আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ শনিবার রাতে উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত হওয়ার পর চট্টগ্রাম নগরে ‘আনন্দমিছিল’ ও শোভাযাত্রা হয়েছে।

রাত ১১টায় নগরের ২ নম্বর গেট ও প্রবর্তক মোড় এলাকায় আনন্দমিছিল করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা–কর্মীরা। সরেজমিনে দেখা যায়, ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য চট্টগ্রাম, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা–কর্মীরা মিছিল করছেন। মোহাম্মদ সাইফুল নামের এক শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছে। ছাত্র–জনতার বিজয় হয়েছে। এ জন্য আমরা সবাই আনন্দমিছিল করছি।’

এর আগে আজ শনিবার বিকেল থেকেই চট্টগ্রাম নগরের বিপ্লব উদ্যান ও নিউমার্কেট মোড়ে তিন দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য, জুলাই ঐক্য মঞ্চ নামের দুই সংগঠন। তিন দফা হলো আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করা ও  জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র জারি করা। এ দাবিতে চলতে থাকে স্লোগান ও বক্তব্য। পরে রাতে নিষিদ্ধের এ ঘোষণা এল।

এনসিপি চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক জোবাইরুল আরিফ প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্র–জনতা ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে সেই সিদ্ধান্ত এল। এখন দ্রুততম সময়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে হবে। সংস্কারকাজ এগিয়ে নিতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স গঠন আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ন্যায় প্রতিষ্ঠার শ্রেষ্ঠ ঘটনা, শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে আবারও চিঠি দেবে সরকার: আইন উপদেষ্টা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার রায়কে ন্যায় প্রতিষ্ঠার শ্রেষ্ঠ ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনাকে এ দেশে প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের কাছে আবারও চিঠি দেবে সরকার।

আজ সোমবার রায়ের পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাছে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আইন উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের জন্য একটা ঐতিহাসিক দিন। আজকে বাংলাদেশের মাটিতে ন্যায় প্রতিষ্ঠার শ্রেষ্ঠ ঘটনা ঘটেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে শত শত মানুষের মৃত্যু, হাজার হাজার মানুষের গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা, অঙ্গহানির ঘটনা, বিকলাঙ্গ হওয়ার ঘটনার জন্য যে নৃশংস খুনি দায়ী ছিলেন, আজকে সেই শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়েছে। তাঁর প্রধান সহযোগী সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়েছে। আমি মনে করি, আজকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আরেকটি বিজয়ের দিন।’

এ সময় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের স্মরণ করেন আইন উপদেষ্টা। একইসঙ্গে শোকসন্তব্য পরিবারগুলোর কথাও মনে করেন তিনি।

ব্যক্তিগতভাবে এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি (রায়ে) বিস্মিত না, শেখ হাসিনা ও তাঁর সহযোগীদের মানবতাবিরোধী অপরাধের যে তাজা, অকাট্য ও জোরালো প্রমাণ রয়েছে, তাতে পৃথিবীর যেকোনো আদালতে বিচার হলে তাঁদের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার কথা।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আজকে আরেকটি কথা বলতে চাই, সেটা হচ্ছে আমরা শেখ হাসিনাকে এ দেশে প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের কাছে আবার চিঠি লিখব। ভারত যদি এই গণহত্যাকারীকে আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত রাখে, তাহলে ভারতকে বুঝতে হবে, বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে একটা শত্রুতা, একটা অত্যন্ত নিন্দনীয় আচরণ।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ