লস অ্যাঞ্জেলেসে এবার মেরিন সেনা মোতায়েন
Published: 10th, June 2025 GMT
অভিবাসীবিরোধী অভিযানের জেরে বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসে ৭০০ মেরিন সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষোভ ঠেকাতে অন্যান্য বাহিনীকে সহায়তা করতে তাদের মোতায়েন করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেসের বিস্তৃত এলাকায় ফেডারেল কর্মী ও ফেডারেল সম্পত্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মাঠপর্যায়ে যেসব বাহিনী কাজ করছে মেরিন সেনারা তাদের সঙ্গে কাজ করবে। ওই এলাকায় নজরদারি অব্যাহত রাখতে পর্যাপ্ত সংখ্যক বাহিনী সরবরাহের জন্য তাদের মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঅভিবাসীদের আটকের প্রতিবাদে উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলেস, ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন ট্রাম্পের০৮ জুন ২০২৫যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, টাস্ক ফোর্স ৫১–এর মধ্যে ২ হাজার ১০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য এবং ৭০০ মেরিন সেনা রয়েছেন। তারা উত্তেজনা প্রশমন, জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ এবং বলপ্রয়োগের নিয়ম সম্পর্কে প্রশিকক্ষণপ্রাপ্ত।
এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম। তিনি লস অ্যাঞ্জেলেস এলাকায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেরিন সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছেন।
গ্যাভিন নিউসম আরও বলেন, ‘তারা (মেরিন সেনারা) আমাদের বীর। একজন একনায়কোচিত প্রেসিডেন্টের উন্মাদ বাস্তবতা বর্জিত ইচ্ছা পূরণের জন্য নিজের দেশের মাটিতে তাদের দেশবাসীর মুখোমুখি দাঁড় করানো উচিত নয়। এটা আমেরিকান আদর্শের পরিপন্থী।’
আরও পড়ুনন্যাশনাল গার্ড না দিলে লস অ্যাঞ্জেলেস পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যেত: ট্রাম্প৪ ঘণ্টা আগেএদিকে সান ফ্রান্সিসকো পুলিশ রোববারের বিক্ষোভ কর্মসূচির সম্পর্কে একটি হালনাগাদ তথ্য দিয়েছে। পুলিশের ভারপ্রাপ্ত প্রধান পল ইয়েপ জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ শেষ পর্যন্ত সহিংসতা ও সম্পত্তি ধ্বংসে পরিণত হয়।
পল ইয়েপ আরও জানান বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। তবে তিনি এখন সুস্থ হয়েছেন। বিক্ষোভ ছেড়ে যেতে অস্বীকৃতি জানানো ৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রোববার রাতভর বিভিন্ন স্থান থেকে ১৪৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জন অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলো। ১৪৭ জনকে পরে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের অর্ধেক সান ফ্রান্সিসকোর বাসিন্দা, আর বাকি অর্ধেক শহরের বাইরের বাসিন্দা ছিলেন
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: লস অ য ঞ জ ল স
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডনের রাস্তায় নামছে উবারের চালকবিহীন ট্যাক্সি
রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান উবার জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে তারা চালকবিহীন ট্যাক্সিসেবা চালু করতে যাচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক ব্রিটিশ স্টার্টআপ ‘ওয়েভ’–এর সঙ্গে যৌথভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে প্রতিষ্ঠানটি।
শুরুতে প্রতিটি গাড়িতে একজন মানবচালক উপস্থিত থাকবেন, যিনি প্রয়োজনে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন। তবে পর্যায়ক্রমে তা হয়ে উঠবে পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয়। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অপেক্ষাকৃত সহজ রাস্তায় শহরে উবার চালকবিহীন বা সেলফ ড্রাইভিং ট্যাক্সির পরীক্ষামূলক চলাচল চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু লন্ডনের মতো জটিল ও ব্যস্ত শহরের সড়কে এ প্রযুক্তির বাস্তব প্রয়োগ এক নতুন চ্যালেঞ্জ। উবারের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড বলেন, ‘লন্ডনের রাস্তা বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত ও জটিল নগর পরিবেশ। তাই এ শহরে সেলফ ড্রাইভিং যানবাহনের পরীক্ষা আমাদের ভবিষ্যতের দিকে একটি বড় পদক্ষেপ। আমাদের লক্ষ্য সেলফ ড্রাইভিং প্রযুক্তিকে এমন একটি নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য পরিবহন হিসেবে গড়ে তোলা, যা সবার জন্য সহজলভ্য হবে।’
ব্রিটিশ সরকার সম্প্রতি জানিয়েছে, ২০২৬ সালেই সেলফ ড্রাইভিং ট্যাক্সি ও বাসসদৃশ পরিবহনের পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হচ্ছে ইংল্যান্ডে। আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই কার্যক্রম শুরুর কথা ছিল ২০২৭ সালের দ্বিতীয়ার্ধে, যখন ‘অটোমেটেড ভেহিকলস অ্যাক্ট’ আইনে রূপ নেবে।
ওয়েভের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী অ্যালেক্স কেনডেল বলেন, ‘এই পরীক্ষামূলক চালু আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এর মাধ্যমে আমরা যুক্তরাজ্যে নিরাপদ ও বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন সেলফ ড্রাইভিং যাত্রাকে বাস্তবের কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছি।’
ব্রিটিশ পরিবহনমন্ত্রী হেইডি আলেকজান্ডার বলেন, ‘ভবিষ্যতের পরিবহন এখন কল্পনা নয়, বাস্তবতা। সেলফ ড্রাইভিং গাড়ি শুধু প্রযুক্তিগত উন্নয়নই নয়, এটি কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ এবং যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তি খাতে নেতৃত্বের সুযোগ তৈরি করবে।’
ব্রিটিশ পরিবহনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সড়ক নিরাপত্তা আমাদের অগ্রাধিকার। তাই এ প্রযুক্তির সব পরীক্ষায় আমরা সেই দিকটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা উদ্ভাবনে বিশ্বাস করি এবং সে পথেই এগিয়ে যাচ্ছি।’
তবে অটোমেটেড ভেহিকলস অ্যাক্ট আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়ার পর ব্যক্তিগত মালিকানায় সেলফ ড্রাইভিং গাড়ির ব্যবহার শুরু হবে। ওই আইন অনুযায়ী, সেলফ ড্রাইভিং যানবাহনের নিরাপত্তা মান কমপক্ষে একজন দক্ষ ও সচেতন মানবচালকের সমতুল্য হতে হবে। যুক্তরাজ্যের পরিবহন বিভাগ বলছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক এ গাড়িগুলোর প্রতিক্রিয়া সময় হবে মানুষের চেয়ে অনেক দ্রুত। ক্লান্তি, অমনোযোগ কিংবা ভুল সিদ্ধান্তের ঝুঁকিও থাকছে না। ফলে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, সেলফ ড্রাইভিং যানবাহন প্রযুক্তির বিকাশ ২০৩৫ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যে প্রায় ৩৮ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে এবং অর্থনীতিতে যোগ করতে পারে প্রায় ৪ হাজার ২০০ কোটি পাউন্ড।
সূত্র: ডেইলি মেইল