দম ফেলার ফুরসত কি পেয়েছিলেন কার্লো আনচেলত্তি? মাদ্রিদ থেকে উড়োজাহাজে বিরতিহীন উড়াল দিয়ে রিও ডি জেনিরোয় পৌঁছাতে প্রায় ১০ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট সময় লাগে। গালেয়াও বিমানবন্দরে গত রোববার নামার পর স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে হোটেল গ্র্যান্ড হায়াতে পৌঁছেই তাঁকে মিটিংয়ে বসতে হয় ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (সিবিএফ) কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে। ৫০ জনের প্রাথমিক দল থেকে ২৬ জনের চূড়ান্ত দল বাছাই করেছেন। গতকাল গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে আনচেলত্তি সেই স্কোয়াড ঘোষণার সময় অন্তত দুজন নিজেদের অবস্থান নিয়ে পরিষ্কার ছিলেন।

নেইমার ও কাসেমিরো। স্কোয়াড ঘোষণার আগেই নেইমারের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানান আনচেলত্তি—চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না ওঠায় আপাতত তাঁকে স্কোয়াডের বাইরে থাকতে হচ্ছে। কাসেমিরোর সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি আনচেলত্তির। তবে ইতালিয়ান কোচ এর আগেই তাঁকে ব্রাজিল জাতীয় দলে ফেরানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সিএনএন তো স্কোয়াড ঘোষণার আগেই ফেরা নিশ্চিত করেছে কাসেমিরোর। সব মিলিয়ে ব্রাজিল কোচ হিসেবে আনচেলত্তির ঘোষণা করা প্রথম স্কোয়াডটি আসলে সতেজতা এবং নিরাপদ ভাবনায় গড়া।

খটমটে লাগছে? ভেঙে বলা যাক। আনচেলত্তির স্কোয়াডে যেমন ১৮ বছর বয়সী উইঙ্গার এস্তেভাও উইলিয়ান আছেন, তেমনি ২০২২ বিশ্বকাপের ব্রাজিল দলে থাকা কাসেমিরো, রিচার্লিসন ও আন্তোনিকেও ডাকা হয়েছে। ব্রাজিলকে ২০২৬ বিশ্বকাপ জেতানোর দায়িত্ব নিয়ে বাছাইপর্বের জন্য ঘোষণা করা প্রথম স্কোয়াডে আনচেলত্তির এমন ফিরে তাকানোর পেছনে যুক্তিও আছে।

চার বছর আগের সেই বিশ্বকাপের পর থেকেই তো ব্রাজিল দলের পারফরম্যান্স ক্রমেই নিম্নমুখী। পারফরম্যান্স ওঠানামা করে, এমন একটি দলের দায়িত্ব নিয়ে আনচেলত্তি তাই একটু রক্ষণাত্মক চিন্তাই করেছেন—আগে ভিত মজবুত করবেন, তারপর সময় বুঝে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

আনচেলত্তির এই স্কোয়াডে তাকালেই ব্রাজিল দলের সবচেয়ে বড় সমস্যাটা কোথায়, তা বোঝা যায়। ডান প্রান্তের ফুলব্যাক হিসেবে তিনি ডেকেছেন মোনাকোর ভ্যান্ডারসন ও ফ্লামেঙ্গোর ওয়েসলেকে। বাঁ প্রান্তে ফ্লামেঙ্গোর অ্যালেক্স সান্দ্রো ও ইন্টার মিলানের কার্লোস আগুস্তো।

আরও পড়ুননেইমারকে যে কারণে ব্রাজিল দলে ডাকেননি আনচেলত্তি১৬ ঘণ্টা আগে

এই চারজনের কেউই বিশ্ব ফুটবলে ডাকাবুকো নাম নয়। অর্থাৎ যে ফুলব্যাক পজিশনে একসময় নিল্টন সান্তোস, দালমা সান্তোস থেকে কাফু ও রবার্তো কার্লোসরা দাপিয়ে খেলে ব্রাজিলের আক্রমণ তৈরি করেছেন, সেই জায়গা দুটো এখন তারকাশূন্য। একাদশে দুই প্রান্তে দুই ফুলব্যাককে বেছে নিতেই গলদঘর্ম হতে হবে ইতালিয়ান এ কোচকে।

আসলে গোটা রক্ষণভাগেরই একই দশা। অভিজ্ঞ সেন্টারব্যাক মারকিনিওসের সঙ্গে ফ্লামেঙ্গোর দানিলো (তিনি ফুলব্যাক হিসেবেও খেলতে পারেন), লিও ওর্তিজ, আলেক্স সান্দ্রো ও পিএসজির বেরালদো আছেন। দানিলো, মারকিনিওস ও সান্দ্রো অভিজ্ঞতায় পুষ্ট হলেও কার্যকারিতায় অতীতে প্রশ্নবিদ্ধও হয়েছেন। রক্ষণের মতো ব্রাজিলের মাঝমাঠেও রয়েছে তারকাশূন্যতা।

২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন আনচেলত্তি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব র জ ল দল ব শ বক প

এছাড়াও পড়ুন:

জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ, ১-৪ বছর পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা

জাপানে পড়াশোনা করার আগ্রহ থাকতে পারে অনেকের। এ আগ্রহে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য দারুণ এক সুযোগ নিয়ে এসেছে দেশটির হোনজো ফাউন্ডেশন। এ ফাউন্ডেশনের হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ ২০২৬-এ আবেদন শুরু হয়েছে। এই মর্যাদাপূর্ণ জাপানি বৃত্তির মাধ্যমে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া যাবে। এতে রয়েছে আংশিক অর্থায়নের বৃত্তির পাশাপাশি মাসিক ভাতা, যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এই আন্তর্জাতিক বৃত্তি মূলত তাঁদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থীদের সাহায্য করার লক্ষ্যেই প্রদান করা হয়। পাশাপাশি এটি জাপান এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করতে সাহায্য করবে।

হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপের উদ্দেশ্য—

১৯৯৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে হোনজো ফাউন্ডেশনকে আন্তর্জাতিক বৃত্তি সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এটি প্রতিষ্ঠা করেন টাউন লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা মাসানরি হোনজো। তিনি ফাউন্ডেশনের প্রাথমিক মূলধন হিসেবে ২০ কোটি ইয়েন নগদ অর্থ এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানের ১০ লাখ শেয়ার দান করেন এ বৃত্তির জন্য। হোনজো ফাউন্ডেশন উন্নয়নশীল দেশের সেই সব শিক্ষার্থীকে সাহায্য করে, যাঁরা ভবিষ্যতে নিজেদের দেশকে উন্নয়নের পথে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবেন। পাশাপাশি জাপানি শিক্ষার্থীরাও বিদেশে পড়াশোনার জন্য এ বৃত্তি পেয়ে থাকেন, যা বৈশ্বিক সংযোগ ও আন্তর্জাতিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

আবেদনে যোগ্যতার শর্ত

হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তির জন্য আবেদনকারীদের নিচের শর্তগুলো পূরণ করতে হবে—

—জাপান ব্যতীত সব দেশের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

—আবেদনকারীকে ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হওয়া কোনো গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হবে বা ভর্তির পরিকল্পনা থাকতে হবে।

—বর্তমান শিক্ষার্থী, যাঁরা এখনো ভর্তি হননি বা কর্মরত, তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন, যদি তাঁরা এপ্রিল ২০২৬-এ ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা করেন।

—যাঁরা ২০২৫ সালের শরৎকালীন সেমিস্টারে ভর্তি হচ্ছেন, তাঁরাও এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।

—প্রফেশনাল গ্র্যাজুয়েট স্কুলে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা সাধারণত যোগ্য নন, তবে বৈধ গবেষণা পরিকল্পনা জমা দিতে পারলে তাঁরা আবেদন করতে পারবেন।

বয়সসীমা

—পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩৫ বছর।

—মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩০ বছর।

—পড়াশোনা শেষ করার পর নিজ দেশের উন্নয়নে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার থাকতে হবে।

—আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতি আগ্রহী হতে হবে এবং ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও অ্যালামনাই নেটওয়ার্কে অংশগ্রহণ করতে হবে।

—দৈনন্দিন কথোপকথনের মতো জাপানি ভাষায় কথা বলার দক্ষতা থাকতে হবে, কারণ, সাক্ষাৎকার কেবল জাপানি ভাষায় হবে।

বৃত্তির সুবিধা

হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তি শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাপক আর্থিক ও একাডেমিক সহায়তা প্রদান করে:

১। পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ।

২। মাসিক ভাতা।

—১ বা ২ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার ইয়েন।

—৩ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ১০ হাজার ইয়েন।

—৪ বা ৫ বছরের কোর্সের জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন।

—জাপানে যাওয়ার জন্য ট্রাভেল গ্র্যান্ট দেওয়ার সুযোগ থাকতে পারে।

—আর্থিক দুশ্চিন্তা ছাড়াই পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ।

—জাপানের সংস্কৃতিময় জীবনযাত্রা উপভোগের পাশাপাশি পড়াশোনার সুযোগ।

—বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্লোবাল নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার সুযোগ।

হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তিতে শিক্ষার্থীরা পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ পাবেন এবং পাবেন মাসিক ভাতা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেন্ট যোসেফের উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি, নিয়ম প্রকাশ
  • জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ, ১-৪ বছর পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা
  • ওভালজয়ী সিরাজই আগস্টের সেরা ক্রিকেটার
  • সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা