কথা ছিল ক্যাবিনেটে বসে ঘোষণা করব প্রেমের দরপত্র
Published: 31st, May 2025 GMT
গ্রীষ্মের সকালে
তোমার গোপন দাগ আমি চিনি না
তবু তাকে ডাকি প্রেম।
তুমি শুয়ে আছ গ্রীষ্মের করুণ রোদে; পেছনে জ্বলছে আকাশ।
দূরে কোনোখানে গোলাপের মউ মউ গন্ধ, লাল আটার রুটি,
আর একফালি তরমুজ—
যেন মুখ ভরে ওঠে স্বপ্নে।
তোমার সাথে দেখা নেই, কতকাল নেই আলাপচারিতা,
দুঃখ নেই, নেই একসাথে শোনা কোনো গান।
আজ শুধু তোমার জন্মদিন আমাকে ছুঁয়ে আছে মমতায়।
চেয়ে দেখো, কোনো এক ঝড়ে ভেঙে গেছে জাহাজের ডেক
সে জাহাজ আমার চোখে,
আমি ভেঙে গেছি কোনো এক সভ্যতার সাথে,
আমি ভেঙে গেছি ভাষার সাথে সাথে।
পোস্টম্যান আসবে একটা চিঠি নিয়ে,
চিঠির অক্ষরে গাঢ় অন্ধকার।
সে লেখায় কার অশ্রু?
চিঠিতে লেগে আছে অসহ্যের প্রলেপ।
আমি ভাঙা ঢেউ, আমি গ্রীষ্মের তাপ।
আমরা কি কাঁধে তুলে নেব অস্ত্র?
আমাদের প্রেম কি তবে হয়ে যাবে অঙ্গার?
আমরা একসাথে যাব বসন্তবিহারে, বিশ্রামে।
দুহাত ভরে প্রেম নিয়ে বসাব অপ্রেমিকের পাঁজরে।
আজ এই সকালে ঝনঝন থালাবাসনের আওয়াজ,
আজ এই সকালে বুকের ভেতর তোমার প্রেমের জোঁক।
গ্রীষ্মদিনে একটা শর্টকাট রাস্তায় ঢুকে পড়তে চায় মন
তোমার হাত ধরে।
ওইটুকু হাতই সব।
ওইটুকু ধরার জন্যই হাত পাতি তোমার সম্মুখে।
আমি লোভী নই,
হলে তোমার মাথাটা কেটে নিয়ে আসতাম।
সাজিয়ে রাখতাম আমার কোলের কাছে।
আমার প্রেমের কাছে।
আমি অত কালবৈশাখী নই।
আমি অত রুদ্র নই।
আমাদের কথা বলবার কথা ছিল।
কথা ছিল ক্যাবিনেটে বসে ঘোষণা করব প্রেমের দরপত্র।
কিন্তু যুদ্ধে যেতে হলো আমাদের।
আমরা ফিরতে পারলাম না।
আমার দরিয়ায় দিক নেই,
নেই পথহারা কোনো সাগরপাখি।
আমি একা একা খুঁজে বেড়াই বাতাসে
তোমাকে।
আজকে সকালে তুমিই ওষুধ, তুমিই নেপথ্যে।
আমার এই নষ্টমুখ নেবে তুমি?
ধানক্ষেতে যাবে? অস্তগামী সূর্য যেখানে মিশে যায় লজ্জায়?
বাংলার মেহগনিগাছের গন্ধ শুকে শুকে আগাবে কি?
চলো আমরা মঞ্জিল গড়ে তুলি
সবুজে সবুজ।
গ্রীষ্মের ফল আর ছুটি।
একটা সকালে সমস্ত পৃথিবীকে পাগলা গারদে পাঠিয়ে
শুধু তুমি আর আমি।
আমার সিগারেট ভালো লাগে না,
শ্বাস নিলে জামপাতার ঘ্রাণে বুক ভরে যায়।
তোমার গন্ধ যেন পাখির পালকের গায়ে লেগে আছে,
তুমি যেন সমুদ্রের ঢেউয়ের নোনা প্রাণ!
আমাকে পাখি পড়ানোর মতো প্রেম পড়ালে তুমি;
আমি দিকদিশা হারিয়ে, দুর্দান্ত পোষা পাখির সুরে
শুধু বলি, আমি তোমাকে ভালোবাসি।
সে শব্দ, সে আলো, সে উন্মুখ চিৎকার—
কোথাও যায় না;
আটকে থাকে খাঁচার পাঁজরে।
তুমি কী ভুবন ভ্রমিয়া আসবে?
রবীন্দ্রনাথের মতো?
কোনো এক গ্রীষ্মের সকালে.
আমার বুক বরাবর তোমার যেই হাত উইঠা আসে মোলায়েম ভঙ্গিতে,
তারা মেসোপটেমিয়া ভ্রমণরত?
আমার ঠোঁট বরাবর তোমার যে চোখ ভেদ করে,
সেই চোখেরে মনে হয় শামুকের খোসা
তোমার সুদৃপ্ত প্রেম থেকে পরিত্রাণ চাই না কোনোকালেও।
বিস্মরণ ফুল, নদী, রজনীগন্ধার বাস আর তুমি সকলই প্রস্থান করো।
সস্তা কবিতা লিখে জবুথবু আমার হাত তুমি কী লীলায় ধরলা,
রাস্তা পার করলা, যেন পার করলা পুলসিরাত।
তোমারে স্টেজে দেখতাম বহু আগে অবিরত ডায়ালগ দিতেছ।
আমার মনে হইত,
তোমার শিকড় গজাইছে স্পট লাইটের তলায়।
প্রেমিকরে দেবতা ডাকার ধৃষ্টতা আমার নাই,
তবে নীল জামা গায়ে আমার দিকে যখন তুমি হাঁইটা আসো,
আমার ভেতরে একটা পলিটিক্যাল বাহাস চলে।
তোমার সিগারেটে কালো হওয়া দাঁত আমারে কামড়াইতে আসে।
আমি বিহ্বল হইয়া টের পাই—
জ্যামাইকা থেকে অস্ট্রেলিয়াগামী হলুদ রোদের মতো নরোম তোমার কামড়!
প্রেম আটকাইছে বানসালির সেটে,
আর আমি তোমার সিনে।
ঢেউয়ের পর ঢেউ আসে—
কখনো জাগায় প্রেম, কখনো যৌনতা,
কখনো তুমি আর কখনো শিল্পকলা...
নীলক্ষেত পারায়া জিগাতলা যাবার দিনগুলায়,
ঠিক রাত দশটায় আমি নিয়ম করে ক্ষয়ে গেছি।
এই মোলায়েম বেঁচে থাকা এখন শুধুই তোমার জন্য।
এই ট্র্যাশ কবিতা, দুটো সিগারেট,
একটা বেহুশ দিন আর ঘোলা চোখ সব তোমার।
প্রেমপ্রার্থীরা বলে,
আমার চোখ নাকি সমুদ্রের মতন!
আমি বাঁকা হাসি হাইসা নির্দ্বিধায় তাদের বলি—
এইখানের সমুদ্রের নাবিক একজনই!
মে মাসে বৃষ্টি ব্লুজজলের দিন,
আই রিমেম্বার স্কাইজ রিফ্লেক্টেড ইন ইওর আইজ।
বাজে মুডি ব্লুজ...
ড্যাং ড্যা ড্যাং ড্যাং ড্যাং।
জল, দুপুর, নদী, দ্বিপ্রহর, প্রজাপতি ম্যাচ আর মের গান।
আত্মহননের গান কলাবতীগাছের শরীরজুড়ে।
কানাগলি,
বৃষ্টির জল ঘোলা হলো বারগেন্ডি রঙা বিকেলে।
বিরহী নকশা জাগে কপালের ঠিক মাঝখানে।
কামিনীকাঞ্চন ঝুরঝুর করে আদরে নুয়ে পড়ে ছাদের কার্নিশে।
কালো পাখি উড়ে যায় গলির শেষে।
নিঃস্তব্ধতা তরঙ্গ ছড়ায় বিস্মৃতির শুঁড়িখানায়।
মাজবুরিয়া,
আকাশের রং খয়েরি, ভয় ছড়ায় নাভিমূলে।
কান্নাকে ডাকি ক্লাউন।
গোধূলির আলোয় এসো,
খোলো সব আবরণ যা তোমাদের আছে।
বিরাগ, জেদ, খিদে, কাম, লোভ, পরোক্ষ প্রতিহিংসা, কাপড়, ন্যাকা কান্না—সব সব সব।
ড্রাগস,
নেশাতুর চোখ, উইন্ডি মন আর হৃদয় জোড়া স্কারস।
দিন কাটছে নধর সাইডবার্নে।
ফ্যান্সি ডিল হচ্ছে তোমার সাথে।
প্রেমানল ছড়াব সিন্ধু থেকে ইনকায়—
মায়ান থেকে মোগলে।
তামাম দুনিয়ায় ঘোষণা করি জিহাদের।
স্কেচ করি প্রেমের।
বৃষ্টি এতগুলো কথা কওয়াইলো শালা!
বৃষ্টির আশঙ্কাআমার মেঘমেদুরে মন
বৃষ্টি নামলেই কাদা কাদা।
আমার বৃষ্টি নামার মন
ভিজে ভিজে নয়নতারা।
বৃষ্টির আশঙ্কায় সারা দিন ক্লাউডি
ঘোলা চোখমুখে তোমাকে খুঁজি।
আলুথালু চুল ঠোঁট।
মৃন্ময় ডাক শুনি।
রাগী বেড়াল আর মেঘ একসাথে ডাকে।
ঘরঘরঘর।
গাছের শরীর ভিজে ভিজে দাঁড়িয়ে আছে।
কালো শরীর।
গাছের বৃষ্টিমুখর ভরাট শরীর।
তাতে উসকানি দেয় হাওয়া।
গাছের জলোৎসব।
আমি ভাবি—
তোমার শরীর কি মাটির মতো ভিজে উঠছে?
তুমি কি গাছের মতো ভিজে উঠছ?
কেয়া–কামিনীর ঘ্রাণ;
ভারী বাতাসে আমার চোখ বন্ধ হয়ে আসে।
মাথাটা বাড়ি মেরে দুই ভাগ করে ফেলতে ইচ্ছা হয়।
কেন শুধু বৃষ্টির শব্দ পাই না?
কেন সাতসতেরো শব্দ ঘিরে রাখে?
পুকুরের পানিতে বৃষ্টির ফোঁটা কেন পৃথিবীর শেষ কথা নয়?
বৃষ্টির দিন রিকশার পর্দা তুলে দিয়ে
চলে যেতে ইচ্ছা করে আসামে।
সেখানেও একই মেঘ, একই জলঝড়।
কিন্তু কীভাবে বলি,
‘ওই রিকশা যাবা? আসাম?’
শৈশবে বৃষ্টি ছিল আমার
কৈশোরে বৃষ্টি ছিল বন্ধুদের
যৌবনে বৃষ্টি হয়ে গেল তোমার, হা হা হা!
এখন মেঘ দেখলেই তুমি,
এখন জল নামলেই তুমি,
এখন সরোদ বাজলেই তুমি।
বৃষ্টির দিন এলে মনে হয়,
তোমার সাথে ফুল তুলতে যাই।
যে ফুলে কাঁটা,
যে ফুলে ব্যথা,
যে ফুলে কেটে যাবে হাত।
তুমি তখন পাশেই থাকো,
আমার আঙুলে এঁকে দাও সেই শব্দ।
আমি জলরাশির অভিমানে ফেটে পড়ি।
আমাকে বৃষ্টির সাথে ঝরাও।
আমাকে মেঘের সাথে ভাসাও।
চড়ুই পাখিরা আনন্দে বাতাসে ভাসছে
টিয়ারা গা ঢেকে ঝিমায়।
বারান্দার সব কাপড় ভিজে গেছে।
আর কখনো শুকাবে না।
যেভাবে শুকায়নি শৈশবের ক্ষত।
যেভাবে শুকায়নি বুকের দাগ।
কিছু বৃষ্টি থামে না।
কিছু কান্না থামে না...
তুমি আর আসো না কেন?
আর ডাকো না কেন আমাকে?
মেঘের সাথে আসতে পারো না?
তোমার পায়ে শিকড় আটকে গেছে।
তুমি কি এই বরষায় পথ হারানো নাবিক?
আমার চতুর্দিকে কি উত্তাল ঢেউ?
বৃষ্টির দিন
দালান বাড়ি, খেতখামারি—
সব ভিজে উঠছে।
বৃষ্টির দিন,
তোমার জন্য;
আমার চোখ আর চোয়াল ভিজে উঠছে।
আমি নদীর দিকে চলে যাব।
জল আর ঘোলাটে জলে খাবি খাব।
নদী মেখে আমি বৃষ্টির আশঙ্কা ভুলে যাব।
আজ সারাটা দিন পাখির ডানা ঝাপটানো
আজ সারাটা দিন ফেলে আসা শীতকালের কথা।
আজ সারাটা দিন উড়াক-তাড়াক সন্ধ্যার স্মৃতি।
আজ সারাটা দিন বৃষ্টি নামের জলের দাগ।
আজ সারাটা দিন আমি আর ভেজা শরীরের ল্যাজ নাড়া কুত্তা।
আজ সারাটা দিন এর পর থেকে তুমি
মেয়েদের বুকএকটা–দুইটা–তিনটা কইরা তুলা মেঘ উইড়া যাচ্ছে তোমার ঘরের দিকে।
ওরা রাতে কোথায় থাকে? তোমার ঘরে? বুকেই?
বুকে কী রাখো? কর্পূর না খাঁচা?
তোমার বুক কি পাথর?
ভাঙে না?
কীভাবে ভাঙে? হাতুড়ি চালাইলে নাকি পানিতে?
চোখের পানিতে ভাঙন ধরলে কী করো?
শুকাও না?
তোমার বুকের ভেতর গন্ধ পাওয়া যায় ছাতিম ফুলের।
ভুল বললাম? অন্যরা কিসের গন্ধ পাইত?
পাইত না?
তোমার বুককে উদ্দেশ্যে করে সেদিন লিখলাম দুইটা লাইন—
মাননীয়, আপনি সুবিশাল প্যারেড গ্রাউন্ড,
আপনার ওপর দিয়ে বাজ পাখির মতন সরে সরে যাচ্ছি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পায়রা বন্দরসহ দুই প্রকল্পের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন
পায়রা বন্দরের জন্য সংশ্লিষ্ট পরিসেবাসহ দুটি শিপ টু শোর ক্রেন সরবরাহ এবং নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। প্রস্তাব দুটিতে ব্যয় হবে ৪৫০ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার ২৫৪ টাকা।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রি পরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কমিটির সদস্য ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা সূত্রে জানা যায়, পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় সংশ্লিষ্ট পরিসেবাসহ দুটি শিপ টু শোর ক্রেন সরবরাহ এবং স্থাপন কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ৪টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) এইচপি এবং (২) এনজে, চায়না প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১৬২ কোটি ২ লাখ ১১ হাজার ৫৬৮ টাকা।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর দুইয়ের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এ জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ২টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। দরপত্রের সকল প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স এবং (২) এসএস রহমান ইন্টারন্যানাল লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ২৮৮ কোটি ৮ লাখ ৯৮ হাজার ৬৮৬ টাকা।
ঢাকা/হাসনাত//