৫০০ টাকায় কাজ শুরু করা কপিল শর্মা এখন শো প্রতি নেন ৫ কোটি
Published: 24th, June 2025 GMT
একসময় ৫০০ টাকায় কাজ করতেন তিনি। আজ সেই কপিল শর্মাই একটি শোর জন্য পারিশ্রমিক নিচ্ছেন ৫ কোটি টাকা! গোটা একটা সিজনে তাঁর আয় ৬৫ কোটি, আর তিনটি সিজন মিলিয়ে ১৯৫ কোটি টাকা! এমন অঙ্ক শুনলে অবাক হতে হয়। বলিউডের বহু নামজাদা তারকাও যার পাশে টাকার হিসাবে যেন একেবারেই ফিকে।
পাঞ্জাবের এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম কপিল শর্মার। শৈশবেই হৃদয়ে গেঁথে গিয়েছিল গান,গায়ক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন মুম্বাইয়ে। কিন্তু ভাগ্যের পাতায় লেখা ছিল ভিন্ন গল্প। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গান নয়, হাসি দিয়েই জায়গা করে নেন কোটি দর্শকের হৃদয়ে।
‘কমেডি নাইটস উইথ কপিল’ আর পরে ‘দ্য কপিল শর্মা শো’-এর হাত ধরে বদলে দেন ভারতের কমেডি শো-এর ধারা। ঘরোয়া হাসি, সহজ অথচ তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গ, আর সাবলীল গল্প বলার ভঙ্গি কপিলকে পৌঁছে দেয় অনন্য উচ্চতায়। দর্শকের চোখে নয়, হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
বর্তমানে ওটিটিতেও কপিলের দাপট একই রকম। ‘দ্য কপিল শর্মা শো’-এর তৃতীয় সিজনের সম্প্রচার শুরু হয়েছে ২১ জুন থেকে। প্রতিটি পর্বের জন্য তাঁর পারিশ্রমিক ৫ কোটি টাকা। ১৩টি পর্ব মানে ৬৫ কোটি টাকা আয়। আর তিনটি সিজনের মোট পারিশ্রমিক দাঁড়ায় ১৯৫ কোটি! শুধুমাত্র হাসির জাদুতে এ যেন এক অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলার গল্প।
এটা শুধু কপিল শর্মার সাফল্যের হিসাব নয়,এটা এক সংগ্রামী মানুষের লড়াইয়ের দলিল। যে মানুষটা জীবনের প্রতিকূলতা ভুলে মানুষকে হাসানোর দায়িত্ব নিয়েছে, সেই মানুষটা আজ শুধু একজন শিল্পী নন, তিনি নিজেই একটা প্রতিষ্ঠান।
কপিল শর্মার গল্পটা শুধু টাকা বা খ্যাতির নয়। এটা আত্মবিশ্বাস, অধ্যবসায় আর হার না মানা মনোবলের জীবন্ত উদাহরণ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সুরা নাস: বাংলা অর্থসহ এবং সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা
সুরা নাস কুরআনের ১১৪তম এবং শেষ সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ বলে মাক্কী সুরা নামে পরিচিত। এতে মোট ৬টি আয়াত রয়েছে। এই সুরাটি মানুষকে শয়তানের প্রতারণা ও মন্দ প্রভাব থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে শেখায়। এটি ‘মু’আওয়িযাতাইন’ (দুটি আশ্রয়প্রার্থী সুরা: সুরা ফালাক ও সুরা নাস)–এর একটি।
সুরা নাসের বাংলা উচ্চারণ, অর্থ এবং সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা আলোচনা করা হলো।
বাংলা উচ্চারণ ও অর্থউচ্চারণ: কুল আউজু বিরাব্বিন নাস। মালিকিন নাস। ইলাহিন নাস। মিন শাররিল ওয়াসওয়াসিল খান্নাস। আল্লাজি ইউওয়াসউইসু ফি সুদুরিন নাস। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান নাস।
অর্থ: বলো, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করি মানুষের রবের কাছে। মানুষের অধিপতির কাছে। মানুষের উপাস্যের কাছে। মন্দ প্রবৃত্তির কুমন্ত্রণা থেকে, যে পিছনে লুকায়। যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে। জিন ও মানুষের মধ্য থেকে।
আরও পড়ুনসুরা ফাতিহার বাংলা উচ্চারণ অর্থ ও ফজিলত২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪সুরা নাসের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসুরা নাস মানুষকে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে শিক্ষা দেয়। এই সুরায় আল্লাহকে তিনটি গুণে সম্বোধন করা হয়েছে:
রব্বিন নাস (মানুষের রব): আল্লাহ মানুষের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা।
মালিকিন নাস (মানুষের অধিপতি): তিনি মানুষের উপর সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী।
ইলাহিন নাস (মানুষের উপাস্য): তিনিই একমাত্র উপাসনার যোগ্য।
সুরাটি শয়তানের মন্দ প্রভাব থেকে সুরক্ষা প্রার্থনায় জোর দেয়। কেননা, শয়তান ‘ওয়াসওয়াস’ (কুমন্ত্রণা) দেয় এবং ‘খান্নাস’ (পিছনে লুকিয়ে থাকে)। এই কুমন্ত্রণা জিন ও মানুষ উভয়ের থেকে আসতে পারে, যা মানুষের অন্তরে মন্দ চিন্তা ও পাপের প্রতি প্ররোচিত করে।
হাদিসে আছে, মহানবী (সা.) প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক এবং সুরা নাস পড়তেন, হাতে ফুঁ দিয়ে শরীরে মুছে নিতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০১৭)
বোঝা যায়, সুরা নাস পড়া শয়তানের প্রভাব ও অন্যান্য ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দেয়।
আরও পড়ুনসুরা কাহাফের ৪ কাহিনিতে সফলতার ৪ শিক্ষা২০ জুলাই ২০২৫সুরা নাসের ফজিলতসুরা নাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত আছে, নবীজি (সা.)–কে যখন জাদু করা হয়, তখন সুরা ফালাক ও সুরা নাস নাজিল হয় এবং তিনি এই দুই সুরা পড়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন এবং আরোগ্য লাভ করেন। (সুনান নাসাঈ, হাদিস: ৫৪৩৭)
এই সুরা পড়া শয়তানের কুমন্ত্রণা, জাদু, হিংসা এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। তাফসিরে ইবনে কাসিরে বলা হয়েছে, “সুরা নাস মানুষকে শয়তানের মানসিক ও আধ্যাত্মিক আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।” (তাফসির ইবনে কাসির, পৃষ্ঠা: ৮/৫৩৬, দারুস সালাম প্রকাশনী, ২০০০)।
সুরা নাস একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ সুরা, যা মানুষকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনার মাধ্যমে শয়তানের মন্দ প্রভাব থেকে রক্ষা করে। আধুনিক জীবনে, যখন আমরা প্রতিনিয়ত নানা প্রলোভন ও মানসিক চাপের মুখোমুখি হই, তখন এই সুরা আমাদের ঈমানকে দৃঢ় করতে পারে। এই সুরা নিয়মিত পাঠ, বিশেষ করে সকাল-সন্ধ্যায় এবং ঘুমানোর আগে, মুমিনের জীবনে শান্তি ও সুরক্ষা নিয়ে আসে।
আরও পড়ুনসুরা আর-রহমান: সারকথা ও ফজিলত০৮ আগস্ট ২০২৫