আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার তা ছড়িয়ে পড়ার পরপরই সারা দেশে আনন্দ-উল্লাস ও মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে। 

খুলনা, কুষ্টিয়া, বগুড়া ও কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিনিধিরা আনন্দ-উল্লাসের তথ্য পাঠাচ্ছেন।

খুলনা: বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ায় উল্লাস করছেন খুলনার ছাত্র-জনতা। শনিবার (১০ মে) রাতে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে এ বিষয়ে ঘোষণার পর মহানগরের শিববাড়ি মোড়ে বিজয় মিছিল এবং সমাবেশ করেন তারা। 

আরো পড়ুন:

আ.

লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ: ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে উল্লাস

নিষিদ্ধ ঘোষণায় আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া

মিছিলে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় নাগরিক পার্টি, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী শাসনতন্ত্র যুব আন্দোলন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। মিছিলটি সার্বিকভাবে সমন্বয় করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) খুলনার সংগঠক আহাম্মদ হামিম রাহাত।

কুষ্টিয়া: আওয়ামী লীগের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় কুষ্টিয়ায় আনন্দ-উল্লাস ও মিষ্টি বিতরণ করেছে ৎছাত্র-জনতা। রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের মজমপুর গেটে দলটিকে ‘গণহত্যাকারী’ অ্যাখ্যা দিয়ে মিছিল করেন জাতীয় নাগরিক পার্টি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশে বক্তব্য দেন- কুষ্টিয়া জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান, জাতীয় নাগরিক কমিটির সংগঠক রিন্টু। 

কুমিল্লা: কুমিল্লা শহরে রাত ১১টার পর থেকেই ছাত্র-জনতা আনন্দে মেতে ওঠেন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় চলে মিছিল, স্লোগান ও ঢাক-ঢোলের উৎসব।

কুমিল্লা নগরীর টমছম ব্রিজ, কান্দিরপাড়, রাণীর দিঘীর পাড়, ঝাউতলা ও শাসনগাছা এলাকায় মিছিল বের হয়। ছাত্রদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও মিছিলে অংশ নেন। ‘স্বাধীন বিচার চাই’, ‘দুর্নীতিবাজের বিচার চাই’, ‘গণতন্ত্রের বিজয় হোক’-এমন নানা স্লোগান মুখরিত হচ্ছে পুরো এলাকা।

বগুড়া: আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের খবরে বগুড়ায় আনন্দ মিছিল হয়েছে। রাত সাড়ে ১১টায় ছাত্র-জনতার ব্যানারে শহরের সাতমাথা থেকে মিছিল বের হয়। সেটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষণ করে। 

মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ‘শেষ মুহূর্তে খবর এলো, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলো’, ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’সহ নানা স্লোগান দিয়ে উল্লাস করতে দেখা গেছে। 

ঢাকা/নূরুজ্জামান, কাঞ্চন, রুবেল, এনাম/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ ল গ র র জন ত ছ ত র জনত উল ল স শহর র আনন দ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

সাদাপাথরে লুটপাট, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতির পদ স্থগিত

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রের পাথর লুটপাটের ঘটনায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিনের পদ স্থগিত করা হয়েছে। দলীয় বিজ্ঞপ্তিতে সাদাপাথরে লুটপাটের বিষয়টি উল্লেখ করা না হলেও চাঁদাবাজি ও দখলবাজির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার রাতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ওই নেতার পদ স্থগিত করা হয়। পাশাপাশি উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মান্নানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ বিএনপির নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিনের সব পদ স্থগিত করা হয়েছে। তাঁর স্থলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি হাজী আবদুল মান্নানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে।’

বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে সরকারি প্রায় ১৫০ একর জমি দখলের অভিযোগ ছিল। এ নিয়ে গত ১৭ মার্চ প্রথম আলোর শেষ পাতায় ‘দখলসূত্রে সরকারি জমির মালিক বিএনপি নেতা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে ১৮ মার্চ সরকারি জমি উদ্ধারে অভিযানে নামে স্থানীয় প্রশাসন। এ সময় প্রায় ৭০ একর জমি থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়। এসব স্থানে থাকা ছোট-বড় ১০০টি পাথর ভাঙার (স্টোন ক্রাশার) যন্ত্র উচ্ছেদের পাশাপাশি প্রায় ৫০টি টিনশেড ঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

এ ছাড়া কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জে সরকারি জমি দখলের ঘটনায় গত ১৯ মার্চ সাহাব উদ্দিনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় জেলা বিএনপি। পাশাপাশি অভিযোগ তদন্তে জেলা বিএনপির সহসভাপতি আশিক উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

জেলা বিএনপির একটি সূত্র জানায়, গত ১০ এপ্রিল ভোলাগঞ্জে পাথর কোয়ারি পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনে সরকারি জমি দখল ও লুটপাটের ঘটনায় বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিন ও তাঁর স্বজনেরা জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, উপজেলা সভাপতির নেতৃত্বে এমন অপরাধ সংঘটিত হবে, তা কখনো ভাবা যায় না। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট ও নেতৃত্বের চরম অবমাননা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

ওই নেতার পদ স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য সুস্পষ্ট। চাঁদাবাজি, দখলবাজি, লুটপাটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ বিএনপিতে থাকতে পারবে না। সেই সঙ্গে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কেউ যাতে অপকর্ম-লুটপাট করতে না পারে, সে জন্য প্রশাসনকে আগে থেকেই জানানো হয়েছে। প্রশাসন যাতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়, সেটি আমরা জানিয়েছিলাম। স্থানীয়ভাবেও সাদাপাথর লুটপাটের বিষয়ে প্রশাসনকে জানানো হয়। কিন্তু প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ