মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করলেও ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাত অবসানে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় বাণিজ্য প্রসঙ্গ কখনো আলোচিত হয়নি বলে জানাল ভারত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে আজ মঙ্গলবার এ মন্তব্য করেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

জয়সোয়াল বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিবৃতি ও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের এই মনোভাবের কথা যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।

যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব দাবি করে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশকেই তিনি বলেছিলেন, তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য করতে চায়। যুদ্ধ বন্ধ করলে বাণিজ্য করবে, না হলে বাণিজ্য করবে না। তিনি বলেছিলেন, তারপরই দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দাবি, তাঁর মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি সম্ভবপর হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে আজ মঙ্গলবার জয়সোয়ালকে একাধিক প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বাণিজ্যসংক্রান্ত বিষয় অস্বীকার করে বলেন, কখনো কোনো আলোচনায় বাণিজ্য প্রসঙ্গ ওঠেনি এবং সেটা যুক্তরাষ্ট্রকে ভারত জানিয়েও দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তৃতীয় কোনো দেশে ভারত ও পাকিস্তানের নেতৃবৃন্দের সম্ভাব্য বৈঠক প্রসঙ্গে যে মন্তব্য করেছেন, সে নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে জয়সোয়াল বলেন, ভারতের দীর্ঘদিনের নীতি জম্মু-কাশ্মীর তার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। একমাত্র দ্বিপক্ষীয় আলোচনাতেই এই সমস্যার সমাধান হবে। ভারতের এই ঘোষিত নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। তিনি এ কথাও বলেন, দুই দেশের আলোচনায় ভারতের একমাত্র বিবেচ্য পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ফেরত আনা।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, সিন্ধু পানিচুক্তি ভারত অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রেখেছে। সন্ত্রাসবাদে পাকিস্তান পুরোপুরি রাশ না টানা পর্যন্ত চুক্তি স্থগিতই থাকবে। তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে, জলবায়ু বদল হওয়া, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তিগত পরিবর্তন নতুন বাস্তবতা তৈরি করেছে।

আরও পড়ুনভারত–পাকিস্তান সংঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কারা৫১ মিনিট আগে

জয়সোয়াল এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ভারতের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে কোনো পরমাণু স্থাপনা ছিল না। এ কথা পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন।

পাকিস্তান এই সংক্ষিপ্ত যুদ্ধে জয়ী হয়েছে বলে দাবি জানিয়েছে। এই বিষয়ে ভারতের মনোভাব জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, যতবার লড়াই হয়েছে, প্রতিবারই তারা হেরেছে। অথচ সব সময় জয়ের ঢোল পেটায়। ১৯৭১, ১৯৭৫ ও ১৯৯৯ সালে হেরেও তারা জয়ের ঢোল পিটিয়েছিল। তিনি বলেন, ১০ মে পাকিস্তানের ডিজিএমওই যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানিয়ে ফোন করেছিলেন। ভারত সেই অনুরোধেই সাড়া দিয়েছে।

আরও পড়ুনভারতের সঙ্গে সংঘর্ষে ১১ সেনা নিহত ও ৭৮ জন আহত হয়েছেন: পাকিস্তান আইএসপিআর৫ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র পরর ষ ট র জয়স য় ল প রসঙ গ

এছাড়াও পড়ুন:

ফায়ারফক্সে আসছে এআই উইন্ডো

কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা বা এআইকেন্দ্রিক ব্রাউজারের বাজার দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। এই প্রতিযোগিতার মধ্যেই ফায়ারফক্সে নতুন এআই উইন্ডো নামের বিশেষ সুবিধা যুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে মজিলা। সুবিধাটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় প্রয়োজন অনুসারে একটি সমন্বিত এআই সহকারীর সাহায্য নিতে পারবেন। পুরো প্রক্রিয়াই থাকবে ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণে।

এক ব্লগ বার্তায় মজিলা জানায়, এআই উইন্ডো ব্রাউজিংয়ে ক্ষেত্রে এআই নির্দেশনা ও ব্যক্তিগত সহায়তার সুবিধা দেবে। সুবিধাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় থাকবে না। আগ্রহী ব্যবহারকারীরা চাইলে নিজে থেকেই চালু করবেন। যেকোনো সময় বন্ধ করা যাবে। এআইনির্ভর এই সুবিধা ওপেন সোর্স প্রযুক্তির ভিত্তিতে তৈরি করা হচ্ছে।

ফিচারটি পরীক্ষামূলক সংস্করণ কিছু ব্যবহারকারীর কাছে উপলব্ধ হয়েছে। মজিলা জানিয়েছে, যে কেউ চাইলে আগের মতোই ফায়ারফক্স ব্যবহার করে নিজের পছন্দমতো কাস্টমাইজড অভিজ্ঞতা পাবেন। আরও বেশি গোপনীয়তা চাইলে প্রাইভেট উইন্ডো ব্যবহার করতে পারবেন। এআই উইন্ডো ব্রাউজিংকে আরও ব্যক্তিগত উপায়ে ব্যবহারের সুযোগ দেবে।

এআই চালিত ব্রাউজারের ব্যবহার বাড়তে থাকায় বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি এখন সার্চবারের জায়গায় চ্যাটবট যুক্ত করা বা সম্পূর্ণ এআইনির্ভর ব্রাউজার তৈরিতে মনোযোগ দিচ্ছে। ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস বা পারপ্লেক্সিটির কমেট পুরোপুরি এআই এজেন্টকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে।

ভবিষ্যতে লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলনির্ভর ব্রাউজারের বড় সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিযোগিতার মধ্যেও ভিন্ন অবস্থান তৈরি করতে চেষ্টা করছে মজিলা। তারা বলছে, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও ব্যবহারকারীর স্বাধীনতা—এই তিন নীতি সামনে রেখে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা দেওয়া হচ্ছে। ওয়েবকে সবার জন্য উন্মুক্ত, মুক্ত ও নিরাপদ রাখতে চায় মজিলা। মজিলার ভাষ্য অনুযায়ী, ফায়ারফক্সে কোনো একক ইকোসিস্টেমে ব্যবহারকারীকে আটকে রাখা হবে না। এআই ব্যবহারের ওপর কোনো বাধ্যবাধকতাও থাকবে না। কখন, কীভাবে বা আদৌ এটি ব্যবহার করবেন কি না, এমন সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ব্যবহারকারীর।

এ বছরের জুনে ফায়ারফক্সের অ্যাড্রেসবারে থাকা ইউনিফায়েড সার্চ সুবিধায় সরাসরি পারপ্লেক্সিটি এআইয়ের মাধ্যমে অনুসন্ধানের অপশন যুক্ত করে মজিলা। নতুন এআই উইন্ডো ফিচার যুক্ত হলে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা আরও বহুমাত্রিক হয়ে উঠবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ