বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএসএ) ১২১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও ৯ জন সহসভাপতি, ৯ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ২০ জন সম্পাদক ও সহসম্পাদক এবং ৮১ জনকে সদস্য করা হয়েছে।

এর আগে ১ মে অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নতুন কমিটি গঠিত হয়। এতে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মো.

নাজমুল করিম খান সভাপতি এবং ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আনিসুজ্জামান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এবার পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হলো।

পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আলী হোসেন ফকির, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম আওলাদ হোসেন, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজিপি) মোসলেহ্ উদ্দিন আহমদ, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক সরদার নূরুল আমিন, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির ডিআইজি মো. জিল্লুর রহমান, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, ঢাকা রেঞ্জ অফিসের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ আবদুল মাবুদ সহসভাপতি হয়েছেন।

সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি/এডুকেশন, স্পোর্টস অ্যান্ড কালচার) শামীমা পারভীন, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, মুন্সিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার, গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার চৌধুরী মো. যাবের সাদেক, নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. আবদুল্লাহ আল–ফারুক, পাবনা জেলা পুলিশ সুপার মো. মোরতোজা আলী খান, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু, পুলিশ সুপার মো. জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ ও নেত্রকোনা জেলা পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন।

এ ছাড়া কমিটিতে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন সাংগঠনিক সম্পাদক, ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (আইএডি) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী দপ্তর সম্পাদক, ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম অর্থ সম্পাদক হয়েছেন।

আরও পড়ুনবাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল, সম্পাদক আনিসুজ্জামান০১ মে ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ড আইজ ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

‘দেশের কোনো সরকার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অধিকারের স্বীকৃতি দেয়নি’

পার্বত্য চট্টগ্রামে নাচ–গান ও বর্ণিল শোভাযাত্রায় আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালিত হচ্ছে। আজ শনিবার সকাল ১০টা থেকে রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলায় শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে এই উৎসব শুরু হয়। এতে নিজ জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী পোশাকে অংশ নেন হাজারো তরুণ-তরুণী। এসব অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘দেশের কোনো সরকার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অধিকারের স্বীকৃতি দেয়নি। দিন দিন পাহাড়িদের ইতিহাস, ঐতিহ্য-সংস্কৃতি, ভাষা, রীতি-নীতি ও প্রথা হারিয়ে যাচ্ছে।’ তিন পার্বত্য জেলার প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন।

বান্দরবানে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন ও ভূমি মালিকানা নিশ্চিতের দাবি করেছেন।

আজ সকাল নয়টায় জেলা শহরের রাজার মাঠে এই সমাবেশ শুরু হয়। এতে জেলার মারমা, ত্রিপুরা, ম্রো, খেয়াং, খুমি, তঞ্চঙ্গ্যা, চাকমাসহ ১১টি জাতিগোষ্ঠীর নিজ নিজ জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে অংশ নেন।

আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক মং উষাথোয়াই মারমা এ সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন। এতে অতিথি ছিলেন আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং মারমা, দৈনিক আমাদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক এহসান মাহমুদ ও যুব ইউনিয়নের সভাপতি খান আসাদুজ্জামান। এতে আরও বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান থোয়াইং চ প্রু, জেলা পরিষদের সদস্য উবাথোয়াই মারমা, বান্দরবান সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সুচিত্রা তঞ্চঙ্গ্যা, রাখাইন প্রতিনিধি মাম্যা রাখাইন, ম্রো স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তনয়া ম্রো, আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাবেক সভাপতি সুমন মারমা, বম ছাত্র অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জেমস বম প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৭২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের তৎকালীন সংসদ সদস্য মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা বহুত্ববাদী বাংলাদেশের প্রস্তাব দেন। এটি মেনে নিলে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা হতো না। আজ সেই বহুত্ববাদের কথা জুলাই আন্দোলনের পরে নতুন করে ভাবা হচ্ছে।

রাঙামাটি

রাঙামাটিতে আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার বলেছেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্য-সংস্কৃতি, ভাষা, রীতি–নীতি ও প্রথা হারিয়ে যাচ্ছে। আমরাও হারিয়ে যাচ্ছি। আমরা সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাই।’

আজ বেলা ১১টার দিকে রাঙামাটি শহরের পৌরসভা মাঠে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য অঞ্চলের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা। উদ্বোধন করেন শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা। এতে আরও বক্তব্য দেন মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপণ দেওয়ান, আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য অঞ্চলের সদস্য নিকোলায় পাংখোয়া, উসিংসা রাখাইন, ইন্টুমনি তালুকদার প্রমুখ।

অনুষ্ঠান শেষে দুপুর ১২টার দিকে শোভাযাত্রার আয়োজন হয়। এটি জেলার পৌরসভা গেট থেকে শুরু করে কাঁঠালতলী, বনরূপা, হ্যাপীর মোড়, নিউমার্কেট, বিজন সরণি ও উত্তর কালিন্দীপুর এলাকা প্রদক্ষিণ করে শিল্পকলা একাডেমি এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।

খাগড়াছড়ি

খাগড়াছড়িতে আজ বেলা ১১টায় আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদ্‌যাপন কমিটির উদ্যোগে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এতে নিজেদের জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে পাহাড়ি নারী–পুরুষেরা অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি শহরের শাপলা চত্বর, আদালত সড়ক ও নেন্সি বাজার হয়ে খাগড়াপুর গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তারা পাহাড়ে নারী নির্যাতন বন্ধ, পাঠ্যপুস্তকে মাতৃভাষায় পাঠদান নিশ্চিত করা, পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ভূমি অধিকার রক্ষা করা, ভূমি কমিশন কার্যকরসহ বিভিন্ন দাবি জানান। পাশাপাশি বক্তারা অবিলম্বে জাতিসংঘ ঘোষিত আদিবাসীবিষয়ক ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে সরকারকে আহ্বান জানান।

আন্তর্জাতিক আদিবাসী উদ্‌যাপন কমিটির সভাপতি চাথোয়াই মং মারমা সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট স্বেচ্ছাসেবক সুধাকর ত্রিপুরা। মনোতোষ ত্রিপুরার সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুজন চাকমা, সাবেক নারী ভাইস চেয়ারম্যান রত্না তঞ্চঙ্গ্যা, উদ্‌যাপন কমিটির সদস্য জ্ঞান প্রিয় চাকমা, শিক্ষার্থী জনত্তম চাকমা, সাংস্কৃতিক কর্মী কৃপায়ন ত্রিপুরা প্রমুখ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

আদিবাসী দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌন প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। আজ বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারে সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করে শাখা মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিল (বিএমএসসি)।

সংগঠনটির শাখার সভাপতি বাবলু মারমা এই কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন। শাখা সাংগঠনিক সম্পাদক সাথোয়াইঅং মারমার সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন শাখার সহসভাপতি কো শৈমংসাই মারমা। এতে তিনি অভিযোগ করেন, পাহাড়ে বম জনগোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে রাষ্ট্র অন্যায্যভাবে বন্দী রাখছে। এ ছাড়া ভূমি বেদখল, নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের শোষণমূলক কাঠামো বিরুদ্ধে তাঁরা প্রতিবাদ জানাতে এই কর্মসূচির আয়োজন করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘দেশের কোনো সরকার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অধিকারের স্বীকৃতি দেয়নি’
  • আমি নির্বাচিত হলে ইলিয়াস আলীকে উদ্ধারের কাজ শুরু করব: হুমায়ুন কবির