৪৪তম বিসিএসে ক্যাডার পদ বৃদ্ধির দাবি ফলপ্রত্যাশীদের
Published: 24th, June 2025 GMT
নতুন বাংলাদেশে নানা পরিবর্তনের অঙ্গীকার থাকলেও ৪৪তম বিসিএস প্রার্থীরা এখনো রয়ে গেছেন দীর্ঘ অপেক্ষা আর হতাশার বেড়াজালে। ৪৪তম বিসিএসের দীর্ঘতম প্রক্রিয়া প্রায় ৩ বছর সাত মাস পর শেষ হয়েছে।
তবে চূড়ান্ত ফলাফল এখনো না এলেও ফলপ্রত্যাশীদের মুখে নেই আশার আলো, বরং রয়েছে গভীর হতাশা আর আহাজারি।
সরকারি তথ্যমতে, ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর প্রকাশিত হয় ৪৪তম বিসিএস এর বিজ্ঞপ্তি। যেখানে প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ৭১০টি ক্যাডার পদে নিয়োগের কথা বলা হয়। তবে প্রতি বিসিএসের সাধারণ রেওয়াজ অনুযায়ী, চূড়ান্ত ফলাফলের আগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে পদ সংখ্যা বাড়ানো হয়ে থাকে।
দৃষ্টান্তস্বরূপ, ৩৭তম বিসিএসে ১১২টি, ৩৮তম বিসিএসে ৪০০টি, ৪০তম বিসিএসে ৪৬৩টি, ৪১তম বিসিএসে ৫২০টি এবং ৪৩তম বিসিএসে ৪০৪টি ক্যাডার পদ চূড়ান্ত ফলাফলের আগে বৃদ্ধি করা হয়েছিল। এরই প্রেক্ষাপটে নায্যতা নিশ্চিত করতে ও বৈষম্য নিরসনে ৪৪তম বিসিএসে সরকারের উচিত অতিরিক্ত ক্যাডার পদ দ্রত বৃদ্ধি করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকাল সাড়ে ৪টায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) সাংবাদিক সমিতির কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ক্যাডার সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি তুলে ধরেন ৪৪তম বিসিএসের ফলপ্রত্যাশীরা।
৪৪তম বিসিএসের ফলপ্রত্যাশীরা অভিযোগ করে বলেন, পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য মতে ৪৪তম বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে (যেমন- ট্যাক্স, পরিবার পরিকল্পনা, কৃষি, স্বাস্থ্য, প্রাণিসম্পদ) মোট ৩৮২টি অতিরিক্ত পদ বৃদ্ধির প্রস্তাবনা থাকলেও তা শেষ পর্যন্ত ৪৭তম বিসিএসে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এতে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছে ৪৪তম বিসিএস প্রার্থীরা। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও তাদের প্রতি সরকার বিমাতাসুলভ আচরণ করছে।
তারা আরো বলেন, ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষাও দুই দফায় সম্পন্ন হয়েছে। একটি আগের স্বৈরাচার সরকারের আমলে এবং আরেকটি নতুন সরকারের অধীনে। তখন অনেকেই আশ্বস্ত হয়েছিলেন যে, নতুন সরকার বৈষম্য দূর করে একটি ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়বে। কিন্তু বাস্তবে ৪৪তম বিসিএস ফলপ্রার্থীরা আগের থেকেও বেশি বঞ্ছিত হয়েছে।
ফলপ্রত্যাশী প্রার্থীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) বরাত দিয়ে বলেন, ২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে কৃষি ক্যাডারের জন্য ১১০টি শূন্য পদের সঙ্গে অতিরিক্ত ৫০টি পদ বৃদ্ধি করে ১৬০টি পদে নিয়োগের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু বিজ্ঞপ্তিটি প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে নতুন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ে কোনো চিঠি না পাঠালে, কৃষি মন্ত্রণালয়ে জমে থাকা ১১৫টি ক্যাডার পদ বৃদ্ধির প্রক্রিয়াও আইনি জটিলতায় আটকে আছে। একই সমস্যা দেখা দিয়েছে অন্যান্য মন্ত্রণালয়েও।
সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে দাবি তুলে ৪৪তম বিসিএসের ফলপ্রত্যাশীরা বলেন, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) প্রথমবারের মতো ২০২৫ সালে তিনটি মুক্ত আলোচনার আয়োজন করে। এতে অংশগ্রহণকারী অনেক প্রার্থী নতুন বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পেয়ে আশাবাদী হয়েছিলেন যে, আর কোনো প্রার্থী বৈষম্যের শিকার হবেন না। কিন্তু ৪৪তম বিসিএস-এর প্রার্থীদের অভিজ্ঞতা সেই প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এই প্রেক্ষাপটে আমাদের জোরালো দাবি, সরকারের উচিত ফল প্রকাশের আগে ৪৪তম বিসিএসে অতিরিক্ত ক্যাডার পদ দ্রুত বৃদ্ধি করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা। নইলে ‘নতুন বাংলাদেশ’ এর ধারণাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে।
ঢাকা/লিখন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ড় ন ত ফল ফল ক য ড র পদ পদ ব দ ধ সরক র র প রক শ ফলপ র
এছাড়াও পড়ুন:
৪৪তম বিসিএসের সম্পূরক ফল প্রকাশ, মনোনীত ১৬৮১ প্রার্থী
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ৪৪তম বিসিএসের সম্পূরক ফল প্রকাশ করেছে। নতুন এই ফলে ১ হাজার ৭১০টি শূন্য পদের বিপরীতে ১ হাজার ৬৮১ জন প্রার্থীকে বিভিন্ন ক্যাডারে সাময়িকভাবে (প্রোভিশনালি) মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
44 BCS_final.pdfডাউনলোডআরও পড়ুনসোনালী-অগ্রণী-কৃষি-রূপালীসহ ১১ ব্যাংক নেবে সিনিয়র অফিসার, পদ ১০১৭০৮ অক্টোবর ২০২৫পিএসসির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৪৪তম বিসিএসের ফল গত ৩০ জুন ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত হয়। পরে কমিশনের নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ওই ফলাফলে মনোনীত ৩০৩ জন প্রার্থী লিখিতভাবে ঘোষণা দেন যে তাঁরা তাঁদের প্রাপ্ত ক্যাডার পদে বা পছন্দক্রমের নিম্নতর কোনো ক্যাডারে যোগদান করবেন না। এই পরিস্থিতিতে পিএসসি ২৬০ জন প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করা থেকে বিরত থাকে। একই সঙ্গে ৪৩ জন প্রার্থীকে তাঁদের বর্তমান ক্যাডারের চেয়ে উচ্চতর পছন্দক্রমের পদে সাময়িক মনোনয়ন প্রদান করা হয়। উদ্ভূত শূন্য পদগুলো পূরণে মেধাক্রম ও প্রচলিত কোটা-বিধান অনুসরণ করে কমিশন নতুনভাবে সম্পূরক ফল প্রস্তুত করে। এর ভিত্তিতে ৪৪তম বিসিএসের বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৮১ জনকে সাময়িকভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট ক্যাডারে পদসংশ্লিষ্ট যোগ্য প্রার্থী না থাকায় মোট ১ হাজার ৭১০টি বিজ্ঞাপিত পদের মধ্যে ২৯টি পদ আপাতত শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া বিএড বা এমএড সনদ না থাকায় পাঁচজন প্রার্থীর ‘টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রভাষক’ পদে পূর্বে দেওয়া মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন—রেজিস্ট্রেশন নম্বর ১১১৪৫০৯৫, ১১০৬৪৮০৬, ১১০৮৮০৯৮, ১১০৭৫৭৩৮ ও ১৩০০৫৮৬৯।
আরও পড়ুনকাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটে বড় নিয়োগ, পদসংখ্যা ৯৯২৫ অক্টোবর ২০২৫