এইচএসসি পাস করে একাদশে ভর্তি হওয়া মেহেরাবই পেলেন কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক পদ
Published: 28th, May 2025 GMT
এইচএসসি পাস করেও পুনরায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া সেই মেহেরাব হোসেনকে লক্ষ্মীপুরের কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জেলা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে কলেজ ছাত্রদলের এই কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কমিটিতে মেহেরাব হোসেনকে আহ্বায়ক ও আজিম হোসেনকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত এই কমিটির মোট সদস্য সংখ্যা ২৪।
‘দলের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করে, জেলা শাখার নেতারা রহস্যজনক কারণে মেহেরাবের ইচ্ছা পূরণ করেছেন। এটি আমাদের হতাশ করেছে। এটি কোনোভাবেই আমরা মেনে নিতে পারছি না’শাহাদাত হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক, কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদলকলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়কের পদ পাওয়া মেহেরাব হোসেন ২০১৭ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন স্নাতকে (সম্মান)। তবে স্নাতক প্রথম বর্ষ পড়ার সময়ই চলে যান বিদেশে। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর আবারও দেশে ফিরে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন তিনি। কলেজ শাখায় সক্রিয় নেতা-কর্মীদের অনেকেই অভিযোগ করেন, কলেজ ছাত্রদলের সভাপতির পদ পেতে মেহেরাব এইচএসসি পাসের পরও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছেন। ৭ মে প্রথম আলোতে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
সদ্যঘোষিত কমিটিতে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদ পেয়েছেন শাহাদাত হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংগঠনের কলেজ শাখার সভাপতির পদ পেতে এইচএসসি পাস করার পরও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছেন মেহেরাব। দলের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করে, জেলা শাখার নেতারা রহস্যজনক কারণে মেহেরাবের ইচ্ছা পূরণ করেছেন। এটি আমাদের হতাশ করেছে। এটি কোনোভাবেই আমরা মেনে নিতে পারছি না।’
জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিম বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক নেতারা যাচাই-বাছাইয়ের পর এই কমিটি গঠন করেছে। দলের দুঃসময়ে মেহরাবরা হাল ধরেছেন। সুসময়ে এসে তাই তাঁকে বাদ দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া এক মাসের জন্য এই আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। এক মাস পর সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি করা হবে।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ছাত্র ছিলেন মেহেরাব হোসেন। কলেজের নিয়মিত ছাত্র হিসেবে ২০১৭ সালে তিনি এইচএসসি পাস করে একই কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি ছিলেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেলে তাঁর ভর্তি বাতিল হয়। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর তিনি আবারও দেশে ফিরে কলেজের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। সম্প্রতি তিনি কলেজের বিএমটিতে (বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি) একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছেন।
কলেজের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, বিএমটি ও এইচএসসি সমমানের। এরপরও এইচএসসি পাস একজন শিক্ষার্থী বিএমটি শাখায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি জেনে তাঁরা হতভম্ব। মেহেরাব হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এরপর আর কল ধরেননি।
গতকাল কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাড়াও লক্ষ্মীপুরে আরও ৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন কমিটির অনুমোদন দিয়েছে জেলা ছাত্রদল। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে লক্ষ্মীপুর দারুল উলুম কামিল (আলিয়া) মাদ্রাসা, লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, ভবানীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, জনতা ডিগ্রি কলেজ, লক্ষ্মীপুর পৌর আইডিয়াল কলেজ, জিল্লুর রহিম কলেজ, রায়পুর সরকারি কলেজ, রুস্তম আলী ডিগ্রি কলেজ ও হাজিরহাট সরকারি উপকূল কলেজ। এর মধ্যে রায়পুর সরকারি কলেজ ও কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন‘পদ পেতে’ এইচএসসি পাস ছাত্রদল নেতা ভর্তি হলেন একাদশ শ্রেণিতে০৭ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: লক ষ ম প র কল জ র প স কর প রথম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা
রাজধানীতে হাত ও পা বেঁধে রড দিয়ে পিটিয়ে আনোয়ার হোসেন (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ীর কাউন্সিল শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির একটি কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বিদ্যুৎমিস্ত্রি ছিলেন আনোয়ার হোসেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল পুরান ঢাকার সদরঘাটে। পারিবারিক সূত্র জানায়, আনোয়ার হোসেন স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে রাজধানীর মাতুয়াইলের মৃধাবাড়ি এলাকায় থাকতেন।
আনোয়ারের ভাই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ভোরে আনোয়ার বাসা থেকে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পরে খবর পান, তাঁর ভাইকে কাউন্সিল উত্তর শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির গ্যারেজে নিয়ে হাত–পা বেঁধে রাখা হয়েছে। এরপর সেখানে গিয়ে আনোয়ারের হাত–পা বাঁধা ও রক্তাক্ত মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান তাঁর মা।
লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে মৃত্যুর আগের তাঁর মাকে জানিয়েছিলেন আনোয়ার। তাঁর ভাই এ কথা জানিয়ে বলেন, এর কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলেই আনোয়ারের মৃত্যু হয়। এরপর যাত্রাবাড়ীর থানা-পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
গতকাল সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভোরে সঙ্গী সুমনকে নিয়ে আনোয়ার বাসের কাঠামো তৈরির কারখানায় চুরি করতে যান। এ সময় সেখানে থাকা লোকজন তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে। তাঁর সঙ্গী সুমন পালিয়ে যান।