কোরবানির ঈদে বিক্রির আশায় সিরাজগঞ্জের ৯টি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কৃষক ও খামারিরা বাড়িতে বিদেশি ও দেশি জাতের গরু লালন-পালন করছেন। বর্তমানে প্রতি রাতেই জেলার কোনো না কোনো গ্রামে হানা দিচ্ছে সংঘবদ্ধ গরু চোরের দল। গত পাঁচ দিনে জেলার তিন উপজেলা থেকে প্রায় ২১টি গরু চুরি হয়েছে।

গরু চুরি হওয়ায় খামারিরা চরম আতঙ্কে রয়েছেন। কষ্টে পালিত গরু রক্ষায় অনেক কৃষক ও খামারি গোয়াল ঘরেই রাত কাটাচ্ছেন।

আরো পড়ুন: চৌহালীতে খামারিকে হত্যা করে ৪ গরু লুট

আরো পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি, গ্রেপ্তার ২

পানি খাওয়ার কথা বলে বাড়িতে ঢুকে স্বর্ণালংকার লুট

অনুসন্ধানে জানা যায়, রবিবার (২৫ মে) রাতে রায়গঞ্জ উপজেলার ডুমরাই গ্রামের কাদের মির্জার পাঁচটি গরু ও দুইটি মহিষ, একই মহল্লার তালেব মির্জার গোয়াল থেকে তিনটি গরু চুরি হয়। 

আটটি গরু ও দুইটি মহিষ চুরির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রায়গঞ্জ থানার ওসি কে.

এম মাসুদ রানা বলেন, “চুরির বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ ঘটনায় চোরদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

গত ২০ মে রাতে চৌহালী উপজেলার ঘোড়জান ইউনিয়নের মুরাদপুর কাউলিয়া চরে তারা মিয়া (৬৫) নামে এক কৃষককে শ্বাসরোধে হত্যার পর তিনটি গরু লুট করে চোরেরা। 

চৌহালী থানার ওসি শাখাওয়াত হোসেন বলেন, “চাষাবাদ ও গরু পালনের উদ্দেশ্যে তারা মিয়া তার নাতি মো. ইব্রাহিমকে সঙ্গে নিয়ে মুরাদপুরের কাউলিয়া চরে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে বসবাস করছিলেন। রাতে ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র ও লোহার রড নিয়ে ঘরে ঢুকে প্রথমে ইব্রাহিমকে বস্তাবন্দি করে। পরে তারা মিয়াকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এরপর খামার থেকে গরু লুট করে নৌকায় করে পালিয়ে যায় তারা।”

তিনি বলেন, “এ ঘটনায় নাম না জানা ১০-১২ জনের নামে একটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”

এদিকে, রবিবার (২৫ মে) রাতে তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের উত্তর শ্যামপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলামের গোয়াল ঘরের মাটির দেওয়াল ভেঙে সাতটি গরু নিয়ে গেছে চোরের দল।

তাড়াশ থানার ওসি জিয়াউর রহমান বলেন, “গোয়ালঘরের জানালা ও মাটির দেয়াল ভেঙে সাতটি গরু চুরির ঘটনায় রাতে লুৎফর ও চঞ্চল নামের দুই জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

এছাড়া, গত ২৪ মে রাতে উল্লাপাড়া উপজেলার ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নের কয়ড়া গ্রামের আব্দুল জলিলের একটি গরু চুরি হয়।

আব্দুল জলিল জানান, ‍গত শনিবার গভীর রাতে তার প্রায় দুই লাখ টাকা দামের লাল রঙের একটি ষাঁড় চুরি হয়। চুরি যাওয়া গরু খোঁজ করেও সন্ধান পাননি তিনি।

ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গর আতঙ ক উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ