আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত, চট্টগ্রামে মিছিল-শোভাযাত্রা
Published: 10th, May 2025 GMT
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ শনিবার রাতে উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত হওয়ার পর চট্টগ্রাম নগরে ‘আনন্দমিছিল’ ও শোভাযাত্রা হয়েছে।
রাত ১১টায় নগরের ২ নম্বর গেট ও প্রবর্তক মোড় এলাকায় আনন্দমিছিল করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা–কর্মীরা। সরেজমিনে দেখা যায়, ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য চট্টগ্রাম, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা–কর্মীরা মিছিল করছেন। মোহাম্মদ সাইফুল নামের এক শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছে। ছাত্র–জনতার বিজয় হয়েছে। এ জন্য আমরা সবাই আনন্দমিছিল করছি।’
এর আগে আজ শনিবার বিকেল থেকেই চট্টগ্রাম নগরের বিপ্লব উদ্যান ও নিউমার্কেট মোড়ে তিন দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য, জুলাই ঐক্য মঞ্চ নামের দুই সংগঠন। তিন দফা হলো আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করা ও জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র জারি করা। এ দাবিতে চলতে থাকে স্লোগান ও বক্তব্য। পরে রাতে নিষিদ্ধের এ ঘোষণা এল।
এনসিপি চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক জোবাইরুল আরিফ প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্র–জনতা ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে সেই সিদ্ধান্ত এল। এখন দ্রুততম সময়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে হবে। সংস্কারকাজ এগিয়ে নিতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষের মন্দির
মানুষের মন্দির
এটি ছিল এক বিষণ্ন রাত
ফ্যাকাশে আলোর সঙ্গে,
হৈমন্তী চাঁদের আলোয়
আলোকসজ্জিত আকাশ।
আমরা আনন্দে একত্র হয়েছিলাম
শরতের রোদে রাঙা দুপুরে
আমাদের ঘামের ফসল হাতে
. . . . . . . . . . .
আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি
আমাদের বপনের ঋতুতে
আমাদের যত্নের ঋতুতে,
আমরা ছিলাম অধ্যবসায়ী
আমরা ছিলাম নিবেদিত
আমাদের প্রচেষ্টা প্রতি,
এখন সময় এসেছে ফসল তোলার।
এই সব দিনে
আমরা ভোগ করি পরিশ্রমের ফসল
আমাদের আগে ছিল যারা,
বুঝি না আত্মত্যাগের মানে
যা জন্ম নিয়েছে
নিজের গড়া গৌরবের ছায়া হতে।
আমারও লোভার্ত হাত পৌঁছেছিল সেই আলমারিতে
একটি নিরবচ্ছিন্ন চেতনা নিয়ে,
প্রাচুর্যের মানে বুঝতে অপারগ,
এক নিঃশব্দ অস্বীকৃতির ভারে।
. . . . . . . . . . . .
এই সময়ে
কিছু মানুষ আছে,
আমার প্রতিবেশীরা,
আমার সহপথিক মানবেরা
অক্লান্ত পরিশ্রম করে, তবু ভোগে যন্ত্রণায়।
এদিকে আমার কঠিন চেতনা
আসে আর যায়
সহানুভূতির প্রাঙ্গণ দিয়ে,
ফেলে রেখে যায়
আমার জন্মগত ও ঈশ্বরপ্রদত্ত করুণা,
আমার অসংবেদনশীলতার দ্বারে।
.. . . . . . . . . . .
দশমাংশ কী,
এ কি শুধু এইটুকুই...
আমাদের সীমিত পকেট আর পার্স খালি করা
চাঁদার ঝুড়িতে ফেলার জন্য?
. . . . . . . .
আমি আমার দশম ভেড়া কোথায় দেব,
আমার দশম ছাগল,
আর কোন মন্দিরে...?
এ কি মানুষের তৈরি মন্দির,
ইট, চুনসুরকি আর কাঠ দিয়ে গড়া,
যেখানে আমরা জমায়েত হই
আমাদের স্বেচ্ছায় জমানো অস্থিরতা উজাড় করতে,
নাকি এটা তার চেয়ে বড় কিছু,
একটি মন্দির যা বিরাট কোনো চেতনার জগতে বিরাজমান,
যা আমাদের সকলকে আপন করে জড়িয়ে ধরে?
যখনযখন সবকিছু ধসে পড়বে,
তখন তুমি কোথায় দাঁড়িয়ে থাকবে?
যখন আকাশ নিজেকে গুটিয়ে নেবে,
তখন তুমি কীভাবে নিশ্বাস নেবে?
যখন তারারা তাদের আলো নিভিয়ে দেবে,
তখন কি আমাদের স্বপ্ন দেখার ক্ষমতাটাও
অদৃশ্য হয়ে যাবে?
যখন হাসি ব্যথার জন্ম দেবে,
তখন কি আমরা
অর্থবোধক অনুভূতি থেকে
সম্পূর্ণ শূন্য হয়ে যাব?
যখন আমরা আর আহারের জন্য ক্ষুধার্ত থাকব না,
তখন কি আমরা সময়ের মৃত্যুযাত্রায়
নীরবে আত্মসমর্পণ করব?
যখন দিগন্তের শেষ
আমাদের সামনে দাঁড়াবে,
তখন কি আমরা ছুটে বেড়াব
সবকিছু মনে করতে, ফিরে পেতে
যা আমরা অবহেলা করেছি,
ধ্বংস করেছি, ভুলে গেছি?
যখন সব ‘কেন’র উত্তর মিলবে,
তখন কি আমরা অবশেষে বুঝতে পারব?
যেমন মি. স্মিথ বলেছিল নিওকে,
আমরা একধরনের ভাইরাস,
একটা বিপজ্জনক জাত
যাদের সবচেয়ে বড় ক্ষমতা হলো
ধ্বংস করার দক্ষতা।
এই আত্মনির্মিত দুঃস্বপ্ন
কবে শেষ হবে?
কবে?