বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে ইনভেস্টমেন্টের দিকে ফোকাস করতে হবে। এজন্য পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের প্রধান উৎস করতে হবে।”

তিনি বলেন, “পুঁজিবাজারে যত রিফর্ম (সংস্কার) হয়েছে বিএনপির আমলে হয়েছে। বিএনপির সময় পুঁজিবাজারে কখনো অস্বস্তি আসেনি। ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর ধসে পড়েনি।”

শনিবার (২৪ মে) রাজধানীর নিকুঞ্জে ডিএসই ব্রোকার্স অ‍্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক আলোচনায় পুঁজিবাজার: দর্শন ও অনুশীলন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

বেরোবিতে ফাইল ট্র্যাকিং সিস্টেমবিষয়ক কর্মশালা

ট্রাম্পের শুল্ক
প্রভাব পড়বে না পুঁজিবাজারে, আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ বিশ্লেষকদের

আমির খসরু বলেন, “বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে হলে বিনিয়োগের বাইরে কোনো কিছু নেই। ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের জন্য ক্যাপিটাল মার্কেটের বিকল্প নেই। এটাকে পলিসিতে আনতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতির সঙ্গে ক্যাপিটাল মার্কেটের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণভাবে দেখতে হবে। তাই ক্যাপিটাল মার্কেটকে ধারন করতে হবে। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, আগামীতে যদি নির্বাচিত সরকার আসে আর আমরা (বিএনপি) সেই সুযোগ পাই, তাহলে পুঁজিবাজারকে ধারন করব। আমাদের অর্থনীতির সঙ্গে পুঁজিবাজার অনেকটা ডিসকানেক্ট। ক্যাপিটাল মার্কেটে ওনারশিপ এখন নেই, এটাকে আনতে গেলে পলিটিক্যাল ওনারশিপ দরকার।”

তিনি বলেন, “স্টক এক্সচেঞ্জ ও ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে স্বচ্ছতার সাথে কাজ করতে হবে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। পুঁজিবাজার যদি স্বচ্ছভাবে চলে তাহলে সাধারণ মানুষও মনে করবে এখানে বিনিয়োগ করা যায়।”

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো অর্থনীতিবিদ ড.

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। প‍্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন বিএসইসি কমিশনার মো. মোহসিন চৌধুরী, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান, জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কাউন্সিলের সদস্য মো. মোবারক হোসাইন, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ, জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক ড. তাজনুভা জাবিন, আইসিএমএবির সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

ঢাকা/এনটি/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স এসই স এসই ব এনপ ড এসই ড এসই ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

অভয়নগরে তরিকুল হত্যা: পুরুষশূন্য ডহর মশিয়াহাটী গ্রাম

যশোরের অভয়নগরে পৌর কৃষক দলের সভাপতি তরিকুল ইসলাম সরদারকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল সুন্দলী ইউনিয়নের ডহর মশিয়াহাটী গ্রাম। ঘটনার পরপরই গ্রামটি জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

তরিকুল হত্যার পরপর অজ্ঞাত ব্যক্তিরা গ্রামে ঢুকে প্রায় ২০টি বাড়ি লুটপাটের পর আগুন ধরিয়ে দেয়।

ঘটনাটি বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাতের। পরদিন শুক্রবার (২৩ মে) সারা দিন ভষ্মীভূত বাড়িগুলোতে চলতে থাকে আহাজারি।

আরো পড়ুন:

অভয়নগরে কৃষক দল নেতাকে হত্যার পর ২০ বাড়িতে আগুন

আড়াইহাজারে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ ৪

সরেজমিন দেখা যায়, ডহর মশিয়াহাটী গ্রামে বাড়িগুলো পুড়ে ভষ্ম হয়ে আছে। ঘরের ভেতর পড়ে আছে আগুনে পোড়া জিনিসপত্রের ছাই। কোনো কোনো বাড়ির ঘরের মধ্যে ভাঙচুর করা খাট, পালঙ্ক, চেয়ার, টেবিল, আলনা, আলমারি বিক্ষিপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পোড়া বাড়িরগুলোর সামনে পড়ে আছে অনন্ত পাঁচটি পুড়িয়ে দেওয়া মোটরসাইকেল এবং একটি ইঞ্জিনচালিত ভ্যান।

ঘরের টিনগুলো পুড়ে দুমড়েমুচড়ে পড়ে আছে। ঘরে চাল নেই, জানালাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। কয়েকটি ঘরের ভেতরে ঢুকতেই নাকে এল পোড়া গন্ধ। ঘরের ভেতরে পুড়ে কয়লা হয়ে আছে আসবাবপত্র, আছে জামা-কাপড়, লেপ-তোশক-বিছানা, টেলিভিশন, ফ্রিজ।  আগুনের শিখায় কয়েকটি বাড়ির পাশের গাছ পুড়ে গেছে।

বাড়িগুলোতে কথা বলার মতো কোনো পুরুষ মানুষ চোখে পড়েনি। কথা হয় কয়েজন প্রবীণ লোকদের সঙ্গে।

স্মৃতি বিশ্বাস নামে বৃদ্ধা বলেন, “আমাকে পচুর মারা হয়েছে। আমি উঠে বসতে পারছি না, আমার যা কিছু ছিল সব পুড়িয়ে দিয়েছে ওরা। আমাদের কী অপরাধ?”

একইভাবে পান্না বিশ্বাস নামে এক গৃহিনী বলেন, “আমার পরিবারের চারটি জীবন ছাড়া কিছু আর নেই, পরনের কাপড়ও ছেড়া। কি নিয়ে বেঁচে থাকব, কিছু নেই! চারদিকে আমার হতাশার ছাপ।”

৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা বলেন, “তোমরা খাওয়ার দিলেও খেতে পারব না। খাওয়ার জন্য যে ব্যবস্থা লাগে তা আমাদের কিছুই নেই। আমরা হয়তো আর কোনোদিন নিজ বাড়িতে রান্না করে খেতে পারব না। পরিবারের মানুষগুলো নিয়ে একটু শান্তিতে বসবাস করতে পারব না।”

এ ব্যাপারে অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আলীম জানান, হত্যার ব্যাপারে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। এজন্য এখনো মামলা রেকর্ড করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া হত্যাকাণ্ড ঘিরে ডহর মশিয়াহাটী গ্রামে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এখনো কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ না দেয়াই পুলিশ সন্দেহভাজন কাউকে আটক করতে পারেনি।

ঢাকা/রিটন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ