ফার্মগেট শুধু ঢাকার একটি এলাকা নয়, এটি শিক্ষার একটি প্রাণকেন্দ্র। এখানে রয়েছে হলি ক্রস কলেজ, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, বিএএফ শাহীন কলেজসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। শুধু কলেজপড়ুয়াই নন, এই এলাকায় আশ্রয় নেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থী, কোচিং–নির্ভর মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষার্থী, বিসিএস ও অন্যান্য চাকরিপ্রত্যাশীরা। সবার লক্ষ্য একটাই—একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গঠন।

কিন্তু সেই ভবিষ্যতের পথে প্রথম ধাক্কা তাঁরা খান ফার্মগেটের হোস্টেলগুলোতে এসে। এসব হোস্টেলের নেই সরকারি নিবন্ধন, নেই ন্যূনতম পরিবেশগত মানদণ্ড। হোস্টেলে ভর্তির সময় মালিকেরা চটকদার ভাষায় প্রতিশ্রুতি দেন—সুস্বাদু খাবার, নিরবচ্ছিন্ন ওয়াই-ফাই, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রুমসহ আরও নানা সুবিধার।

কিন্তু বাস্তবতা যেন এক নির্মম ঠাট্টা। প্রতিদিন পাতলা ডাল, পচা ভাত, পুষ্টিহীন তরকারি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বহু শিক্ষার্থী। অভিযোগ করলেও নেই কোনো সমাধান; উল্টো সহ্য করতে হয় হোস্টেল কর্তৃপক্ষের বাজে ব্যবহার ও অপমান। অথচ এসব হোস্টেলে প্রতিমাসে মাথাপিছু ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত গুনতে হয়।

ফলে তৈরি হয়েছে এক অমানবিক, নিয়মহীন, তদারকিহীন বাসস্থানব্যবস্থা, যেখানে নেই মানবিকতা। এই অমানবিক বাস্তবতার ভেতর দিয়েই প্রতিনিয়ত জীবন যাপন করছেন আমাদের ভবিষ্যৎ নির্মাতারা। অথচ এই শিক্ষার্থীরাই একদিন জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।

কিন্তু তাঁদের জীবনের শুরুটাই হচ্ছে অবহেলা, অব্যবস্থা ও নিষ্ঠুর বাস্তবতার মধ্য দিয়ে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন অবস্থার প্রতিনিয়ত চলমান থাকা সত্যিই দুঃখজনক। অথচ এসব হোস্টেলের তদারকিতে নেই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ।

ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যদি এমন পরিবেশে বেড়ে ওঠে, তাহলে শুধু তাদেরই নয়, গোটা জাতিকেই এর খেসারত দিতে হবে।

অতএব, শিক্ষার্থীদের এই অমানবিক জীবনের অবসান ঘটিয়ে একটি সুস্থ, নিরাপদ ও বাসযোগ্য হোস্টেল-ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি।

প্রজ্ঞা দাস

শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ

ইডেন মহিলা কলেজ

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

হস্তক্ষেপ নয়, পর্যবেক্ষণ ও সহযোগিতায় বিশ্বাসী টিম ডিরেক্টর রাজ্জা

সংবাদ সম্মেলন তখন শেষ। আব্দুর রাজ্জাককে মনে করিয়ে দেওয়া হলো, ‘‘বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর কিন্তু টসেও ইনপুট দিতেন। আপনি কি…?’’ রাজ্জাক মুখে হাসি আটকে রাখেন। এই পদে আসন্ন আয়ারল‌্যান্ড সিরিজে দায়িত্ব পাওয়া রাজ্জাক স্রেফ এতোটুকুই বলতে পারেন, ‘‘আমাদের থেকে এমন কিছু কখনোই দেখতে পারবেন না। আমরা নতুন কিছু নিয়ে ভাববো।’’ 

জাতীয় দলকে নিয়ে সেই ভাবনা থেকেই ‍আমিনুল ইসলাম বুলবুলের বোর্ড একজনকে টিম ডিরেক্টর নিয়োগ দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ের জাতীয় পুরুষ দলের ব‌্যর্থতার কারণে আলোচনা হচ্ছিল, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ওপরে একটি ছায়া বিভাগ থাকবে যারা সরাসরি জাতীয় দল পর্যবেক্ষণ করবে।

সেই ছায়া বিভাগে সাবেক ক্রিকেটাররাই থাকবেন। প্রথম টিম ডিরেক্টর হিসেবে রাজ্জাক পেলেন দায়িত্ব। কেন টিম ডিরেক্টর নিয়োগ দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব হলো সেই প্রশ্ন করা হয় তাকে। নাজমুল হাসান বোর্ড সভাপতির দায়িত্বে থাকার সময় টিম ডিরেক্টর পদটি বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। সাবেক অধিনায়ক ও বোর্ড পরিচালক খালেদ মাহমুদ এই দায়িত্ব পালন করেছেন বিশ্বকাপসহ বেশ কয়েকটি সিরিজে। দলের সঙ্গে গভীরভাবে মিশে যেতেন তিনি। টস থেকে শুরু করে টিম মিটিংয়ে দিতেন ইনপুট। যা নিয়ে পরবর্তীতে অভিযোগ করেছিলেন কোচ ও অধিনায়ক।

তবে রাজ্জাক নিজের কাজ, পরিধি এবং দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন বলেই নিশ্চিত করলেন,"অন্যান্য যে কোনো টিম ডিরেক্টরের মতোই হবে আমার কাজ। আমি সব কিছু পর্যবেক্ষণ করব, সব কিছুতে নজর রাখব। আর কখনও যদি টিম ম্যানেজমেন্ট মনে করে আমার কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন, তাহলে সেটিও দেওয়ার চেষ্টা করব। তাদের সাহায্য প্রয়োজন হলে আমি করব।"

"ক্রিকেট বোর্ডের মনে হয়েছে, দলের সঙ্গে একজন টিম ডিরেক্টর থাকলে ভালো হবে। এই পদটি কিন্তু আগেও ছিল। অনেক দিন ধরেই ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে বোর্ড পরিচালকের সংখ্যা কম থাকায় হয়তো দলের সঙ্গে কেউ যায়নি। তবে এর আগে প্রায় সিরিজেই দলের সঙ্গে টিম ডিরেক্টর থাকত।" - যোগ করেন তিনি।

ঢাকা/ইয়াসিন 

সম্পর্কিত নিবন্ধ