আইএমএফের দুই কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার মিলবে দু-এক দিনের মধ্যে
বাংলাদেশের জন্য চলমান ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব অনুমোদনে করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের সভায় এ অনুমোদন করা হয়। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে একসঙ্গে দুই কিস্তির ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার বাংলাদেশ পাবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা দিতে ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করা হয়। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণ সহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ হলো আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার এবং ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে। তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ২৩৯ কোটি ডলার। ১৩০ কোটি পাওয়া গেলে ১০৯ কোটি ডলার বাকি থাকবে। তবে এ কর্মসূচির সঙ্গে নতুন করে প্রায় ৭৬ কোটি যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও শর্ত পরিপালন নিয়ে, বিশেষত টাকা-ডলার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। ফেব্রুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এপ্রিলে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল শর্ত পালনের অগ্রগতি পর্যালোচনায় ঢাকায় আসে। তবে সমঝোতা না হওয়ায় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এর পর ওয়াশিংটনে ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হয়।
সবশেষ গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতা হয় এবং বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং পর্ষদ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে।