বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, দেশে এখন একটা আধা নৈরাজ্যিক পরিস্থিতি চলছে। বেপরোয়া তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এখন যে যা ইচ্ছে করতে পারে। বিচারের নামে ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য গণহারে মামলা দেওয়া হচ্ছে। কাজেই প্রকৃত অপরাধী ও হত্যাকারীদের বেঁচে যাবার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।

সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় কবিতা পরিষদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সাইফুল হক এ মন্তব্য করেন।

দেশের চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, ধর্মীয় উগ্রবাদ ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য হরণের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে একটি ন্যায্য, মানবিক, গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে জাতীয় কবিতা পরিষদ বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। এই লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে একটি বৃহত্তর গণঐক্য গঠনের প্রয়াসে জাতীয় কবিতা পরিষদ ধারাবাহিকভাবে দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে যৌথ মতবিনিময় করছে।

সাইফুল হক বলেন, সমাজের যেকোনো সংকটে সবার আগে কবিরা তাদের লেখনির মাধ্যমে সাড়া দেন। প্রতিবাদ করেন। তিনি জাতীয় কবিতা পরিষদের প্রতি দেশের সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ব্যাপারেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সভায় জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মোহন রায়হান বলেন, বর্তমান সময়ে যারা ধর্মীয় উগ্রতা ও বাঙালি সংস্কৃতি দমন করে জনগণের মনন বিকাশকে রুদ্ধ করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে মতবিনিময় সভাগুলো করা হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, কবিতা ও রাজনীতি—দুটি শক্তি সমাজ পরিবর্তনের অন্যতম নিয়ামক।

সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রেজাউদ্দিন স্টালিন, উপদেষ্টামন্ডলীর অন্যতম সদস্য মতিন বৈরাগী প্রমুখ।

উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সহসভাপতি গোলাম শফিক, এবিএম সোহেল রশিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল জাকারিয়া, রফিক হাসান, নুরুন্নবী সোহেল, ইউসুফ রেজা, আসাদ কাজল, রোকন জহুর, শিমুল পারভীন, সবুজ মনির, নাহিদ হাসান, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক, মীর রেজাউল আলম, আকবর খান, আবু হাসান টিপু প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

এর পরও চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের দেওয়ার চেষ্টা হলে কঠোর আন্দোলন

চার প্রধান দাবিতে রাজধানী থেকে শুরু হওয়া চট্টগ্রাম অভিমুখী রোডমার্চ কুমিল্লায় পৌঁছেছে। দেশের বামপন্থী দল ও সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণের’ ব্যানারে আয়োজিত এই লংমার্চ আজ শুক্রবার সন্ধ্যার আগে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে এসে পৌঁছায়। পরে রাত পৌনে আটটার দিকে সেখানে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।

জনসভায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতিমণ্ডলীর কাজী সাজ্জাদ জহির বলেন, ‘সাম্রাজ্যবাদের কোনো দালালকে বাংলাদেশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে দেওয়া হবে না। আমাদের এই রোডমার্চের তথ্য এতক্ষণে নিশ্চয়ই প্রধান উপদেষ্টার কান পর্যন্ত পৌঁছেছে। যদি এর পরও চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের কাছে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলব। আমাদের সাম্রাজ্যবাদবিরোধী এই আন্দোলন দীর্ঘদিনের।’

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, ‘অতীতে আপনার চেয়ে বড় বড় প্লেয়ার দেশকে সাম্রাজ্যবাদের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিল; কিন্তু আমাদের আন্দোলনের মুখে শেষ পর্যন্ত তাঁরা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। হাসিনা, খালেদা, এরশাদ—কেউই সফল হয়নি, আপনি তো অনেক পরের প্লেয়ার।’

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কুমিল্লা জেলার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সুজাত আলীর সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও গণমুক্তি ইউনিয়নের সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন আহম্মদ, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের আহ্বায়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও গণতান্ত্রিক বাম জোটের সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের সমন্বয়ক মাসুদ খান, বাংলাদেশের সোশ্যালিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহিনউদ্দীন চৌধুরী, সচেতন রাজনৈতিক ফোরামের কুমিল্লার সমন্বয়ক শেখ আবদুল মান্নান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোমেন প্রমুখ।

সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণের’ রোডমার্চের জনসভার একাংশ। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা টাউন হল মাঠে

সম্পর্কিত নিবন্ধ