যুক্তরাষ্ট্রের টিকা কমিটির সব সদস্য বরখাস্ত
Published: 11th, June 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে টিকাবিষয়ক পরামর্শক কমিটির ১৭ সদস্যের সবাইকে অপসারণ করা হয়েছে। টিকা নিয়ে সংশয়বাদী হিসেবে পরিচিত দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র তাদের বরখাস্ত করেছেন। এই সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক সম্পাদকীয়তে তিনি বলেছেন, অ্যাডভাইজরি কমিটি অন ইমিউনাইজেশন প্র্যাকটিসেসের (এসিআইপি) সদস্যদের ‘স্বার্থের দ্বন্দ্ব’ টিকার প্রতি জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ণ করেছে। আমেরিকানদের জন্য ‘সবচেয়ে নিরাপদ’ টিকা নিশ্চিত করতে চান বলে দাবি করেন কেনেডি।
কেনেডি সোমবার ঘোষণা দেন, এসিআইপির সব সদস্যই ‘অবসরে’ যাচ্ছেন। এই ১৭ সদস্যের মধ্যে আটজন গত জানুয়ারিতে বাইডেন প্রশাসনের মেয়াদের শেষ মুহূর্তে নিয়োগ পেয়েছিলেন। বেশির ভাগ সদস্যই বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, আমেরিকার বিজ্ঞানীদের একটি অংশ টিকা নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন কয়েক বছর ধরেই। তাদের দাবির মুখে এই সিদ্ধান্ত নিলেন রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কেনেডি নিজেও টিকা নিয়ে কয়েক বছর ধরেই সন্দেহ প্রকাশ করে আসছেন। মার্কিন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে তিনি সমালোচনা করেছেন অনেকবার। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হওয়ার পর একের পর নতুন উদ্যোগ নিয়েছেন কেনেডি। মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশটির খাদ্য ও ওষুধ ব্যবস্থায়ও আমূল পরিবর্তন আনতে চাচ্ছেন। সেই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এবার টিকা কমিটির সবাইকে বরখাস্ত করলেন।
তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিকা কমিটির সবাইকে বরখাস্ত করায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর থেকে মানুষের আস্থা উঠে যাবে বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। কেননা, এই কিমিটিই এতদিন পরামর্শ দিয়ে এসেছে কীভাবে ও কাদের টিকা দেওয়া যাবে। তবে কেনেডি বলছেন, তিনি আশা করছেন, এই সিদ্ধান্তের পর মানুষের আস্থা আরও বাড়বে।
বিবিস লিখেছে, এই পদক্ষেপ কেনেডির শপথবাক্যের সময় দেওয়া আশ্বাসের ঠিক বিপরীত। লুইজিয়ানার রিপাবলিকান সিনেটর ও চিকিৎসক বিল ক্যাসিডি বলেছেন, এসিআইপিতে কোনো পরিবর্তন না করার আশ্বাস তাঁকে দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র স ব স থ যমন ত র বরখ স ত কম ট র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
কার্যালয় ভবনে হামলা: অক্ষত আছেন রেডিও তেহরানের ৮ বাংলাদেশি
ইরানের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান ব্রডকাস্টিং (আইআরআইবি) কার্যালয় ভবনে গতকাল সোমবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই ভবনে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও রেডিও তেহরানেরও দপ্তর রয়েছে। সেখানে বাংলা বিভাগে কাজ করেন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি। ওই হামলায় তিনজন নিহত ও কয়েকজন আহত হলেও ঘটনার সময় উপস্থিত বাংলাদেশের আটজন নাগরিক অক্ষত রয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী এ তথ্য জানান। ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা বিষয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব জানান, আইআরআইবি কার্যালয় ভবনে হামলার সময় ইরানের রেডিও (রেডিও তেহরান) দপ্তরে আট বাংলাদেশি ছিলেন। তবে সৌভাগ্যবশত তাঁদের কোনো ক্ষতি হয়নি। তাঁরা ভালো আছেন। তাঁরা রেডিওর বাংলা বিভাগে কাজ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সব মিলিয়ে এখন দুই হাজারের বেশি বাংলাদেশি ইরানে অবস্থান করছেন। এর মধ্যে দেশটিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতসহ দূতাবাসে ২ জন কর্মকর্তা, ৫ জন কর্মচারী এবং তাঁদের পরিবারসহ প্রায় ৪০ জন রয়েছেন। রেডিও তেহরানের ৮ জন বাংলাদেশি ও তাঁদের পরিবারসহ রয়েছেন ২৭ জন। তেহরানে শিক্ষার্থী রয়েছেন ১০ থেকে ১২ জন। পেশাজীবী আছেন প্রায় ১০ জন। সব মিলিয়ে তেহরানে ৪০০ বাংলাদেশি রয়েছেন।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরানের অন্যান্য জায়গায় প্রায় ৬০০ বাংলাদেশি আছেন, তাঁরা ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে সে দেশে বসবাস করছেন। সেখানে বিয়ে করে তাঁরা স্থায়ী হয়েছেন। প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন। এর বাইরে আরও প্রায় ৮০০ বাংলাদেশি ১০ বছরের বেশি সময় ধরে অবৈধভাবে ইরানে বিভিন্ন সেক্টরে চাকরি করছেন। এ ছাড়া মানব পাচারের ট্রানজিট দেশ হিসেবে ইরানে সব সময় ৩০০ থেকে ৫০০ বাংলাদেশি অবস্থান করেন অন্য দেশে পাচার হওয়ার অপেক্ষায়।