বাংলাদেশের ফুটবলের সাফল্য-ব্যর্থতার অনেক গল্পে জড়িয়ে আছেন লুডভিক ডি ক্রুইফ। ডাচ ফুটবলের ফ্লেভার ছড়িয়ে দিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলে। ২০১৫ সালে তাঁর হাত ধরে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবলে রানার্সআপ হয়েছিল লাল-সবুজের দলটি। সেই টুর্নামেন্টের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ অধ্যায়ের ইতি ঘটে নেদারল্যান্ডসের এ কোচের। হঠাৎ করে আবার আলোচনায় ক্রুইফ। ৫৫ বছর বয়সী এ ডাচম্যান আবার বাংলাদেশের ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন বলে নিশ্চিত করেছে বাফুফের একটি সূত্র।
সেই সময় ক্রুইফের সহকারী রেনে কোস্টারের নামও উঠে এসেছে আলোচনায়। আলোচনা ফলপ্রসূ হলে ক্রুইফকে দেখা যাবে বাফুফের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পদে। এ পদে দায়িত্ব পালন করা সাইফুল বারী টিটুর সঙ্গে এ মাসেই চুক্তি শেষ হচ্ছে বাফুফের। আর রেনে কোস্টারকে আনা হচ্ছে বাফুফে এলিট একাডেমির দায়িত্ব দিতে।
ডি ক্রুইফ যে সময় বাংলাদেশের ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, সেই সময় বাফুফেতে সহসভাপতি ছিলেন তাবিথ আউয়াল। জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্যতম সদস্যও ছিলেন তিনি। তাই ক্রুইফের সঙ্গে তাবিথের আগে থেকেই সম্পর্ক আছে। সে হিসেবে সাবেক কোচের ব্যাপারে ইতিবাচক এ বাফুফে সভাপতি। যদিও ক্রুইফের বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করেননি তাবিথ। তবে বাফুফে থেকে আলোচনার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ক্রুইফ, ‘আমি আলোচনা সম্পর্কে (বাফুফের সঙ্গে) অবগত। এর বাইরে কিছু বলতে চাই না।’
২০১৩ সালে প্রথমবার জাতীয় দলের কোচ হিসেবে বাংলাদেশে আসেন ক্রুইফ। তাঁর সময়ে প্রথম প্রবাসী ফুটবলার হিসেবে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়িয়েছিলেন জামাল ভূঁইয়া। সেই সময় তাঁর প্রেসিং ফুটবল বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিল। সে সময়ে ফুটবলার ডিসিপ্লিন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। নানা কারণে ২০১৪ সালে ক্রুইফকে সরিয়ে দেয় কাজী সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে বাফুফের তখনকার কমিটি। পরের বছরই বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের জন্য আবার নিয়ে আসা হয় ক্রুইফকে। সবাই ধারণা করেছিলেন হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরাকে সরিয়ে হয়তো ক্রুইফকে দেওয়া হবে জাতীয় দলের দায়িত্ব। বাফুফে সূত্রে জানা গেছে, তেমন সম্ভাবনা নেই।
এলিট একাডেমি নিয়ে বাফুফের অনেক বড় স্বপ্ন। ভবিষ্যৎ ফুটবলার উঠিয়ে আনার জন্য এই একাডেমির দিকে জোর দিতে চাইছে ফেডারেশন। রেনে কোস্টারের সময়ে বাংলাদেশ সাফল্য পেয়েছিল বয়সভিত্তিক ফুটবলে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ দলের সাবেক সহকারী কোচ রেনে কোস্টারকে একাডেমির দায়িত্বে আনতে চাচ্ছে তারা। বাংলাদেশে কাজ করার সময় বকেয়া বেতন নিয়ে ফিফার দ্বারস্থ হয়েছিলেন কোস্টার। পরে বড় অঙ্কের জরিমানা দিতে হয়েছে সালাউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিটিকে। আর বাংলাদেশ অধ্যায়ের ইতি টানলেও গত ১০ বছরে বিভিন্ন জায়গায় কোচিংয়ে যুক্ত ছিলেন কোস্টার।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক র ইফক ফ টবল র এক ড ম
এছাড়াও পড়ুন:
এক মাসে গড়াল আন্দোলন, ‘ভালো খবরের আশায়’ সচিবালয়ের কর্মচারীরা
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে আজ সোমবার দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। এ নিয়ে তাঁদের এ আন্দোলন এক মাসে গড়াল।
অধ্যাদেশকে ‘কালো আইন’ আখ্যা দিয়ে বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আন্দোলনকারী কর্মচারীরা। এ বিষয়ে ‘ভালো খবর আসবে’ বলে আশা করছেন তাঁরা।
সচিবালয় রাষ্ট্রের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর (কেপিআই) একটি। প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এই সচিবালয় থেকেই প্রধানত সারা দেশে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তগুলো যায়। এমন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ জায়গার ভেতরে এত দিন ধরে কর্মচারীরা আন্দোলন করলেও এখনো এ বিষয়ে কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি সরকার। অথচ সরকারের দুজন উপদেষ্টাই বলেছেন, এই অধ্যাদেশটি কিছু ক্ষেত্রে অপব্যবহারের আশঙ্কা আছে।
অধ্যাদেশ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যালোচনায় সরকার একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ। এ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তায় আছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব। সেই কমিটি কাজ করছে। কিছুদিন আগে এ কমিটির প্রধান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, তাঁর কাছে মনে হয়েছে, অবশ্যই কিছু কিছু জায়গায় অধ্যাদেশটির পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে।
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিলের দাবিতে গত ২৪ মে থেকে আন্দোলন করছেন সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। আন্দোলন চলার মধ্যেই ২৫ মে অধ্যাদেশটি জারি করে সরকার। এর পর থেকে বিক্ষোভ, কর্মবিরতি ও উপদেষ্টাদের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার মতো কর্মসূচি পালন করছেন কর্মচারীরা। আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের ডাকে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি শেষে অফিস খোলার এক দিন পর ১৬ জুন থেকে আন্দোলনকারী কর্মচারীরা আবার সচিবালয়ের ভেতর টানা বিক্ষোভ করে আসছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে আন্দোলনকারীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থিত সচিবালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে অবস্থান নিয়ে অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে বক্তব্য দেন।
‘ভালো খবর আসবে’ এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো চেয়ারম্যান বাদিউল কবীর। তিনি জানান, আগামীকাল মঙ্গলবার গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করবেন তাঁরা। সেখানে আরও বক্তব্য দেন ফোরামের আরেক কো চেয়ারম্যান মুহা. নুরুল ইসলাম, কো মহাসচিব নজরুল ইসলাম প্রমুখ।