ফুটবলে কখনো কখনো এমন কিছু মুহূর্ত আসে, যা দর্শকদের হৃদয়ে গেঁথে থাকে বহুদিন। ক্লাব বিশ্বকাপে রিয়াল মাদ্রিদ ঠিক তেমনই এক রাত উপহার দিল রেড বুল সালসবুর্ককে হারিয়ে। ৩-০ গোলের জয়ে জাবি আলোনসোর শিষ্যরা গ্রুপ ‘এইচ’-এর শীর্ষে থেকে পৌঁছে গেল শেষ ষোলোয়। যেখানে তাদের সামনে অপেক্ষা করছে ইতালিয়ান জায়ান্ট জুভেন্টাস।

কয়েক ম্যাচ ধরে নিজেকে হারিয়ে খুঁজতে থাকা ভিনিসিউস জুনিয়র অবশেষে ফিরলেন নিজের রাজকীয় মেজাজে। প্রথমার্ধে দুর্দান্ত এক গোল, পরে একটি শৈল্পিক অ্যাসিস্ট; দুইভাবেই ম্যাচে ছাপ রেখে গেলেন ব্রাজিলিয়ান এই তারকা। প্রথম গোলটি আসে বেলিংহ্যামের দূরপাল্লার পাস থেকে। একা দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে নিখুঁত গড়ানো শটে জালের ঠিকানা খুঁজে নেন ভিনিসিউস।

গোল করেই ক্ষান্ত হননি ভিনিসিউস। গিলেরের পাস ধরে বক্সে ঢুকে বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন এবং হঠাৎ এক ব্যাকহিল পাসে বল এগিয়ে দেন ভালভার্দের পায়ে। মিডফিল্ডার ভালভার্দে একটানে নেন শট। আর বল ঠাঁই পায় জালে।

আরো পড়ুন:

ব্রাজিলের ৪টি ক্লাবই নকআউটে, আর্জেন্টিনার সব ক্লাবই গ্রুপপর্বে বিদায়

শেষ নয়, আল-নাসরে নতুন অধ্যায়ের শুরু রোনালদোর

রিয়ালের পক্ষে শুধু গোলদাতারাই নয়, পুরো দলই ছিল ছন্দে। জুদ বেলিংহ্যাম ও চুয়োমেনি মাঝমাঠে রেখে যান ছাপ। আর ডান প্রান্তে অ্যালেকজ্যান্ডার-আর্নল্ডের কার্যকর ভূমিকাও প্রশংসার দাবি রাখে। ফ্রান গার্সিয়া ও আর্দা গিলেরের সংযুক্তি ফুটবলের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দেয়।

৮৪তম মিনিটে তৃতীয় ও শেষ গোলটি করেন গন্সালো গার্সিয়া। অ্যালেকজ্যান্ডার-আর্নল্ডের বাড়ানো বল ভুলভাবে ক্লিয়ার করতে না পারায় সুযোগ পান গার্সিয়া। সুযোগটিকে সম্পূর্ণ কাজে লাগিয়ে ডান দিক থেকে চমৎকার ফিনিশিংয়ে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি।

তিন ম্যাচে সাত পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। শেষ ষোলোয় তাদের মুখোমুখি হচ্ছে জুভেন্টাস।

অপরদিকে, একই দিনে পাচুকাকে ২-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ রানার্স-আপ হয়েছে আল-হিলাল। যারা ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে নামবে পরবর্তী রাউন্ডে।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাজিলের ৪টি ক্লাবই নকআউটে, আর্জেন্টিনার সব ক্লাবই গ্রুপপর্বে বি

ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ-২০২৫ এ দক্ষিণ আমেরিকার দুই ফুটবল পরাশক্তি ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার পারফরম্যান্স যেন দুই মেরুতে দাঁড়িয়ে। যেখানে ব্রাজিলের চারটি ক্লাব— ফ্ল্যামেঙ্গো, পালমেইরাস, বোতাফোগো ও ফ্লুমিনেন্স; দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে। সেখানে আর্জেন্টিনার দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব বোকা জুনিয়র্স ও রিভার প্লেট গ্রুপপর্বেই বিদায় নিয়েছে।

শেষ ষোলোতে পালমেইরাস ও বোতাফোগো মুখোমুখি হচ্ছে। ফলে অন্তত একটি ব্রাজিলিয়ান ক্লাব কোয়ার্টার ফাইনালে নিশ্চিত। অন্যদিকে ফ্ল্যামেঙ্গো খেলবে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে। আর ফ্লুমিনেন্স লড়বে ইন্টার মিলানের সঙ্গে।

চলুন ক্লাবগুলোর গ্রুপ পর্বের পারফরম্যান্সে চোখ বুলানো যাক—

আরো পড়ুন:

শেষ নয়, আল-নাসরে নতুন অধ্যায়ের শুরু রোনালদোর

কষ্টের জয়ে শেষ ষোলোতে ইন্টার, বরুসিয়াও নকআউট পর্বে

ব্রাজিলের চার ক্লাব: দুর্দান্ত ধারাবাহিকতা

১. ফ্ল্যামেঙ্গো (গ্রুপ ডি):
ম্যাচ ১: ফ্ল্যামেঙ্গো ৩–১ চেলসি।
ম্যাচ ২: ফ্ল্যামেঙ্গো ২–০ এস্পেরঁস (তিউনিসিয়া)।  
ম্যাচ ৩: ফ্ল্যামেঙ্গো ১–১ এলএএফসি।
পয়েন্ট টেবিল: ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন।  
দলের উল্লেখযোগ্য পারফরমার: জর্জিয়ান ডি আরাস্কায়েতা (২টি ম্যাচে ম্যাচসেরা)।

২. পালমেইরাস (গ্রুপ এ):
ম্যাচ ১: পালমেইরাস ০–০ পোর্তো। 
ম্যাচ ২: পালমেইরাস ২–০ আল আহলি।  
ম্যাচ ৩: পালমেইরাস ২–২ ইন্টার মায়ামি।
পয়েন্ট টেবিল: ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন।  
দলের উল্লেখযোগ্য পারফরমার: “মেসিনহো” নামে পরিচিত তরুণ এস্তেভাও উইলিয়ান (১টি ম্যাচে ম্যাচসেরা)।

৩. বোতাফোগো (গ্রুপ বি):
ম্যাচ ১: বোতাফোগো ২–১ সিয়াটল সাউন্ডার্স।
ম্যাচ ২: বোতাফোগো ১–০ পিএসজি।  
ম্যাচ ৩: বোতাফোগো ০–১ অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ  
পয়েন্ট টেবিল: ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার-আপ।  
দলের উল্লেখযোগ্য পারফরমার: ইগর জেসুস (২টি ম্যাচে ম্যাচসেরা)।

৪. ফ্লুমিনেন্স (গ্রুপ এফ):
ম্যাচ ১: ফ্লুমিনেন্স ১–১ বরুশিয়া ডর্টমুন্ড।
ম্যাচ ২: ফ্লুমিনেন্স ২–০ উলসান এইচডি।
ম্যাচ ৩: ফ্লুমিনেন্স ১–০ মামেলোডি সানডাউন্স।  
পয়েন্ট টেবিল: ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন।  
দলের উল্লেখযোগ্য পারফরমার: জন আরিয়াস (ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে ম্যাচসেরা)।

আর্জেন্টিনার দুই ক্লাব: হতাশাজনক বিদায়

১. রিভার প্লেট (গ্রুপ ই):
ম্যাচ ১: রিভার প্লেট ১–১ উরাওয়া রেড ডায়মন্ডস।
ম্যাচ ২: রিভার প্লেট ০–২ মন্টেররে।
ম্যাচ ৩: রিভার প্লেট ০–২ ইন্টার মিলান। 
পয়েন্ট টেবিল: ১ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে চতুর্থ।

২. বোকা জুনিয়র্স (গ্রুপ সি):
ম্যাচ ১: বোকা জুনিয়র্স ০–৩ বায়ার্ন মিউনিখ।
ম্যাচ ২: বোকা জুনিয়র্স ১–১ বেনফিকা।
ম্যাচ ৩: বোকা জুনিয়র্স ০–১ অকল্যান্ড সিটি।  
পয়েন্ট টেবিল: ১ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে তৃতীয়।  

ব্রাজিলিয়ান ক্লাবগুলো সম্মিলিতভাবে ১৪ গোল করেছে, খেয়েছে মাত্র ৪টি এবং কেউই হারেনি গ্রুপপর্বে। আর্জেন্টিনার ক্লাবগুলো মাত্র ২ গোল করেছে, খেয়েছে ৭টি এবং কেউ-ই জয় পায়নি। এই পারফরম্যান্স প্রমাণ করে, দক্ষিণ আমেরিকার ক্লাব ফুটবলে ব্রাজিলের আধিপত্য এখনো অটুট এবং তারা ইউরোপীয় জায়ান্টদের জন্যও বড় হুমকি হয়ে উঠছে।

ক্লাব বিশ্বকাপে ভালো করার পেছনের কারণ:
ব্রাজিলিয়ান ক্লাবগুলো তাদের মিড-সিজন ফর্ম ও উচ্চ তাপমাত্রায় খেলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছে। যেখানে ইউরোপীয় ও আর্জেন্টাইন ক্লাবগুলো ছিল অফ-সিজনে। এখন দেখার বিষয় নকআউটপর্বে তারা কেমন কী করে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুভেন্টাসকে উড়িয়ে নকআউট পর্বে ম্যানসিটি
  • ব্রাজিলের ৪টি ক্লাবই নকআউটে, আর্জেন্টিনার সব ক্লাবই গ্রুপপর্বে বি
  • কষ্টের জয়ে শেষ ষোলোতে ইন্টার, বরুসিয়াও নকআউট পর্বে
  • ‘আর্জেন্টিনা’ নেই নকআউটে, ‘ব্রাজিল’ চারে চার
  • চেলসিকে পেছনে ফেলে গ্রুপসেরা ব্রাজিলিয়ান ক্লাব, নকআউটে পেল বায়ার্নকে