খুলনাগামী আন্তনগর ‘রূপসা এক্সপ্রেস’ ট্রেনের এক যাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ট্রেনের দায়িত্বরত ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষকের (টিটিই) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী যাত্রী ওই ট্রেনের টিটিই রায়হান কবিরের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সৈয়দপুর রেলওয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী যাত্রীর নাম মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী। তিনি দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার মুকুন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং আরআরপি অ্যাগ্রো ফার্মের নীলফামারীর সৈয়দপুর কার্যালয়ের উৎপাদন কর্মকর্তা।

ফজলে রাব্বী জানান, দাপ্তরিক কাজে গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে পার্বতীপুর স্টেশন থেকে ফুলবাড়ী যাচ্ছিলেন। স্টেশনে পৌঁছামাত্রই ট্রেন এসে পড়ায় ভেতরে দ্রুত উঠে পড়েন। ভেতরে টিকিট কেটে নেওয়ার সময় টিটিই রায়হান কবির তাঁর কাছে অতিরিক্ত ভাড়া চান। টিটিই পার্বতীপুর থেকে ফুলবাড়ী স্টেশনের ভাড়া হিসেবে ২০০ টাকা দাবি করলে তাঁদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে রাব্বীকে টিটিই রায়হান টেনেহিঁচড়ে এসি বগির ফাঁকা কেবিনে নিয়ে চড়থাপ্পড় ও লাথি মারেন। শারীরিক নির্যাতনের এক পর্যায়ে তাঁকে গন্তব্য স্টেশনে নামতে দেননি। পুলিশের ভয়ভীতি দেখিয়ে তিনি পার্বতীপুর-ফুলবাড়ী পর্যন্ত ১০০ টাকা বাড়তি ভাড়া আদায় করেন। পরে রেলওয়ে পুলিশের সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করেন এবং রেলওয়ে থানায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে পরবর্তী স্টেশন বিরামপুরে নামিয়ে দেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে টিটিই রায়হান কবির বলেন, রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনে কোনো যাত্রীর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেনি। তাঁর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মিথ্যা।

সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদ-উন নবী বলেন, রূপসা ট্রেনের ওই যাত্রী আজ দুপুরের পর থানায় এসে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে ঘটনাটি পার্বতীপুর রেলওয়ে থানার আওতায় হওয়ায় তাঁকে সংশ্লিষ্ট থানায় এজাহার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র লওয়

এছাড়াও পড়ুন:

অনলাইনে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে ভেজাল বিদেশি প্রসাধনী বিক্রি, গ্রেপ্তার ১

বিদেশি প্রসাধনীর নামে পুরান ঢাকার লালবাগ ও চকবাজারে নকল এবং ভেজাল প্রসাধনী অনলাইনে পাইকারি-খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে আসছিল একটি চক্র। গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঢাকার উপকণ্ঠ কেরানীগঞ্জের পুরাতন ভাড়ালিয়ায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৯ ধরনের নকল ও ভেজাল প্রসাধনী জব্দ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সিআইডির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপন খবরের ভিত্তিতে সিআইডির একটি বিশেষ দল ভেজাল প্রসাধনী সামগ্রী কারখানায় পণ্য উৎপাদন ও মোড়কজাত করার সময় মো. হৃদয় হোসেন (২৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোট ৯ ধরনের ১ হাজার ৭০ প্যাকেট বিভিন্ন রকমের নকল ও ভেজাল প্রসাধনী এবং ২০০টি খালি মোড়ক জব্দ করা হয়। তাঁর বাড়ি কেরানীগঞ্জের আঁটিবাজার এলাকার পুরাতন ভাড়ালিয়ায়। হৃদয়ের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি ভেজাল প্রসাধনী ও মোড়ক উদ্ধার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে।

সিআইডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয়ভাবে এসব বিদেশি প্রসাধনী উৎপাদিত হতো, এ বিষয়ে গ্রেপ্তার হৃদয়ের কাছে কোনো কাগজপত্র নেই। উৎপাদিত ভেজাল প্রসাধনী ঢাকার লালবাগ ও চকবাজারের বিভিন্ন অসাধু পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীর কাছে সরবরাহ করত প্রতারক চক্রটি। এমনকি অনেক অসাধু ব্যবসায়ী সেই ভেজাল পণ্য সস্তায় কিনে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চোখধাঁধানো বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করতেন।

উদ্ধার ভেজাল পণ্যের মধ্যে রয়েছে ১৪০টি কেম কট থাই, ১৪০টি এল অ্যাভিনিউ হোয়াইটনিং বডি ক্রিম, ১৭০টি অর্গানিক হেয়ারফর অয়েল, ১৪০টি বডি হোয়াইটনিং ক্রিম, ১৪০টি কেম বো হোয়াইটনিং বডি ক্রিম, ১৪০টি অজুফি হোয়াইটনিং বডি ক্রিম, ৬০টি হোয়াইটনিং বডি লোশন, ৫০টি হোয়াইটনিং বডি লোশন, ৯০টি কোরিয়ান ফেয়ার লুক পারমান্যান্ট হোয়াইটনিং বডি লোশন। এ ছাড়া ২০০টি নিউ ফ্রেশ অ্যান্ড হোয়াইট, স্কিন বডি লোশনের মোড়ক।

সিআইডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয় হোসেন জানান, এসব প্রসাধনী বাংলাদেশে উৎপাদন বা আমদানি হয় না। চক্রের অন্য সদস্যরা বিদেশের লাগেজ পার্টির মাধ্যমে স্যাম্পল এনে তা কপি করেন এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করেন। তাঁদের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। এসব প্রসাধনী তৈরি করে তিনি লালবাগ ও চকবাজারের অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করতেন। পরে তাঁরা বিদেশি প্রসাধনী বলে স্থানীয় পাইকারি ও খুচরা ক্রেতাদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করেন। এ ছাড়া অনেক গ্রাহক তাঁর কাছ থেকে পণ্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করেন।

প্রতারক চক্রের সহযোগীদের শনাক্ত করে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ