গুগল ড্রাইভের মাধ্যমে নথির পিডিএফ ফাইল তৈরি করবেন যেভাবে
Published: 28th, May 2025 GMT
অনেকেই ছবির পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন নথি স্ক্যান করে অনলাইনে সংরক্ষণ করেন। হাতের কাছে স্ক্যানার না থাকলে বা ভ্রমণের সময় চাইলেও গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য স্ক্যান করা সম্ভব হয় না। তবে গুগল ড্রাইভ অ্যাপের স্ক্যানার-সুবিধা কাজে লাগিয়ে যেকোনো সময় স্মার্টফোনের মাধ্যমে বিনা মূল্যে নথি স্ক্যান করে সেগুলো পিডিএফ ফাইল আকারে সংরক্ষণ করা যায়। গুগল ড্রাইভের মাধ্যমে বিনা মূল্যে নথি স্ক্যান করার পদ্ধতি জেনে নেওয়া যাক।
বিনা মূল্যে নথি স্ক্যান করার জন্য প্রথমে স্মার্টফোন থেকে গুগল ড্রাইভ অ্যাপে প্রবেশ করতে হবে। এরপর অ্যাপের মূল ফিডের নিচের দিকে থাকা প্লাস আইকনের ওপর থাকা ক্যামেরা আইকনে ট্যাপ করতে হবে। এরপর ক্যামেরা ইন্টারফেস অপশন দেখা গেলে প্রয়োজনীয় নথি কোনো সমতলপৃষ্ঠে রেখে ক্যামেরার প্রদর্শিত চারকোনা বক্সের সাহায্যে ছবি তুলতে হবে। স্ক্যান করার পর পরের পৃষ্ঠায় ধারণ করা নথির স্ক্যান ছবি দেখা যাবে। ছবি ভালো না হলে রিটেক অপশনে ক্লিক করে আবার ছবি তুলতে হবে। এবার ক্রপ অ্যান্ট রোটেট অপশনের মাধ্যমে স্ক্যান করা ছবি ক্রপ ও রোটেট করে ডান বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপর গুগল ড্রাইভের যে ফোল্ডারে স্ক্যান করা নথিটি রাখতে হবে তা নির্বাচন করে সেভ বাটনে ক্লিক করলেই এর স্ক্যান ছবি পিডিএফ ফাইল আকারে নির্দিষ্ট ফোল্ডারে জমা হবে।
আরও পড়ুনগুগল ড্রাইভের জায়গা খালি করার ৭ কৌশল০৬ মে ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ক য ন কর
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা
প্রতিদিনের মতো কাজ শেষে গতকাল সোমবার বাসায় ফিরছিলেন নাজমা বেগম। ঢাকার টঙ্গী এলাকায় থাকেন তিনি। পরিচিত এক ব্যক্তি তাঁকে হঠাৎ ফোন করে জানান, তাঁর নিখোঁজ ছেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। দ্রুত ওই ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেন নাজমা। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিও দেখান নাজমাকে। সে ভিডিওতে দেখতে পান, তাঁর ১০ দিন ধরে নিখোঁজ ছেলে আবদুল্লাহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
ছেলের খোঁজ পেয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ছুটে আসেন তিনি। রেলস্টেশন থেকে সরাসরি চলে আসেন চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে। এখানেই ৮ দিন ধরে ভর্তি আবদুল্লাহ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৮ সেপ্টেম্বর আহত অবস্থায় আবদুল্লাহকে হাসপাতালে আনা হয়। সে সময় তার নাম-ঠিকানা কিছুই জানা যায়নি। অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবেই হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডে নেওয়া হয় তাকে। পরদিন তার অস্ত্রোপচার হয়। গত শনিবার আবদুল্লাহর জ্ঞান ফেরে। এরপর নিজের ও বাবা-মায়ের নাম আর বাসার ঠিকানা জানায় সে।
চিকিৎসকেরা সেই সূত্রে ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানাভাবে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেন। ফেসবুকে আবদুল্লাহর ছবি দিয়ে খোঁজ চাওয়া হয় বাবা-মায়ের। সেই ছবি পরিচিতদের মাধ্যমে দেখেন নাজমা বেগম। এরপর ছুটে আসেন চট্টগ্রামে। হাসপাতালে এসেই নার্সদের সহায়তায় যান নিউরোসার্জারি বিভাগে। সেখানে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ)চিকিৎসাধীন আবদুল্লাহকে দেখেন।
আজ বিকেলে হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডের সামনে কথা হয় আবদুল্লাহর মা নাজমা বেগমের সঙ্গে। সকালেই চট্টগ্রাম পৌঁছেছেন তিনি। জানালেন, তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে ১০ বছর বয়সী আবদুল্লাহ সবার বড়। ছোট মেয়ের বয়স পাঁচ ও আরেক ছেলের বয়স দুই। আবদুল্লাহ সুস্থ আছে জেনে স্বস্তি পেলেও দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। কারণ, এটিই প্রথমবার নয়, এর আগেও কয়েকবার ঘর থেকে কিছু না বলে বেরিয়ে যায় সে।
নাজমা বেগম বলেন, প্রায়ই আবদুল্লাহ ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এদিক–সেদিক চলে যায়। পরে আবার ফিরে আসে। এর আগেও ঢাকার আশপাশে এদিক-সেদিক চলে গিয়েছিল সে। ৬ সেপ্টেম্বর সে ভাত খাওয়া থেকে উঠে হঠাৎ চলে যায়। সে ফিরে আসবে এই আশায় থানায় যাননি। কিন্তু ১০ দিন হয়ে যাওয়ায় এদিক–সেদিক খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। ঢাকায় বিভিন্ন স্টেশনে ছেলের খোঁজে গেছেন বলে জানান নাজমা।
চমেক হাসপাতালে চিকিৎসকেরা আবদুল্লাহর বরাত দিয়ে জানান, বাসা থেকে বেরিয়ে সে কক্সবাজার যাচ্ছিল। পথে চট্টগ্রামে ট্রেন থামলে সে ট্রেন থেকে পড়ে যায়। চিকিৎসার পর এখন সুস্থ হয়ে উঠছে সে।
চিকিৎসকেরা জানান, আবদুল্লাহকে যখন আনা হয় তার মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল। তার মাথার এক পাশের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। ট্রেন থেকে পড়ার কারণে মাথায় আঘাত লাগে। হাড়ের কিছু অংশ মস্তিষ্কের ভেতরে গেঁথে যায়। অস্ত্রোপচারও সফল হয়েছে। তবে জ্ঞান না ফেরায় তার পরিচয় জানা যায়নি। জ্ঞান ফেরার পর তার তথ্য নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা হয়।
শুরু থেকে আবদুল্লাহর অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউরোসার্জারি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক মু. ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, ‘তার হাড় ভেঙে মস্তিষ্কের ভেতরে চলে গিয়েছিল। অস্ত্রোপচারের পর স্বাভাবিকভাবে সেটি জোড়া দেওয়া হয়েছে। এখন সে পুরোপুরি সুস্থ। তাকে আমরা আজ-কালের মধ্যে ডিসচার্জ করে দেব। শিশুকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিতে পেরে আমরাও আনন্দিত।’