পবিত্র ঈদুল আযহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি উপলক্ষে ২৩ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। এ দীর্ঘ ছুটিতে আগামী ৪ জুন থেকে ১৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখার বিষয়ে ভাবছে প্রাধ্যক্ষ পরিষদ। তবে ছুটিতে হল খোলা রাখার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৮ মে) সকাল ১০টায় প্রশাসন ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা।

এ সময় ‘ছুটির নামে হল বন্ধের প্রহসন মানি না’, ‘শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনা আর না’, ‘ঢাবি, রাবি, জাবি পারলে ইবি কেন নয়?’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যা-কার্ড প্রদর্শন করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। 

আরো পড়ুন:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০-এ পা

লক্ষ্মীপুরে শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কারাগারে

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রতি বছর ঈদে ইবির সব হল দীর্ঘদিন বন্ধ করে দেওয়া হয়। যা শিক্ষার্থীদের জন্য চরম ভোগান্তির। ছুটিতে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কেনো বন্ধ করা হবে? বহু ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত যারা ঈদুল আজহা উদযাপন করেন না। ছুটির সময় হলে বন্ধ থাকলে তাঁদের নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে পড়ে।

তারা বলেন, ছুটির পরপরই ৪৭তম বিসিএসসহ একাধিক সরকারি ও বেসরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী হলে থেকে এসব পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হল বন্ধ হলে তাদের প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটবে এবং মানসিক চাপ সৃষ্টি হবে। এছাড়া স্নাতকোত্তর ও গবেষণামূলক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য চলমান থিসিস, গবেষণা প্রকল্প এবং ল্যাবরেটরি কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। হল বন্ধ হলে এসব কাজ অনিশ্চয়তায় পড়বে।

তারা আরও বলেন, ঈদের পরপরই বিভিন্ন বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল, মধ্যবর্তী মূল্যায়ন ও প্রেজেন্টেশন থাকায় অনেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসেই সেগুলোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাদের পড়াশোনায় কোনো বিঘ্ন না ঘটে, সেজন্য হল খোলা রাখা প্রয়োজন। দূরবর্তী অনেক শিক্ষার্থী বন্ধে ক্যাম্পাসে থাকেন। কিন্তু হল বন্ধ করে দিলে তাদের থাকার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর আগে বিভিন্ন সময়ে হল খোলা রাখার বিষয়ে আমাদের বলেছেন। কিন্তু এখন তারাই হল বন্ধ করে দিচ্ছেন। আমরা বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল খোলা রাখার দাবি জানাই।

মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে স্মারকলিপি নিয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.

জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের দাবি তুলে ধরেন। 

এ সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কোষাধ্যক্ষ বলেন, “তোমরা যারা হলে থাকতে চাও, তারা তোমাদের হলের প্রধ্যক্ষকে চাহিদার কথা জানাও। তারা প্রাধ্যক্ষ পরিষদকে জানাবে এবং প্রাধ্যক্ষ পরিষদ আমাদের সঙ্গে বসবে। হল খোলা রাখার বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ পরিষদ ইতিবাচক হলে আমরাও ইতিবাচক।” 

এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল গফুর গাজী বলেন, “হল খোলা রাখার বিষয়ে আমরা পজিটিভ। ছুটিতে যারা হলে থাকতে চায়, তাদের লিখিতভাবে স্ব-স্ব হল প্রাধ্যক্ষের কাছে আবেদন দিতে বলেছি। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শিক্ষার্থী যদি থাকতে চায়, তাহলে আমরা হল খোলা রাখব।”

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ কর ল বন ধ র জন য বন ধ ক হল খ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ময়মনসিংহে ৪১ শহীদ পরিবারের চেক আটকে রাখায় জেলা প্রশাসকের অপসারণ দাবি

ময়মনসিংহে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ৪১ পরিবারের জন্য বরাদ্দ করা অনুদানের চেক আটকে রাখার অভিযোগে জেলা প্রশাসক জিয়া আহমেদের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন স্বজনেরা। এ দাবিতে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন তাঁরা। পরে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

দুপুরে জেলা পরিষদ চত্বরে জড়ো হন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের স্বজন ও আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সমন্বয়কেরা। সেখান থেকে একটি মিছিল নিয়ে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করা হয়।

মানববন্ধনের ব্যানারে উল্লেখ করা হয়, ‘আওয়ামী মদদপুষ্ট অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পরিষদ প্রশাসক জিয়া আহমেদ সুমনের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন। গত বছর গণ-আন্দোলনে ময়মনসিংহের ৪১ জন শহীদ পরিবারের সরকারি আর্থিক অনুদান প্রাপ্তিতে বাধা কেন? জানতে চাই প্রশাসনের কাছে। ফ্যাসিস্ট তাড়াও, আওয়ামী দোসর খেদাও। আন্দোলনে শহীদ ও আহত পরিবারের মর্যাদা রক্ষা করুন।’

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন শহীদ রেদোয়ান হোসেনের বাবা আসাদুজ্জামান ও শহীদ আবদুল্লাহ আল মাহিনের বাবা জামিল হোসেন। তাঁরা জানান, গত মাসে কাগজপত্র জমা নিলেও তাঁদের অনুদান দেওয়া হচ্ছে না। অথচ দেশের ৬৩টি জেলা পরিষদ থেকে অন্য শহীদ পরিবারগুলোকে অনুদান বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু ময়মনসিংহে টালবাহানা করা হচ্ছে।

বিভাগীয় কমিশনার আজ তাঁর কার্যালয়ে না থাকায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) তাহমিনা আক্তারের কাছে এ বিষয়ে স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়। তাহমিনা আক্তার বলেন, জেলা পরিষদের রাজস্ব তহবিল থেকে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী অনুদানের জন্য চেক রেডি করা হয়েছে। ২৯ মে এসব চেক বিতরণ করা হবে। প্রশাসকের অপসারণের দাবির বিষয়টি বিভাগীয় কমিশনারকে অবগত করা হবে।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, আন্দোলনে নিহত ৪১ জনের জন্য সরকার ২ লাখ টাকা করে বরাদ্দ ময়মনসিংহ জেলা পরিষদে পাঠিয়েছেন। এই ৪১ জন সরকারি গেজেটভুক্ত। আগেও মন্ত্রণালয় থেকে ৫ লাখ টাকার অনুদান পেয়েছে এই পরিবারগুলো। তবে জেলা পরিষদের কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সব কার্যক্রম শেষ করা হলেও বর্তমান প্রশাসক জিয়া আহমেদ অনুদানের বিষয়টি আমলেই নিচ্ছে না। তিনি ফ্যাসিস্ট সরকারের খাস দোসর। তাঁকে ময়মনসিংহে দেখতে চান না তাঁরা। যে অফিসার নিহত ছাত্রদের অনুদান নিয়ে টালবাহানা করেন, দীর্ঘদিন ফেলে রাখেন, তাঁকে আমরা ময়মনসিংহবাসী চাই না। তাঁকে অনতিবিলম্বে সরিয়ে দেওয়া হোক। তা না হলে তাঁর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন এবং মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দিতে বাধ্য হবেন তাঁরা।

ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) জিয়া আহমেদ সুমন। তিনি গত ১৭ এপ্রিল এই কর্মস্থলে যোগ দেন। শহীদ পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে তাঁর ব্যবহৃত সরকারি মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

তবে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কবির হোসেন সরদার বলেন, ‘আমাদের প্রশাসকও নতুন যোগ দিয়েছেন, এ কারণে একটু দেরি হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাওয়ার পরই আমরা তালিকা আপডেট করে ফাইলটি প্রশাসকের কাছে পাঠিয়েছি। কিন্তু ব্যস্ততা ও যাচাই–বাছাই করার জন্য একটু দেরি হয়ে গেছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারীর মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে: মহিলা পরিষদ
  • নন্দকুঁজা নদীকে দখল-দূষণমুক্ত করার দাবি
  • লংগদু-নানিয়ারচর সড়কের দাবিতে রাজপথে উপজেলাবাসী
  • জবি ডিবেটিং সোসাইটির সম্পাদকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • বিএনপি নেতা কামরুলের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে আলটিমেটাম
  • পাবিপ্রবিতে স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর দাবিতে শিক্ষকদের মানববন্ধন
  • ময়মনসিংহে ৪১ শহীদ পরিবারের চেক আটকে রাখায় জেলা প্রশাসকের অপসারণ দাবি