ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলকসহ সাতজনকে নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ এর আদালত এ আদেশ দেন। 

গ্রেপ্তার দেখানো অন্যরা হলেন- গাজীপুর মহানগরের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, আওয়ামী লীগ কর্মী মোক্তার হোসেন চোকদার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও আসাদুজ্জামান রাজন।

সালমান এফ রহমানকে গুলশান থানার দুটি ও মিরপুর থানার এক মামলায়; আসাদুর রহমান কিরণকে উত্তরা পূর্ব থানার দুটি; আনিসুল হক ও জুনাইদ আহ্‌মেদ পলককে মিরপুর থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া মোক্তার হোসেন, শাহে আলম মুরাদ ও আসাদুজ্জামান রাজনকে কাফরুল ও নিউমার্কেট থানার পৃথক তিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

কাঠগড়ায় ৩৩ মিনিট

সকাল ৯টার দিকে কারাগার থেকে হাজতে নেওয়া হয় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলকদের। সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের দিকে তাদের একে একে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হেলমেট, হাতকড়া পরানো ছিল। 

কাঠগড়ায় প্রথমে আনিসুল হক, মাঝে সালমান এফ রহমান ও পেছনে জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ান। ১০টা ৪০ মিনিটে তাদের হেলমেট ও হাতকড়া খুলে দেয় পুলিশ। এ সময় আনিসুল হক ও জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। আর এজলাসে বিচারক আসার আগ মুহূর্তে সালমান এফ রহমানসহ প্রত্যেকে আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করতে থাকেন। 

১০টা ৪৫ মিনিটে এজলাসে আসন গ্রহণ করেন বিচারক আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ। বিচারক এজলাসে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে কথা বলা থামিয়ে দেন তারা। এ সময় বিভিন্ন থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা। 

মিরপুর থানার একটি মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তারের আবেদন করে পুলিশ। ১০টা ৪৯ মিনিটে আদালত গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করলে না সূচক মাথা নাড়ান আনিসুল হক। এরপর আদালত চলাকালে নিজ আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় আনিসুল হককে। তবে ১১টা এক মিনিটে বিচারিক কার্যক্রম চলাকালীন গল্পে মাতেন আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমান। এ সময় বিচারক তাদের দিকে তাকাতেই থেমে যান তারা। তবে আদালতের কাঠগড়ার ৩৩ মিনিট বিমর্ষ ছিলেন জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক। অন্যান্যদিন আদালতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললেও এদিন চুপ ছিলেন তিনি। কাঠগড়ায় অন্যদের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। সকাল ১১টা ১১ মিনিটে বিচারিক কার্যক্রম শেষে এজলাস ত্যাগ করেন বিচারক। 

আদালতে পলক ফৌজদারি কার্যবিধি (সিআরপিসি), দেওয়ানি কার্যবিধি (সিপিসি), দণ্ডবিধি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে উন্নয়নের দর্শন এবং জাতীয় সংসদে জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক- এই পাঁচ বই চান।

পলকের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন সমকালকে বলেন, ‘জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক এখন আইনের বই পড়ছেন। তিনি পেশায় আইনজীবী। সংসদ সদস্য হওয়ার আগে তিনি উচ্চ আদালত এবং জজ কোর্টে প্র্যাকটিস করতেন।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম দ পলক আইনজ ব ব চ রক ক ঠগড় এজল স এ সময়

এছাড়াও পড়ুন:

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সেই মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন মিনহাজ মান্নান

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বর্তমান পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমনের আপিল মঞ্জুর করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. যাবিদ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।

এ রায়ের ফলে ওই মামলা থেকে মিনহাজ মান্নান অব্যাহতি পেলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী মঈন ফিরোজী।

আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ওই মামলায় ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া ও মিনহাজ মান্নান ইমনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। পলাতক অপর চার আসামি হলেন সুইডেনপ্রবাসী সাংবাদিক তাসনিম খলিল, হাঙ্গেরিপ্রবাসী সামিউল ইসলাম খান ওরফে স্যাম ওরফে জুলকার নাইন, আশিক ইমরান ও ওয়াহিদুন নবী।

দিদারুল ইসলাম ও মিনহাজ মান্নান নারাজি আবেদন দিলে তা নামঞ্জুর হয়। এই আদেশের বিরুদ্ধে মিনহাজ মান্নান একই বছর হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে মিনহাজ মান্নানের ক্ষেত্রে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করেন। শুনানি শেষে আপিল মঞ্জুর করে আজ রায় দেওয়া হয়।

আদালতে মিনহাজ মান্নানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মঈন ফিরোজী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগ তুলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর রমনা থানায় ১১ জনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৫ মে মামলাটি করা হয়। ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। এতে কার্টুনিস্ট কিশোর, লেখক মুশতাক আহমেদ ও রাষ্ট্রচিন্তার দিদারুল ইসলামকে আসামি করা হয় এবং আটজনকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়।

আরও পড়ুন১০ মাস পর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন কার্টুনিস্ট কিশোর০৪ মার্চ ২০২১

এ মামলায় কারাবন্দী মুশতাক আহমেদ ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মারা যান। এ কারণে তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ মামলা অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল।

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, অভিযোগ গঠনের সময় ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির ছিলেন দিদারুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান। তাঁরা নিজেদের নিরপরাধ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান। সেদিন কার্টুনিস্ট কিশোর আদালতে হাজির না থাকায় তাঁর জামিন বাতিল করা হয়।

আরও পড়ুনআজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত লেখক মুশতাক২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এখন দেখছি নতুন প্রতারকের জন্ম হয়েছে: কায়সার কামাল
  • ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকের বিরুদ্ধে ৫০ কোটি ডলার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ
  • ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন, এখনো কেন গুলি করছেন’
  • ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে ৯ দফা তিন সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়নের নির্দেশ
  • ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সেই মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন মিনহাজ মান্নান
  • জামিন পেলেন বিএনপি নেতা সাখাওয়াতসহ ৬ জন
  • জামিন পেলেন বিএনপি নেতা সাখাওয়াতসহ ৬ আসামি