রিকশাচালক কবি মজেল উদ্দীন লিখেছেন ‘মাটির কাব্য’, মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সুধীজনদের প্রসংশা
Published: 27th, June 2025 GMT
‘চৈত মাসিয়া রোদের রাগে শুকায় না মোর ভেজা কাপড়
কথার চোটে কাপড় শুকায় দিন বদলের তাজা খবর।’
আবৃত্তি শেষ করেই স্বরচিত কবিতার ব্যাখ্যা দেন মজেল উদ্দীন। তবুও বলতে থাকেন, ‘ভাইরে কষ্টের কথা কাউকে বলতে হয় না। এমনভাবে কথা শোনায় মনে হয় চৈত মাসের রোদে গায়ে থাকা ঘামে ভেজা কাপড়ও শুকায় যায়। মানুষ খালি কথা দেয়। দিন বদলের কথা; কিন্তু কেউ কথা রাখে না। কাকে বলব কষ্টের কথা। তাই মনে আসে যা, লিখে রাখি তা।’
পরিচিতজনদের সঙ্গে দেখা হলেই এভাবে কবিতা শোনান অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা মজেল উদ্দীন (৫১)। পেশায় তিনি রিকশাচালক। বাড়ি দিনাজপুরের বালুয়াডাঙ্গা নতুনপাড়া এলাকায় পুনর্ভবা নদীর পাড়ে। শহরের বাসিন্দাদের কাছে তিনি পরিচিত কবি মজেল উদ্দীন নামে। পানদোকানি থেকে শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবী—প্রায় সবাই চেনেন তাঁকে। শরীর কুলায় না দেখে বছর পাঁচেক আগে রিকশা চালানো বাদ দিয়ে মানুষের ফাইফরমাশ খেটে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
মজেলের ভাষ্যমতে, প্রায় ২৩ বছর ধরে কবিতার সঙ্গে আছেন তিনি। যখন যা উপলব্ধি লিখে রাখেন সিগারেটের প্যাকেটে, কখনো চটা কাগজে। প্রায় এক হাজার কবিতা ও গান লিখেছেন। যার এক–তৃতীয়াংশই মুখস্থ তাঁর। তাঁর লেখা প্রতিটি কবিতা ২ লাইন থেকে ১০ লাইনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। সম্প্রতি মজেলের লেখাগুলো থেকে বাছাই করা ৭২টি কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে কাব্যগ্রন্থ মাটির কাব্য। যা তাঁর দীর্ঘ বছরের সৃজনশীল চর্চার প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রকাশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে দিনাজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বইটির মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা অনুষ্ঠান হয়েছে। অনুষ্ঠানে মজেল উপস্থিত ছিলেন। তাঁর কবিসত্তা নিয়ে গুণীজনদের আলোচনা শুনেছেন এবং আনন্দ পেয়েছেন, অশ্রুসিক্ত হয়েছেন।
নিজের প্রথম কাব্যগ্রন্থ থেকে আবৃতি করছেন মজেল উদ্দীন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলের হাইফা বন্দরে হুতিদের হামলা
ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের চারটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। হাইফা বন্দর, নেগেভ, উম্ম আল-রশরাশ ও বিরসেবায় এ হামলা চালানো হয়েছে।
হুতির সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি বলেছেন, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস কর্মকান্ডের জবাবে এ হামলা চালানো হয়েছে। হামলায় ছয়টি ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। ড্রোনগুলো সফলভাবে লক্ষবস্তুতে আঘাত হেনেছে।
গাজায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধ না করলে এবং অবরোধ তুলে না নেওয়া পর্যন্ত এ ধরনের হামলা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে হুতি।
তবে হামলার বিষয়ে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ৮৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৩১ জন ছিলেন ত্রাণপ্রত্যাশী। এ সময় ৫১৩ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, অনাহারের কারণে গাজায় আরও পাঁচ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে দুটি শিশু রয়েছে। এ নিয়ে উপত্যকাটিতে অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা ২২৭–এ পৌঁছাল, যাদের মধ্যে ১০৩টি শিশু।