নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকার সংশোধন হতে পারে এনআরসির পরিকল্পনা কিংবা এনআরসির থেকেও ভয়ংকর- এমন মন্তব্য করে মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

সম্প্রতি বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভারতের জাতীয় নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকার সার্বিক সংশোধনের কথা জানিয়েছে। অবৈধ ভোটারদের বাদ দিয়ে ভোটার তালিকায় স্বচ্ছতা আনতে সংশোধনের কাজ শুরু করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সেই কারণে বিভিন্ন রাজ্যের কাছে পাঠানো হয়েছে একটি 'ডিক্লারেশন ফর্ম'। জারি করা হয়েছে একগুচ্ছ নির্দেশিকাও। যার বেশ কিছু নিয়মাবলি নিয়ে আপত্তি তুলে বৃহস্পতিবার এমন মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতার দাবি, কমিশনের এই নতুন নির্দেশিকা বিহার ভোটের আগে প্রকাশ করা হলেও এর আসল উদ্দেশ্য বাংলার বিধানসভা ভোট। ২০২৬ সালে বাংলায় নির্বাচন রয়েছে। সেই ভোটকে নিশানা করেই এই নির্দেশিকা পালন করা হয়েছে। এমনকি, নির্বাচন কমিশন গঠন করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

মমতা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নতুন প্রজন্মকে, গ্রামের মানুষদের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চাইছে। বিজেপির হয়ে কাজ করছে। এটা এনআরসির পরিকল্পনা হতে পারে। এনআরসির চেয়েও ভয়ংকর। মানুষকে বলব সতর্ক হন। শেষ দিন পর্যন্ত দেখুন আপনার নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে কি না। এই নির্দেশিকাতে আরও অনেক দুর্নীতি আছে।’

তিনি বলেন,‘ভোটার তালিকা সংশোধন করার জন্য আমাদের কাছে কমিশন একটা ফর্ম পাঠিয়েছেন। কিন্তু সেই ডিক্লারেশন ফর্মের কয়েকটি বিষয়ে আমার আপত্তি আছে। কেন উল্লেখ করা হচ্ছে যে ১৯৮৭ থেকে ২০০২-এর মধ্যে যাদের জন্ম, তাদের তা লিখতে হবে ফর্মে? তার মানে কি তার আগে বা পরে যারা জন্মেছে, তাদেরটা হবে না?’

তার দাবি, নির্বাচন কমিশন তাকে ২টি চিঠি পাঠিয়েছে। তা প্রাথমিকভাবে দেখতে গিয়ে ১৮ ও ১৯ পাতার নির্দেশিকায় তার চোখে পড়েছে যে ওই ডিক্লারেশন ফর্ম পূরণের সময় বাবা-মায়ের বার্থ সার্টিফিকেটও দিতে হবে। তা কোথা থেকে পাবেন সবাই? এই প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। 

এ প্রসঙ্গে নিজের কথা বলতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘আমিও নিজের মা-বাবার জন্মসাল জানি না।’

উল্লেখ্য, অবৈধ ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দিতে ২২ বছর পর নড়েচড়ে বসেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। বিশেষ করে ভিনদেশী নাগরিকদের তালিকা থেকে বাদ দিতেই কমিশনের এই পরিকল্পনা বলে জানা গিয়েছে। নতুন ভোটারদের তালিকাভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রেও বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। জন্মের প্রমাণপত্র সঠিকভাবে দাখিল করতে না পারলে ভোটার তালিকায় নাম তোলা যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছে কমিশন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম খ যমন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

রোনালদোর বাগ্‌দানের আংটির দাম কত

দীর্ঘদিনের প্রেমিকা জর্জিনা রদ্রিগেজকে গত পরশু বিয়ের প্রস্তাব দেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ইনস্টাগ্রামে জর্জিনা একটি ছবি পোস্ট করে বিষয়টি সবাইকে জানান। ছবিতে দেখা যায়, নিজের আংটি পরা হাতটি রোনালদোর হাতের ওপর রেখেছেন জর্জিনা। আংটিটি ইতিমধ্যেই সবার নজর কেড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা চলছে, এই আংটির দাম কত হতে পারে?

বিশ্বের অন্যতম বড় ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল প্রকাশনা ‘এল’ এই প্রশ্নের উত্তর জেনেছে। মূল উৎপত্তিস্থল ফ্রান্সে হলেও তাদের ৪৫টি আন্তর্জাতিক সংস্করণের মধ্যে ‘এল’ অস্ট্রেলিয়া সংস্করণ এক গয়নার বিশেষজ্ঞের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছে। সেই বিশেষজ্ঞের মতে, জর্জিনার হাতে শোভা পাওয়া এই আংটির দাম ১ কোটি ডলারের (প্রায় ১২১ কোটি ৮২ লাখ টাকা) বেশি হতে পারে।

জর্জিনার পোস্ট করা সেই ছবির ক্যাপশনেই পরিষ্কার, রোনালদোর বিয়ের প্রস্তাবে তাঁর সম্মতি আছে, ‘হ্যাঁ, আমি রাজি। এই জীবনে এবং আমার অন্য সব জন্মেও।’ অর্থাৎ পরিচয়ের ৯ বছর পর তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক এখন চূড়ান্ত পরিণতি পাওয়ার অপেক্ষায়।

আরও পড়ুনঅবশেষে জর্জিনাকে বিয়ের প্রস্তাব রোনালদোর ২১ ঘণ্টা আগেআংটি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মত

ঝলমলে আংটিটি গয়নার বিশেষজ্ঞরা বিশ্লেষণের চেষ্টা করেছেন। এক বিশেষজ্ঞের মতে, আংটির মাঝে ওভাল আকৃতি করে কাটা হীরকখণ্ডটির অন্তত ২২ ক্যারেটের বেশি। আবার কারও মতে, ২৫ থেকে ৩০ ক্যারেট হতে পারে, তাহলে শুধু হীরকখণ্ডের দামই হবে আনুমানিক ২০ থেকে ৪০ লাখ মার্কিন ডলার। এই দাম নির্ভর করছে হীরকখণ্ডটির গুণগত মান, কাটিং ও রঙের ওপর।

নিউইয়র্ক পোস্টের গসিপ কলাম ‘পেজ সিক্স’ জানিয়েছে, আংটির মাঝের পাথরটি যদি ৩০ ক্যারেটের নিখুঁত ডি-কালারের হয় এবং তার আশপাশে বড় আকারের হীরা ও প্লাটিনাম সেটিং থাকে, তাহলে এর দাম ২০ থেকে ৫০ লাখ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার গয়নার ব্র্যান্ড কুশলা হুইটিংয়ের জেনারেল ম্যানেজার আন্না হুইটিং ‘এল অস্ট্রেলিয়া’কে এ বিষয়ে বলেন, ‘ওভাল-কাট করা মাঝের হীরকখণ্ড ২৫ ক্যারেটের বেশি অনুমান করছি। এর লম্বাটে আকার পাথর আঙুলে দেয় দারুণ এক শৈল্পিক ছোঁয়া।’

আরও পড়ুনআবারও সেই গোলের ‘গাড়ি’ নিয়ে প্রস্তুত বার্সেলোনা১৫ ঘণ্টা আগে

হুইটিং ব্যাখ্যা করেন, ‘মূল পাথরের দুই পাশে রয়েছে দুটি ছোট হীরকখণ্ড, প্রতিটি প্রায় এক ক্যারেট, যা মিলিয়ে তৈরি হয়েছে একটি ভারসাম্যপূর্ণ থ্রি-স্টোন ডিজাইন। আংটিটি প্লাটিনাম বা হোয়াইট গোল্ড দিয়ে বানানো, যেখানে ডাবল-ক্ল সেটিং ব্যবহার করা হয়েছে, যা মাঝের পাথরটিকে উঁচুতে ধরে রাখে, ফলে আলো সেখানে সহজে প্রবেশ করে উজ্জ্বলতা বাড়ায় ও নিরাপদ রাখে।’

আর দাম? হুইটিং বলেন, ‘পাথরের আকার, গুণমান ও কারিগরি বিবেচনায়, আগের অনুমানের চেয়েও এর দাম বেশি হতে পারে। আমার মতে, এটি কয়েক কোটি মার্কিন ডলার হবে।’

গয়নার আরেক বিশেষজ্ঞ মনিকা রুগেরিনো বলেন, ‘আমি মনে করি মাঝের হীরকখণ্ডটি ১৫ ক্যারেটের বেশি, পাশে রয়েছে দুটি ছোট ওভাল বা পেয়ার-শেপড পাথর। বর্তমানে ওভাল, পেয়ার ও মারকুইজ কাটের মতো ফ্যান্সি কাট জনপ্রিয়তা পাচ্ছে, আর ফ্যাশন কিছুটা পুরোনো যুগের নকশায় ফিরে যাচ্ছে। এখানে আমি বুলগারির (ইতালিয়ান ফ্যাশন হাউস) ‘গ্রিফি’ ডিজাইনের ছোঁয়া দেখি, যা একসময় এলিজাবেথ টেলর ও সোফিয়া লরেন পরিধান করতেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ