ঢাকা-টোকিও পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক স্থগিত
Published: 13th, May 2025 GMT
চলতি মাসের ১৫ মে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল তা স্থগিত করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার এক কূটনৈতিক বার্তায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ১৫ মে টোকিওতে অনুষ্ঠেয় এ আলোচনা অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হয়েছে। আলোচনা পরবর্তী সময়ে দুই দেশের পারস্পরিক সুবিধামতো সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, এই বিষয়ে জাপানের দূতাবাসকে অনুরোধ জানানো হয়েছে যেন তারা বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেয়।
চলতি মাসের শেষ দিকে প্রধান উপদেষ্টার জাপান যাওয়ার কথা রয়েছে। জাপানের নিক্কেই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা ছাড়াও জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে। তবে এর আগে আগামী ১৫ মে যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল সেখানে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবদের অংশ নেওয়ার কথা ছিল।
বৈঠকে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতে এ অঞ্চলে জাপানের সহযোগী ও প্রতিযোগী দেশগুলোর পরিস্থিতি, রাশিয়া-ইউক্রেন, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল, নিরস্ত্রীকরণ ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সহযোগিতা এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন ফেরামে সমর্থনের মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। বৈঠকে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যকার যে চুক্তিগুলো হয়েছিল সেগুলোর হালনাগাদ নিয়ে আলোচনাও হওয়ার কথা ছিল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিলেন বাবা-মেয়ে
পড়াশোনায় বয়স কোনো বাধা নয়, চেষ্টা করলে সবই সম্ভব। এটি আবারও প্রমাণ করলেন নাটোরের লালপুর উপজেলার আবদুল হান্নান। ৪২ বছর বয়সী হান্নান তাঁর মেয়ে হালিমা খাতুনের সঙ্গে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।
হান্নান বাঘা কাকড়ামারী কলেজ থেকে এবং হালিমা খাতুন (১৭) গোপালপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
হান্নান গোপালপুর পৌরসভার নারায়ণপুর মহল্লার মৃত লাল মিয়ার ছেলে। তাঁর এক মেয়ে ও দুই ছেলে। বড় ছেলে আবু হানিফ নিরব (১৩) নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ছোট ছেলে রমজান মিয়ার বয়স মাত্র ছয় বছর।
১৯৯৮ সালে তিনি নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হন হান্নান। তখনই লেখাপড়া ছেড়েছেন তিনি। এর পর পৈতৃক সূত্রে গোপালপুর রেলগেট এলাকায় পাওয়া একটা দোকানে চায়ের ব্যবসা শুরু করেন। পরে বিয়ে করে সংসার জীবনে থিতু হন। এক পর্যায়ে লেখাপড়ার প্রতি আবারও ঝোঁক তৈরি হয় তাঁর। ২০২১ সালে কাউকে না জানিয়ে উপজেলার রুইগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম (ভোকেশনাল) শ্রেণিতে ভর্তি হন। দুই বছর পর মেয়ে হালিমার সঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে এসএসসি পাস করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাজুড়ে প্রশংসা কুড়ান তিনি।
আবদুল হান্নান বলেন, লেখাপড়ার কোনো বয়স নেই। চেষ্টা করলে সবই সম্ভব। মেয়ের সঙ্গে এসএসসি পাসের পর এবার এইচএসসি পরীক্ষাও দিচ্ছি। শুধু এইচএসসি নয়, মাস্টার্স ডিগ্রিও অর্জন করার ইচ্ছে তাঁর।
মেয়ে হালিমা খাতুন জানান, বাবার মেধা আছে এবং ইচ্ছাশক্তি আছে। লেখাপড়া করার প্রবল ইচ্ছার কারণেই তিনি এসএসসি পাস করে আবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। পরস্পরের মধ্যে লেখাপড়া নিয়ে প্রতিযোগিতাও রয়েছে বলে জানান তিনি। হালিমা জানান, বাবার জন্য তিনি গর্ববোধ করেন। তাঁর বাবাকে দেখে অন্যরা পড়াশোনায় অনুপ্রাণিত হবে বলে মনে করেন তিনি।
আবদুল হান্নানের প্রতিবেশী মাসুদ রানা বলেন, শিক্ষার জন্য বয়স কোনো বাধা নয়, মনের ইচ্ছাটাই বড়– আবদুল হান্নান তা প্রমাণ করেছেন। সবার জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, বাবা ও মেয়ের একসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়টি শুনেছি। উচ্চশিক্ষা অর্জনে উপজেলা পরিষদ থেকে তাদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।