আওয়ামী লীগের প্রতি সহানুভূতিশীল ব্যক্তিদের উদ্দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, ‘সতর্ক হয়ে যান। একটু অসতর্কতা পরের বার আপনাদের পতনের কারণ হতে পারে। জুলাইকে মেনে না নিয়ে বাংলাদেশে শান্তিতে থাকার সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার প্রক্রিয়া ‘জুলাই জনতার’ আরেকটি বিজয়। রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাসে এ কথাগুলো বলেছেন তিনি। 

স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘স্বাধীনতা অর্জনের থেকে রক্ষা করা কঠিন। এর চেয়ে কঠিন সত্য আর নেই। লড়াই যেন থামছেই না। রাজপথের লড়াইটা সামষ্টিক, জুলাইয়ের যোদ্ধাদের মিলনস্থলে পরিণত হওয়ায় একধরনের ভালো লাগার জায়গাও তৈরি করে। মাঝে মাঝে মনে হয় ছেড়ে দিয়ে চলে যাই রাজপথে। সেটাই আমার জায়গা, যা করতে অভ্যস্ত এবং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা মাথায় এলেও থেকে যেতে হয় গণ-অভ্যুত্থানের পাহারাদার হওয়ার জন্য, জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আওয়াজটা পৌঁছে দেওয়ার জন্য। আমাদের এই লড়াইটা হয়তো দেখা যায় না, শোনা যায় না।’

তিনি লেখেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার প্রক্রিয়ায় জুলাই জনতার আরেকটি বিজয় হলো। এ এস্টাবলিশমেন্টের মধ্যে যাঁরা আওয়ামী সিম্প্যাথাইজার আছেন, সতর্ক হয়ে যান। একটু অসতর্কতা পরের বার আপনাদের পতনের কারণ হতে পারে। জুলাইকে মেনে না নিয়ে বাংলাদেশে শান্তিতে থাকার সুযোগ নেই।’

স্ট্যাটাসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থেকে কিছু উপলব্ধির কথাও তুলে ধরেন আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘সরকারে থাকাটা দুধারি তলোয়ারের ওপর দাঁড়িয়ে থাকার মতো হয়ে গেছে। সরকার কোনো ভুল করলে, সেটা আমাদের এখতিয়ারভুক্ত না হলেও জনতার কাঠগড়ায় আমাদের দুজনকে (মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ) দাঁড় করানো হয়। আবার ছাত্র-জনতা মাঠে নামলে রাষ্ট্রের ক্ষমতার ভরকেন্দ্রগুলো আমাদের সন্দেহের চোখে দেখে, টার্গেট করে। এস্টাবলিশমেন্ট মনে করে, এটা আমরা করাচ্ছি। এ ছাড়া ক্ষমতার বিভিন্ন ভরকেন্দ্রের সঙ্গে জুলাই প্রশ্নে আপস না করতে পারায় তাদের চক্ষুশূলে পরিণত হওয়াটা বোনাস।’

আসিফ মাহমুদ লিখেছেন, ‘রাষ্ট্র অনেক বড় এবং জটিল জায়গা। এখানে কোনো কিছু বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত কঠিন। তবে স্বস্তির বিষয় হলো এই উপদেষ্টা পরিষদ অনেক বাধা এলেও দিন শেষে ছাত্র-জনতার পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে, জনরায়ের বাস্তবায়ন করতে পারছে; যত দিন পারবে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে থাকবে, গণ-অভ্যুত্থানের ভয়েসের (কণ্ঠ) যথাযথ গুরুত্ব এই উপদেষ্টা পরিষদ দেবে, তত দিনই আছি। গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের পক্ষ থেকে সরে গেলে আমার আর এখানে কাজ নেই।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে নিয়ে আজ দিনভর কিছু ভুয়া ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, মাহফুজ আলম উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।

এই ফটোকার্ডগুলোর কথা উল্লেখ করেছেন আসিফ মাহমুদ। তিনি লিখেছেন, ‘এমন মিথ্যাচার বন্ধ করুন। আপনার সঙ্গে কারও চিন্তাগত পার্থক্য থাকতেই পারে, সেটাকে নোংরা মিথ্যাচারের মাধ্যমে প্রকাশ করা উচিত নয়।’ তিনি বলেন, মাহফুজ আলম প্রথম থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা এবং এর সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা কী হতে পারে, তা নিয়ে আর্গুমেন্ট (তর্ক) করেছেন। বিস্তারিত বলতে গেলে গোপনীয়তার শপথ ভঙ্গ হতে পারে বলে এর বেশি আর কিছু লিখতে চাননি বলে স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন এই উপদেষ্টা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট আম দ র সরক র জনত র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

শুধু সিরিজ নয়, লিটনের লক্ষ্য অনেক বড়

দীর্ঘদিন পর আবারো অধিনায়কত্ব পেয়েছেন লিটন কুমার দাস। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের হাতেই টি-টোয়েন্টি দলের ভার দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। দায়িত্ব পেয়ে লিটনও যেন সন্তুষ্ট। অধিনায়ক হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে তেমনটাই ইঙ্গিত দিলেন এই ব্যাটার।

সোমবার (১২ মে) মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হাজির হন লিটন। কথা বলেন নিজের নেতৃত্ব এব লক্ষ্য নিয়ে। লিটনের লক্ষ্যটা অবশ্য বড়। কেবল সিরিজ জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে চান না। আগাতে চান আরো সামনে।

এর আগেও নেতৃত্ব পেয়েছিলেন লিটন। তবে ভারতের বিপক্ষে হারের পর তাকে অব্যাহতি দেয় বিসিবি। এবার লিটন দায়িত্ব পেয়েছেন ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত। লক্ষ্যটা তাই বেশ বড়। তার কথায় নেতৃত্বের পরিকল্পনা নিয়ে লম্বা সময়ের আভাস পাওয়া গেল।

আরো পড়ুন:

২৪ ইনিংসে মাত্র ১ ফিফটি, তবুও বিশ্বকাপ পর্যন্ত লিটন অধিনায়ক?

শুরুর আগেই শেষ লিটনের পিএসএল যাত্রা

লিটন বলেন, “পার্থক্যের কথা যদি বলি, আগের পরিকল্পনাগুলো যা ছিল, সিরিজভিত্তিক ছিল। যেহেতু এখন লম্বা সময়ের একটা সুযোগ এসেছে, প্রতিটি ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করব। নিজেই জানব যে এতদূর পর্যন্ত আমার একটা লক্ষ্য আছে। অবশ্যই সিরিজভিত্তিক তো থাকবেই। এর সঙ্গে এটাও থাকবে যে সামনের দিকে আরও কী করতে পারি।”

অধিনায়ক হিসেবে সবারই একটা লক্ষ্য থাকে। কাউকে ফলো করার বিষয় থাকে। তবে লিটনের আপাতত সেদিক থেকে কেউ নেই। শুধু অধিনায়ক হিসেবেই নয়, নিজেকে খেলোয়াড় হিসেবেও ভাবছেন লিটন। দুইয়ে মিলিয়েই নিজের মতো খেলতে ও নেতৃত্ব দিতে চান।

তার ভাষ্য, ‘‘ক্যাপ্টেন্সির বিষয় তো রোল মডেল কেউই না। আপনি যে কথাটা বললন, সেটাই এন্সার দেই। ধরেন, ক্যাপ্টেন্সি ছাড়াও তো আমি খারাপ খেলেছি। এখন অধিনায়ক হয়ে আসতেছি। এটাও অপজিট সাইডও হতে পারে যে আসার পর থেকে আমি ভালো খেলতেও পারি।  আমি যেটা বললাম, পজেটিভ, নেগেটিভ দুইটা জিনিসই থাকবে। ওভাবে রোল মডেল কেউ নেই।’’

অধিনায়ক হিসেবে লিটনের আগের রেকর্ড ভালো নয়। হতাশাজনকও। সেটা ছাপিয়ে এবার বড় লক্ষ্য নিয়েই নামবেন। তেমনই ইঙ্গিত দিলেন। এবার দেখার বিষয়, সেই লক্ষ্য কতটা সফলতার মুখ দেখে।

ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ