দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলীয় ইস্টার্ন কেপ প্রদেশে ভারী বৃষ্টি ও ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন স্কুলশিক্ষার্থী রয়েছে। বুধবার (১১ জুন) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী অস্কার মাবুইয়ানে বুধবার সকালে জানিয়েছেন, প্রতি ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ।

এর আগে মথাথা শহরে গত মঙ্গলবার সকালে একটি সেতু পার হওয়ার সময় একটি বাস স্রোতে ভেসে যায়। এই ঘটনায় বাসের চালক, কন্ডাক্টর ও চার শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছে আরও চার শিশু। 

আরো পড়ুন:

হঠাৎ বন্যা, পানির নিচে চলনবিলের ১১৩ হেক্টর জমির ধান  

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বড়লেখা প্লাবিত, পানিবন্দি লাখ মানুষ

স্থানীয় টিভি চ্যানেল নিউজরুম আফ্রিকা-কে একজন কর্মকর্তা বলেন, আটটি মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তাদের মধ্যে বাসচালকও রয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এসএবিসি জানিয়েছে, তিন শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। 

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাসটিতে মোট ১৫ জন ছিলেন, যাদের মধ্যে ১১ জনই স্কুলশিক্ষার্থী।

সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা শোক প্রকাশ করে বলেছেন, ‘যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা।

বুধবার সকালে প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী মাবুইয়ানে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং মথাতা শহরের কাছে ডেকোলিগনি গ্রামে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি বলেন, শত শত মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে অস্থায়ী আশ্রয়ে রাত কাটাচ্ছেন।

মাবুইয়ানে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশংসা করে বলেন, “বন্যা শুরু হতেই যারা প্রতিবেশীদের সতর্ক করেছে ও নিখোঁজদের খোঁজে সহায়তা করছেন, তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।”

তিনি আরো জানান, ইস্টার্ন কেপের ৫৮টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বিশেষ করে ওআর টাম্বো, আমাথোলি ও আলফ্রেড নজো জেলার তিনটি এলাকায়।

ইস্টার্ন কেপের পাশের প্রদেশ কোয়াজুলু-নাটালেও দুর্যোগ দেখা দিয়েছে। সেখানে ৬৮টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখনো কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। 

বৃষ্টি ও তুষারঝড়ের পাশাপাশি প্রবল বাতাসে গত মঙ্গলবার থেকে প্রায় ৫ লাখ বাড়ি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ সংস্থা এসকম জানিয়েছে, বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় চালুর চেষ্টা চলছে।

বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রকৃতিতে। দিনকে দিন ওই অঞ্চলে বন্যার তীব্রতা ও ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতার আরেকটি নজির ছিল ২০২২ সালে। সেবার ইস্ট কোস্টে ঝড়ে প্রায় চারশ মানুষ মারা যান। এছাড়া ঘরবাড়ি খুইয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বন য

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনের দিন অমোচনীয় কালি সরবরাহ না হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে: ছাত্রদল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে অমোচনীয় কালি সরবরাহ না করলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতারা। এ ছাড়া এমফিল কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ছাত্রদলকে ভোট প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে রাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর আচরণবিধিবিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় ছাত্রদলের নেতারা এমন মন্তব্য করেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা একচুল ছাড় দেব না। আমি প্রতিজ্ঞা করছি, যদি কোনো ধরনের অনিয়ম হয়— কোনো ছাড় হবে না। নির্বাচনের সময় অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে হবে। যদি নির্বাচন কমিশন অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে।’

ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ‘ম্যানুয়ালি’ ভোট গণনার দাবি জানিয়ে শামসুল আরেফিন বলেন, ‘কত ব্যালট ছাপানো হলো, কত ভোট গণনা হলো, কত ব্যালট নষ্ট হলো—এসব তথ্য স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকাশ করতে হবে। কারণ, আমরা ডাকসুতে ব্যালট কেলেঙ্কারির অভিযোগ সম্পর্কে জানি।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ বিধিমালায় এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ছাত্রদলকে ‘মাইনাস’ করার একটি মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জকসু গঠন ও পরিচালনা বিধিমালায় বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর নিয়মিত শিক্ষার্থী ভোটার কিংবা প্রার্থী ছাড়া কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। অন্যদিকে এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থীর যোগ্যতা না দিয়ে আমাদের মাইনাস করা ছিল মাস্টারপ্ল্যান—আর সেই মাস্টারপ্ল্যান সফল হয়েছে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম, প্রক্টর, সিন্ডিকেটের সদস্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর নির্বাচন কমিশনার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ