বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন
Published: 10th, May 2025 GMT
বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএসএ) ১২১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও ৯ জন সহসভাপতি, ৯ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ২০ জন সম্পাদক ও সহসম্পাদক এবং ৮১ জনকে সদস্য করা হয়েছে।
এর আগে ১ মে অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নতুন কমিটি গঠিত হয়। এতে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মো.
পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আলী হোসেন ফকির, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম আওলাদ হোসেন, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজিপি) মোসলেহ্ উদ্দিন আহমদ, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক সরদার নূরুল আমিন, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির ডিআইজি মো. জিল্লুর রহমান, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, ঢাকা রেঞ্জ অফিসের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ আবদুল মাবুদ সহসভাপতি হয়েছেন।
সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি/এডুকেশন, স্পোর্টস অ্যান্ড কালচার) শামীমা পারভীন, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, মুন্সিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার, গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার চৌধুরী মো. যাবের সাদেক, নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. আবদুল্লাহ আল–ফারুক, পাবনা জেলা পুলিশ সুপার মো. মোরতোজা আলী খান, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু, পুলিশ সুপার মো. জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ ও নেত্রকোনা জেলা পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন।
এ ছাড়া কমিটিতে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন সাংগঠনিক সম্পাদক, ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (আইএডি) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী দপ্তর সম্পাদক, ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম অর্থ সম্পাদক হয়েছেন।
আরও পড়ুনবাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল, সম্পাদক আনিসুজ্জামান০১ মে ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহের আ.লীগ নেতাকে পেটানোর ভাইরাল ভিডিও নিয়ে যা জানা গেল
ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পাঠানকে কয়েকজন তরুণ একটি কক্ষের মধ্যে পেটাচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি গতকাল বুধবার রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লেও ঘটনাটি প্রায় এক মাস আগের বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
১৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একটি কক্ষে তিনজন তরুণের মধ্যে একজন চেয়ারে বসে আছেন। একজনের হাতে কাঠের একটি খাপ ও মুখে মাস্ক পরা। কক্ষের টেবিলটির দিকে ইউসুফ খানের হাত রেখে এক তরুণ চাপ দিয়ে ধরে রেখেছেন। উল্টো দিকে ইউসুফ খানের নিতম্বে কাঠ দিয়ে আঘাত করছেন মুখে মাস্ক পরা তরুণ।
অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের দুবারের সাবেক চেয়ারম্যান। ছাত্রজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জেলা যুবলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন। জেলার নান্দাইল শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজে শিক্ষকতা করে অবসরে যান। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে আছেন। তিনি নগরের মহারাজা রোডের বাসিন্দা।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ভিডিওটি নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেন ময়মনসিংহের সাবেক সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান। পরে সেটি আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজেও পোস্ট করা হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
মোহিত উর রহমান ফেসবুকে ভিডিওটি পোস্ট করে লেখেন, ‘অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, একজন নির্বিবাদী মানুষ। বাকিটা আপনাদের বিবেকের কাছে ছেড়ে দিলাম।’
ভিডিওটি আওয়ামী লীগের পেজে পোস্ট করে দাবি করা হয়, ‘চাঁদা না দেওয়ায় ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠানকে তুলে নিয়ে মারধর ও অমানবিক নির্যাতন করে বিএনপির সন্ত্রাসীরা।’
আজ দিনভর ইউসুফ খানের মুঠোফোন নম্বরে কল দিলেও তিনি বারবার কেটে দেন। তবে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে যে ব্যক্তিকে পেটানো হচ্ছে, তিনি ইউসুফ খান বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কাজী আজাদ জাহান (শামীম)।
ইউসুফ খান ও তাঁর পরিবারের বরাতে আজাদ জাহান প্রথম আলোকে বলেন, ৫ আগস্টের পর ইউসুফ খান রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় বাসা নিয়ে থাকতে শুরু করেন। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি ১৬ এপ্রিলের। ইউসুফ খান ধানমন্ডি লেকের কাছে একটি চায়ের দোকানে নিয়মিত চা খেতে যেতেন। তাঁর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার বিষয়টি বুঝে যায় একটি চক্র। ১৬ এপ্রিল বিকেলে বাসা থেকে বের হয়ে ধানমন্ডি লেকের দিকে যাওয়ার পথে ৬-৭টি মোটরসাইকেলে এসে সমন্বয়ক পরিচয়ে একটি দল তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর একটি বাসায় নিয়ে আটকে ব্যাপক মারধর করে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। কিন্তু ইউসুফ খান এত টাকা দিতে পারবেন না জানালে তারা থানায় ফোন করে মামলার ব্যাপারে জানতে চায়। পুলিশের কাছে তুলে দেওয়ার ভয় দেখালে ৫ লাখ টাকা দিতে রাজি হন ইউসুফ খান এবং কয়েক দিনের সময় চান। এরপর ইউসুফ খানকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। পরে বিভিন্নজনের সঙ্গে পরামর্শ করে বাসা পরিবর্তন করেন ইউসুফ খান। তিনি বলেন, ‘যে বাসায় ইউসুফ খান থাকতেন, সেখানে গিয়ে চক্রটি তাঁকে না পেয়ে তাঁদের করে রাখা ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়েছে। বর্তমানে ইউসুফ খান নিরাপদে আছেন।’
ময়মনসিংহে কর্মরত পুলিশের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মাসখানেক আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া একটি দল ইউসুফ খানকে আটক করেছিল। তখন পুলিশের কাছে ইউসুফ খানের মামলাসংক্রান্ত তথ্যও নেওয়া হয়। মামলা আছে জানানোর পর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেনি। হয়তো কোনো সিস্টেম করেছে।’
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম খান বলেন, ইউসুফ খান বিস্ফোরক মামলার আসামি। পুলিশ তাঁকে আটক করেনি। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির বিষয়ে তাঁরা কিছু বলতে পারবেন না।