পশ্চিম এশিয়ার দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাত ও শত্রুতা বন্ধে কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়ার জন্য কেন্দ্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বলেন বিশ্বের অনেক জায়গায় যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এই ধরণের ঘটনায় বায়ু ও পানি দূষণের মাত্রা বাড়ছে। আমাদের এটি বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, পররাষ্ট্র বিষয় ভারত সরকারের আওতাধীন। কূটনৈতিকভাবে, শান্তিপূর্ণভাবে, আমাদের অবশ্যই উদ্যোগ নিতে হবে যাতে যুদ্ধ বন্ধ হয়। মমতা বলেন, বৈদেশিক বিষয় এবং কূটনৈতিক বিষয়ে কথা বলার আমার কোনো অধিকার নেই। বিশ্বের একজন উদ্বিগ্ন নাগরিক হিসেবে এটি আমার ব্যক্তিগত অভিমত।

ভারতের ঐতিহাসিক কূটনৈতিক ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করে মমতা ব্যানার্জি বলেন, অতীতে ভারত জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল। ভারতই প্রথম দেশ যারা প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনকে (পিএলও) স্বীকৃতি দেয়। সেসময় ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাত আমাদের দেশে এসেছিলেন। রাজীব গান্ধী যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন তিনি আমাকে এবং কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মাকে অ্যাঙ্গোলায় পাঠান। আমরা সেখানে সাহায্য করেছি।

এর পাশাপাশি কেন্দ্রের সরকারকে নিশানা করে বাংলা ভাষায় কথা বলা পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকদের যেভাবে বাংলাদেশি তকমা লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে তারও সমালোচনা করেন মমতা ব্যানার্জি।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলা ভাষায় কথা বললেই বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে বাংলার নাগরিকদের আটকে রাখা হচ্ছে। ভারতীয় নাগরিকদের সমস্ত পরিচয় পত্র থাকা সত্ত্বেও, দেখানো সত্বেও, পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটছে। বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি তকমা লাগিয়ে দিয়ে তাকে আটকে রাখা হচ্ছে, তাদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। বাংলাদেশে পুশ করা হচ্ছে। এরা বাংলাদেশি নয়, এরা পশ্চিমবঙ্গের নাগরিক। আজকেও আমার কাছে খবর এসেছে যে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ শ্রমিককে রাজস্থানের একটি ভবনে আটকে রাখা হয়েছে। অন্য অনেক রাজ্যেও ঠিক একই ঘটনা ঘটেছে। সেখান থেকে আমরা তাদের নিয়ে এসেছি। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার।

মমতা ব্যানার্জি প্রশ্ন রেখে বলেন, বাংলা ভাষায় কথা বলাটা কি অপরাধ? বাংলা ভাষায় যারা কথা বলে তারা এই বিজেপি সরকারের কাছে কি অপরাধ করেছে? স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন ভাষায় কথা বলতেন? এরা কি সব ভুলে গেছে? বাংলা দেখলে শুধু অত্যাচার করতে হবে? তাহলে বলে দিন যে, বাংলা নিষিদ্ধ। বাংলাদেশ বাংলা ভাষায় কথা বলে। বাংলাদেশিরা আলাদা।

গত সোমবার নবান্নে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ'র সঙ্গে মমতার বৈঠকের বিষয় তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা কোনো বেআইনি কাজ করি না। গতকাল বাংলাদেশের হাইকমিশনার আমার কাছে এসেছিলেন, আমি প্রথমেই তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে ভারত সরকারের অনুমতি আছে কিনা? এবং ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ক্লিয়ারেন্স দেওয়ার পরেই তারা আমার সাথে দেখা করতে এসেছিলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক টন ত ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

এক এনামুল সবাইকে ‘বোকা’ বানাচ্ছেন

ম্যাচের আগের দিন সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিয়ে উইকেট দেখা বাংলাদেশের ক্রিকেটারটি কে জানেন? এনামুল হক।

কোচ, অধিনায়কেরাও উইকেট দেখেন। কিন্তু এনামুল দেখেন অখণ্ড মনোযোগে, কখনো কখনো উইকেটের পাশে বসে আঙুল দিয়ে মাটি চেপে চেপে। বাংলাদেশের ফটোসাংবাদিকদের সংগ্রহে এ রকম অনেক ছবি পাবেন, অধিনায়ক উইকেট দেখছেন, পাশে আছেন এনামুল।

কেন এনামুল এত মনোযোগ দিয়ে উইকেট দেখেন? ভাববেন না ছবির ফ্রেমে থাকার জন্য। উইকেট দেখে-বুঝে আসলে পুরো ম্যাচটাকে তিনি আগ থেকেই চোখের সামনে ফুটিয়ে তুলতে চান। অগ্রিম বুঝে নিতে চান, এই উইকেটে কী কী ঘটনা ঘটতে পারে। ঘরোয়া ক্রিকেটের ড্রেসিংরুমে এনামুলের ক্রিকেটপ্রজ্ঞা ও অনুমানশক্তি তো এমনি এমনি তৈরি হয়নি। এটি অনেক দিনের পরিশ্রমের ফসল।

এনামুল আরেকটা কাজ খুব ভালো পারেন—মানুষকে ‘বোকা’ বানাতে। চলতি শ্রীলঙ্কা সফরে গলের পর কলম্বো টেস্টেও সেটি তিনি দেখিয়ে যাচ্ছেন, যা দলের বেশ কাজেও লাগছে।

খেয়াল করে দেখেছেন নিশ্চয়ই, এনামুলের ব্যাটিং দেখাটা এখন বড়ই টেনশনের। প্রতি বলেই মনে হয়, এই বুঝি তিনি আউট হয়ে যাচ্ছেন! টেস্ট ম্যাচের শুরু থেকেই এমন ব্যাটিং দেখে ড্রেসিংরুমে দলের অন্য ব্যাটসম্যানদেরও ভড়কে যাওয়ার কথা। খুব কি ভালো বোলিং করছেন বোলাররা? নাকি উইকেট ‘আনপ্লেয়েবল’!

তবে এভাবে না ভেবে একটু উল্টো করে ভাবলে দেখবেন, এনামুল আসলে বোকা বানাচ্ছেন শ্রীলঙ্কার বোলার-ফিল্ডারদের। সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে আজই যেমন মুখোমুখি হওয়া দশম বলে আউট হওয়ার আগে স্লিপে দুবার ক্যাচের মতো তুলে ফিল্ডাররা জায়গামতো দাঁড়িয়েছেন কি না, দেখে নিলেন।

আরও পড়ুনএনামুল মুক্তি নিলেন, মুক্তি দিলেন৪ ঘণ্টা আগে

এনামুলের যে ব্যাটিং দেখে দৃশ্যত আপনার ‘সংগ্রামী’ মনে হচ্ছে, সেটি কিন্তু গোপনে দলের উপকারই করছে। শ্রীলঙ্কান বোলারদের মিছে আত্মবিশ্বাসে ভুগিয়ে সহজ করছে সতীর্থ ব্যাটসম্যানদের কাজ। সঙ্গে দর্শকেরাও বলে বলে পাচ্ছেন অনিশ্চিত ক্রিকেটের ভরপুর রোমাঞ্চ। টেস্ট ক্রিকেটে যখন এনামুলের ব্যাটিংয়ের মতো প্রতি বলের নাটকীয়তা চলে আসে, এর চেয়ে বিনোদন আর কী হতে পারে!

বিশ্বাস না হলে গল টেস্টের কথা মনে করে দেখুন। সেখানেও কি শ্রীলঙ্কান বোলার-ফিল্ডারদের কম ভুগিয়েছেন তিনি!

এনামুলকে দ্রুত আউট করে লঙ্কানদের মধ্যে যেন মেকি আত্মবিশ্বাস জন্মে

সম্পর্কিত নিবন্ধ