আদালতে বিমর্ষ পলক, গল্পে ছিলেন সালমান-আনিসুল
Published: 26th, May 2025 GMT
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলকসহ সাতজনকে নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ এর আদালত এ আদেশ দেন।
গ্রেপ্তার দেখানো অন্যরা হলেন- গাজীপুর মহানগরের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, আওয়ামী লীগ কর্মী মোক্তার হোসেন চোকদার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও আসাদুজ্জামান রাজন।
সালমান এফ রহমানকে গুলশান থানার দুটি ও মিরপুর থানার এক মামলায়; আসাদুর রহমান কিরণকে উত্তরা পূর্ব থানার দুটি; আনিসুল হক ও জুনাইদ আহ্মেদ পলককে মিরপুর থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া মোক্তার হোসেন, শাহে আলম মুরাদ ও আসাদুজ্জামান রাজনকে কাফরুল ও নিউমার্কেট থানার পৃথক তিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
কাঠগড়ায় ৩৩ মিনিট
সকাল ৯টার দিকে কারাগার থেকে হাজতে নেওয়া হয় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলকদের। সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের দিকে তাদের একে একে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হেলমেট, হাতকড়া পরানো ছিল।
কাঠগড়ায় প্রথমে আনিসুল হক, মাঝে সালমান এফ রহমান ও পেছনে জুনাইদ আহ্মেদ পলক সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ান। ১০টা ৪০ মিনিটে তাদের হেলমেট ও হাতকড়া খুলে দেয় পুলিশ। এ সময় আনিসুল হক ও জুনাইদ আহ্মেদ পলক একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। আর এজলাসে বিচারক আসার আগ মুহূর্তে সালমান এফ রহমানসহ প্রত্যেকে আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করতে থাকেন।
১০টা ৪৫ মিনিটে এজলাসে আসন গ্রহণ করেন বিচারক আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ। বিচারক এজলাসে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে কথা বলা থামিয়ে দেন তারা। এ সময় বিভিন্ন থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা।
মিরপুর থানার একটি মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তারের আবেদন করে পুলিশ। ১০টা ৪৯ মিনিটে আদালত গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করলে না সূচক মাথা নাড়ান আনিসুল হক। এরপর আদালত চলাকালে নিজ আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় আনিসুল হককে। তবে ১১টা এক মিনিটে বিচারিক কার্যক্রম চলাকালীন গল্পে মাতেন আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমান। এ সময় বিচারক তাদের দিকে তাকাতেই থেমে যান তারা। তবে আদালতের কাঠগড়ার ৩৩ মিনিট বিমর্ষ ছিলেন জুনাইদ আহ্মেদ পলক। অন্যান্যদিন আদালতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললেও এদিন চুপ ছিলেন তিনি। কাঠগড়ায় অন্যদের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। সকাল ১১টা ১১ মিনিটে বিচারিক কার্যক্রম শেষে এজলাস ত্যাগ করেন বিচারক।
আদালতে পলক ফৌজদারি কার্যবিধি (সিআরপিসি), দেওয়ানি কার্যবিধি (সিপিসি), দণ্ডবিধি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে উন্নয়নের দর্শন এবং জাতীয় সংসদে জুনাইদ আহ্মেদ পলক- এই পাঁচ বই চান।
পলকের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন সমকালকে বলেন, ‘জুনাইদ আহ্মেদ পলক এখন আইনের বই পড়ছেন। তিনি পেশায় আইনজীবী। সংসদ সদস্য হওয়ার আগে তিনি উচ্চ আদালত এবং জজ কোর্টে প্র্যাকটিস করতেন।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম দ পলক আইনজ ব ব চ রক ক ঠগড় এজল স এ সময়
এছাড়াও পড়ুন:
এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশের বৈধতা নিয়ে রিটের শুনানি মুলতবি
এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি পৃথক বিভাগ প্রতিষ্ঠার জন্য জারি করা অধ্যাদেশটির বৈধতা নিয়ে রিটের শুনানি এক সপ্তাহের জন্য মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই সময় পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামের নতুন দুটি বিভাগ প্রতিষ্ঠায় গত ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধ্যাদেশের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জুয়েল আজাদ ১৭ মে রিটটি করেন। আজ রিটটি শুনানির জন্য আদালতের কার্যতালিকায় ৭৯ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী জুয়েল আজাদ শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী ও আখতার হোসেন মো. আব্দুল ওয়াহাব।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, এক সপ্তাহ সময় চাওয়া হলে আদালত তা মঞ্জুর করেছেন। আগামী সপ্তাহে রিটটি শুনানির জন্য আসবে।
‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ’ শিরোনামের ওই অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, রাজস্ব নীতি বিভাগ কর আইন প্রয়োগ ও কর আদায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। রাজস্ব সংগ্রহের মূল কাজ করবে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
আরও পড়ুনএনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ প্রতিষ্ঠার অধ্যাদেশের বৈধতা নিয়ে রিট১৭ মে ২০২৫রিটের প্রার্থনায় দেখা যায়, সংবিধানের ২৬, ৩১ ও ২৯(১) অনুচ্ছেদের আলোকে ওই অধ্যাদেশটি কেন সাংঘর্ষিক এবং আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় রাজস্ব ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি সংস্কার বিষয়ে অংশীজনদের (দলগত) প্রস্তাব প্রকাশ করতে বিবাদীদের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রুল বিচারাধীন অবস্থায় ওই অধ্যাদেশের কার্যক্রমও স্থগিত চাওয়া হয়েছে রিটে। আইনসচিব ও অর্থসচিবকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।