ঈদের আগে সিরাজগঞ্জে গরু চুরির হিড়িক, আতঙ্কে খামারিরা
Published: 26th, May 2025 GMT
কোরবানির ঈদে বিক্রির আশায় সিরাজগঞ্জের ৯টি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কৃষক ও খামারিরা বাড়িতে বিদেশি ও দেশি জাতের গরু লালন-পালন করছেন। বর্তমানে প্রতি রাতেই জেলার কোনো না কোনো গ্রামে হানা দিচ্ছে সংঘবদ্ধ গরু চোরের দল। গত পাঁচ দিনে জেলার তিন উপজেলা থেকে প্রায় ২১টি গরু চুরি হয়েছে।
গরু চুরি হওয়ায় খামারিরা চরম আতঙ্কে রয়েছেন। কষ্টে পালিত গরু রক্ষায় অনেক কৃষক ও খামারি গোয়াল ঘরেই রাত কাটাচ্ছেন।
আরো পড়ুন: চৌহালীতে খামারিকে হত্যা করে ৪ গরু লুট
আরো পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি, গ্রেপ্তার ২
পানি খাওয়ার কথা বলে বাড়িতে ঢুকে স্বর্ণালংকার লুট
অনুসন্ধানে জানা যায়, রবিবার (২৫ মে) রাতে রায়গঞ্জ উপজেলার ডুমরাই গ্রামের কাদের মির্জার পাঁচটি গরু ও দুইটি মহিষ, একই মহল্লার তালেব মির্জার গোয়াল থেকে তিনটি গরু চুরি হয়।
আটটি গরু ও দুইটি মহিষ চুরির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রায়গঞ্জ থানার ওসি কে.
গত ২০ মে রাতে চৌহালী উপজেলার ঘোড়জান ইউনিয়নের মুরাদপুর কাউলিয়া চরে তারা মিয়া (৬৫) নামে এক কৃষককে শ্বাসরোধে হত্যার পর তিনটি গরু লুট করে চোরেরা।
চৌহালী থানার ওসি শাখাওয়াত হোসেন বলেন, “চাষাবাদ ও গরু পালনের উদ্দেশ্যে তারা মিয়া তার নাতি মো. ইব্রাহিমকে সঙ্গে নিয়ে মুরাদপুরের কাউলিয়া চরে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে বসবাস করছিলেন। রাতে ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র ও লোহার রড নিয়ে ঘরে ঢুকে প্রথমে ইব্রাহিমকে বস্তাবন্দি করে। পরে তারা মিয়াকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এরপর খামার থেকে গরু লুট করে নৌকায় করে পালিয়ে যায় তারা।”
তিনি বলেন, “এ ঘটনায় নাম না জানা ১০-১২ জনের নামে একটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”
এদিকে, রবিবার (২৫ মে) রাতে তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের উত্তর শ্যামপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলামের গোয়াল ঘরের মাটির দেওয়াল ভেঙে সাতটি গরু নিয়ে গেছে চোরের দল।
তাড়াশ থানার ওসি জিয়াউর রহমান বলেন, “গোয়ালঘরের জানালা ও মাটির দেয়াল ভেঙে সাতটি গরু চুরির ঘটনায় রাতে লুৎফর ও চঞ্চল নামের দুই জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
এছাড়া, গত ২৪ মে রাতে উল্লাপাড়া উপজেলার ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নের কয়ড়া গ্রামের আব্দুল জলিলের একটি গরু চুরি হয়।
আব্দুল জলিল জানান, গত শনিবার গভীর রাতে তার প্রায় দুই লাখ টাকা দামের লাল রঙের একটি ষাঁড় চুরি হয়। চুরি যাওয়া গরু খোঁজ করেও সন্ধান পাননি তিনি।
ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গর আতঙ ক উপজ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় হামাসের প্রধান মোহাম্মদ সিনওয়ারকে হত্যার দাবি নেতানিয়াহুর
গাজা হামাসের প্রধান মোহাম্মদ সিনওয়ার নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বুধবার ইসরায়েলের পার্লামেন্টে (নেসেট) এ কথা বলেন তিনি। তবে সিনওয়ারের মৃত্যু নিয়ে হামাস তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানায়নি।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলে হামলার পরিকল্পনাকারী ও হামাসের সাবেক প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের ছোট ভাই মোহাম্মদ সিনওয়ার। ২০২৪ সালের অক্টোবরে গাজার রাফা এলাকায় ইয়াহিয়া সিনওয়ারও ইসরায়েলি সেনাদের হাতে প্রাণ হারান। তাঁর মৃত্যুর পর মোহাম্মদ সিনওয়ার গাজায় হামাসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন।
মোহাম্মদ সিনওয়ারের অবস্থান নিশানা করে চলতি মাসে দক্ষিণ গাজার একটি হাসপাতালে হামলা চালায় ইসরায়েল। গত ২১ মে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, খুব সম্ভবত মোহাম্মদ সিনওয়ার নিহত হয়েছেন। বুধবার নেসেটে নেতানিয়াহু বলেন, মোহাম্মদ সিনওয়ারকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রায় ২০ মাসে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে নিহত হামাস নেতাদের নামও তুলে ধরেন তিনি।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘গত দুই দিনে আমরা হামাসের পুরোপুরি পরাজয়ের দিকে একটি নাটকীয় মোড় দেখতে পেয়েছি।’ ইসরায়েল এখন গাজায় ‘খাদ্য বিতরণের নিয়ন্ত্রণও নিচ্ছে’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। এখানে তিনি গাজায় নতুন ত্রাণ সহায়তা বিতরণ ব্যবস্থার কথা বলেছেন। যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত একটি সংগঠন তা পরিচালনা করছে।
নেতানিয়াহুর এই ঘোষণা এমন এক সময় এসেছে যখন ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা তীব্রতর করেছে। চলতি বছরের শুরুতে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ১৮ মার্চ থেকে উপত্যকাটিতে হামলা জোরদার করে ইসরায়েল। ইসরায়েল বলেছে, হামাসের শাসন ও সামরিক ক্ষমতা ধ্বংস করা এবং গাজায় বন্দী থাকা আটকদের মুক্ত করাই তাদের লক্ষ্য।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্ব ইসরায়েলে হামলা চালানো হয়। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। সেদিন ২৫০ এরও বেশি মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা।
হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গাজায় পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলের হামলায় গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, উপত্যকাটিতে ৫৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ইসরায়েলে হামলার মুখে ২০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি স্থানচ্যুত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, নিহতদের অধিকাংশই নিরীহ নাগরিক। কতজন যোদ্ধা মারা গেছে, সে বিষয়ে তারা কোনো তথ্য দেননি। ইসরায়েলের দাবি, তারা লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। কিন্তু তারা এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।