বন্দরে ইলেকট্রিক মিস্ত্রীকে কুপিয়ে মোবাইল ও টাকা লুট
Published: 18th, May 2025 GMT
বন্দরে দাবিকৃত ২ হাজার টাকা না পেয়ে হত্যার উদ্দেশ্য সিফাত প্রধান (১৮) নামে এক ইলেকট্রিক মিস্ত্রীকে কুপিয়ে নগদ টাকা ও মোবাইল সেট ছিনিয়ে নিয়েছে সন্ত্রাসী পিতা-পুত্র।
আহত সিফাত পুরান বন্দর চৌধুরীবাড়ি এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে। এলাকাবাসী রক্তাক্ত জখম অবস্থায় আহতকে উদ্ধার করে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেছে।এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা হামলাকারি অধির (২০)কে ধারালো অস্ত্রসহ আটক করে জরুরি সেবা ৯৯৯ এ সংবাদ দেয়।
এ ব্যাপারে আহতের মা তাসলিমা বেগম বাদী হয়ে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার ওই দিন দুপুরে হামলাকারি পিতা/পুত্রকে আসামী করে বন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এর আগে রোববার (১৮ মে) দুপুর ১২টায় পুরান বন্দর চৌধুরীবাড়ি মোড়ে এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে ।
অভিযোগের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, সিফাত প্রধান পেশায় একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রী। পুরান বন্দর চৌধুরীবাড়ি এলাকার মোঃ আলী মিয়ার বখাটে ছেলে অধির সাথে অভিযোগের বাদিনী ছেলের সাথে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছিল।
সে সাথে বিবাদী অধির বিভিন্ন সময় অভিযোগের বাদিনী ছেলে সিফাত প্রধানের কাছে টাকা দাবি করে আসছিলো। এর ধারাবাহিকতা রোববার বেলা ১২টায় অভিযোগের বাদিনী তার ছেলে সিফাতকে মাছ মাংস কেনার জন্য পুরান বন্দর চৌধুরীবাড়ি বাজারে পাঠালে ওই সময় সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ পিতা/পুত্র অভিযোগের বাদিনী ছেলেকে দেখা মাত্রই তার কাছে দুই হাজার টাকা দাবি করে।
ওই সিফাত দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ওই সময় উক্ত এলাকার মৃত সাক্কু মিয়ার ছেলে সন্ত্রাসী মোঃ আলী হুকুমে ১নং বিবাদী অধির অভিযোগের বাদিনী ছেলে সিফাতকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় ও পিঠে কোপ দিয়ে রক্তাক্ত কাটা জখম করে।
পরে হামলাকারি সন্ত্রাসী মোঃ আলী আহত সিফাতের কাছ থেকে একটি স্যামসাং ব্রান্ডের স্মার্ট ফোন যাহার আনুমানিক বাজার মূল্য ৩৫ হাজার টাক ও বাজারের নগদ ১২৩০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। ঐ সময় উত্তেজিত জনতা ধারালো অস্ত্রসহ হামলাকারি অধিরকে আটক করে জরুরী সেবা ৯৯৯ এ সংবাদ জানালে বন্দর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
কাফকার পৃথিবী ও তার লুকানো বিদ্রুপ
ফ্রানৎস কাফকাকে নিয়ে সবচেয়ে মোক্ষম ভাস্কর্যটি আছে প্রাগের ওল্ড টাউন আর ইহুদি কোয়ার্টারের একদম মাঝামাঝি জায়গায়। মাথাবিহীন একটা দেহের কাঁধে বসে আছেন মাথাওয়ালা কাফকা। ক্লান্ত চোখ। ডান হাতের তর্জনী কিছু নির্দেশ করছে।
ইয়ারোস্লাভ রোনার এই ভাস্কর্যটির অবস্থান খেয়াল করার মতো, যা একসঙ্গে ধারণ করেছে কাফকার দ্বৈততা ও দ্বিধার মনস্তত্ত্ব; পরিবার ও সমাজের প্রতি এক রকমের দায়বদ্ধতার বিপরীতে তার বিচ্ছিন্নতার ভারী বোধ। রোনা নির্মিত ভাস্কর্যটির কাছেই এক ধারে আছে স্প্যানিশ সিনেগগ, যেমন আরেক পাশে চার্চ অব দ্য হোলি স্পিরিট। দুটি কথোপকথন নামে লেখকের একটি ছোটগল্প থেকে অনুপ্রাণিত এই ভাস্কর্য আসলে তার নায়কদের নিয়ে আমাদের প্রচল ধারণাকেই ইশারা করে: সমাজ ও সিস্টেমের ইঁদুরধরা কলে ফেঁসে যাওয়া ভঙ্গুর সব মানুষ, যাদের জগৎ ধূসর ও মাথায় ব্যাপক যন্ত্রণা দৃশ্যত মাথাকেই গায়েব করে দিয়েছে, আবার চাকুরে জীবন তাকে দিয়েছে দায়িত্ব, নিজেকে নিয়ে ভাবার জন্য মাথা না থাকুক, সমাজের আরোপিত দায়িত্ব পালনের জন্য তাই তাদের আরেকটি সত্তার অনুগত মাথা বহাল না থাকলে চলে না।
আমাদের অতি সিরিয়াস পাঠে, অতি পাঠে, অতিরিক্ত গবেষণায় কাফকা হয়তো প্রায় ছিবড়ে হয়ে গেছেন। তবু তিনি আজও প্রাসঙ্গিকতা হারাননি। বরং এই মিম কালচার ও গুজবের পৃথিবীতে আমাদের গ্লানি শুষে নেওয়ার চেষ্টা করে যেই কালো কৌতুক ও অবিরাম বিদ্রুপের স্রোত—প্রায় একশ বছর ধরে পঠিত হতে থাকা জার্মানভাষী লেখক হয়তো তার লেখায় ডেডপ্যান কমেডির আবরণে ভারিক্কি কিছু নয়, বরং লুকিয়ে রেখে গিয়েছিলেন জীবন নিয়ে আরও গভীর বিদ্রুপের ইশারা। একটু ভিন্নপাঠের চেষ্টা করলে তা ধরা যেতে পারে, যে, কাফকা হয়তো অত সিরিয়াসও নন, তার অস্বস্তিকর লেখাগুলো এক ধরনের রম্যই, জীবনের উপায়হীনতার প্রতি ছুড়ে দেওয়া বাঁকা হাসি।
মানুষ সিস্টেমের নিষ্পেষণ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে নানান উপায়ে লড়াই করে। প্রতিবাদ, সমালোচনা, গোষ্ঠীগত লড়াই। কিন্তু যখন সে উপায়ও তার থাকে না, সে করে আত্মবিদ্রুপ। যেমন, এখানে বর্ণবাদিতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে করতে মানুষ নিজেও এক সময় বর্ণবাদিতে পরিণত হয়ে যায়। মত প্রকাশের স্বাধীনতার দীর্ঘ লড়াই সফলতার দ্বারপ্রান্তে এসে আবিষ্কার করে সে নিজেই আর ভিন্নমত সহ্য করার অবস্থায় নেই; ব্যর্থতা ঢাকতে তখন সেও আত্মবিদ্রুপের বর্ম গায়ে তোলে। উন্মুক্ত পুঁজি ও তার মেকানিজম এমন একটা নাজুক জায়গায় নিয়ে মানুষকে দাঁড় করিয়েছে, যেখানে ভালো ও মন্দের প্রভেদকে একটা অকার্যকর ধারণা মনে হয়, সকলেই যার যার জায়গা থেকে নিজেকে ভিকটিম মনে করতে পারে। জীবন নানান উপায়ে তাকে ট্র্যাজিকমেডির দিকেই ঠেলছে প্রতিনিয়ত। যেন বা কাফকায়েস্ক জগতেরই আরও একটা কানাগলিতে সে উপায়হীন ঢুকে পড়ছে।
প্রাগে কাফকার স্ট্যাচু