ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এক গরু চোরকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। এ সময় উদ্ধার করা হয় তিনটি চুরি যাওয়া গরু। শুক্রবার (২৭ জুন) সকালে উপজেলা সদর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

আটককৃত চোরের নাম হারুন মোল্যা (৫০)। তিনি লক্ষ্মীপুর গ্রামের হাবিবুর মোল্যার ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) মধ্যরাতে দাদপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের অসিত সরকারের গোয়াল ঘরের তালা ভেঙে তিনটি গরু চুরি করে সংঘবদ্ধ চোরচক্র। গরুর পায়ের ছাপ অনুসরণ করে স্থানীয়রা লক্ষ্মীপুর গ্রামের হারুনের বাড়িতে যান। সেখানে তারা গরুগুলো খুঁজে পান। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় হারুনকে আটক করে লক্ষ্মীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভেতরে রাখা হয়। পরে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায়।

আরো পড়ুন:

অপহৃত ছাত্র নারায়ণগঞ্জে উদ্ধার, যুবক গ্রেপ্তার

‎আবু সাঈদ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ৮ পুলিশ স্বপদে, উত্তাল বেরোবি

ভুক্তভোগী অসিত সরকার বলেন, “রাত আনুমানিক ৩টার দিকে আমার ছোট ভাই ঘুম থেকে উঠে দেখতে পান গোয়াল ঘরের তালা ভাঙা। তার কাছ থেকে খবর পেয়ে গোয়ালের ভেতরে ঢুকে দেখি, তিনটি গরুর একটিও নেই। রাতেই লোকজন নিয়ে খোঁজে বের হই। গরুর পায়ের ছাপ অনুসরণ করে চোরের বাড়ি খুঁজে পাই এবং গরু উদ্ধার করি।”

বোয়ালমারী থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, “ঘটনাস্থলে গিয়ে চোরকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”

ঢাকা/তামিম/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক অভ য গ লক ষ ম প র

এছাড়াও পড়ুন:

নেশামুক্ত তারুণ্যই হোক দেশের শক্তি

নেশা সৃষ্টিকারী দ্রব্যকে মাদকদ্রব্য বলে। এটি গ্রহণের ফলে স্নায়বিক বৈকল্য দেখা দেয় ও বারবার তা গ্রহণের প্রতি আসক্তি সৃষ্টি হয়। আধুনিক বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের মাদক লক্ষ্য করা যায়। সভ্যতার বিবর্তনের মধ্য দিয়ে মাদকদ্রব্যেরও যথেষ্ট উন্নতি (!) হয়েছে। আমাদের দেশে বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য দেখা যায়। এগুলোর মধ্যে যেসব মাদকের সেবন সর্বাধিক সেগুলো হলো– গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবা, রেকটিফায়েড স্পিরিট, মদ, বিয়ার ইত্যাদি। দেশে এ পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে ২৭ ধরনের মাদক। এর মধ্যে ১৮ ধরনের ব্যবহার বেশি।
সরকারি তথ্যমতে, দেশে মাদকাসক্তের মধ্যে ৮০ শতাংশ কিশোর বা তরুণ। মাদকাসক্ত হওয়ার ফলে শুধু যে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়, তা নয়। একই সঙ্গে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যেরও অবনতি ঘটায়। মাদকাসক্তদের মধ্যে বাড়ছে অপরাধপ্রবণতা। পারিবারিক, সামাজিক, এমনকি রাষ্ট্রীয়ভাবে নানা ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তাই মাদকাসক্তি থেকে তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা করতে এর পেছনের কারণ এবং যুগোপযোগী সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। 
মাদকাসক্ত হওয়ার অন্যতম কারণ হলো মাদকের সহজলভ্যতা। সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে মাদক সহজে প্রবেশ করায় অলিগলি থেকে শুরু করে বস্তি– সব জায়গায় এর কারবার চলে এবং অনেকে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। অন্যদিকে মাদকের কারবার বেশি লাভজনক হওয়ায় অনেক সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ এ ব্যবসায় যুক্ত হচ্ছে। ছিন্নমূল মানুষকে অল্প টাকায় এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে। যার ফলে তারা একসময় হচ্ছে মাদকাসক্ত এবং জড়িয়ে পড়ছে অপরাধে। তাই মাদক কারবারে জড়িত সবাইকে কঠোর আইনের আওতায় আনতে হবে। সীমান্তবর্তী এলাকায় নজরদারি বাড়াতে হবে, যাতে সহজে মাদকদ্রব্য প্রবেশ করতে না পারে।
অনেক পুলিশ সদস্যও মাদক কারবারে জড়িত। তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে এবং সৎ ও যোগ্য কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে।
সাধারণত ব্যক্তিগত জীবনে ব্যর্থতা, পারিবারিক কোলাহল, বেকারত্ব, বিষণ্নতা আর অবসাদ থেকেও অনেকের মাদকাসক্ত হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। পরিবারের উচিত সন্তানের প্রতি মনোযোগী হওয়া এবং মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে তাদের সময় দেওয়া। যারা ইতোমধ্যে মাদকাসক্ত, তাদের সুস্থ করতে উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং প্রয়োজনে আইনের সহায়তা নেওয়া। তা ছাড়া বাবা-মায়ের উচিত প্রত্যেক সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত এবং নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করা।
কথায় আছে– ‘সঙ্গদোষে লোহা ভাসে’। তেমনি অসৎসঙ্গ অনেক সময় মাদকাসক্ত করে তোলে। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্ধু নির্বাচনে সচেতন থাকা এবং বাবা-মায়ের উচিত সন্তান কার সঙ্গে মেলামেশা করছে, সেদিকে নজর দেওয়া। যেসব কিশোর মাদকাসক্ত হয়ে নানা অপরাধে যুক্ত, তাদের সঠিক কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা এবং আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া। যদিও একবার মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে তা থেকে বের হওয়া কষ্টসাধ্য। পরিবার ও সমাজের সচেতনতা, সঠিক চিকিৎসা, আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং রাষ্ট্রের কার্যকরী পদক্ষেপই পারে মাদকাসক্তির ভয়াল থাবা থেকে দেশকে রক্ষা করতে।

nনুসরাত সুলতানা: শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
nusratsultana.cu57@gmail.com

সম্পর্কিত নিবন্ধ