কোনো ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের দিনে ফুটবলাদের বেশ হাসিখুশিই দেখা যায়। চুক্তি সইয়ের মুহূর্তে পরিবার বা প্রিয়জন পাশে থাকলে খুশির মাত্রা আরও বেড়ে যায়। কিন্তু পল পগবা ব্যতিক্রম এক দৃশ্যের জন্ম দিলেন।

ফ্রেঞ্চ লিগ আঁ–এর ক্লাব এএস মোনাকো গত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পগবার চুক্তি সইয়ের ভিডিও পোস্ট করেছে। ভিডিওর আবহসংগীতে বাজছে বেদনাবিধুর এক গান। কারণ, পগবা যে চুক্তি সইয়ের সময় অঝোরে কেঁদেছেন!

আরও পড়ুন‘নিষিদ্ধ’ ইরান কি বিশ্বকাপ খেলতে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারবে২৭ মার্চ ২০২৫

ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী এই মিডফিল্ডারের দুচোখ বেয়ে পানি পড়েছে টেবিলেও। কিছুক্ষণ হাত দিয়ে মুখও ঢেকে ছিলেন। তা দেখে পাশে থাকা দুই ব্যক্তি পিঠ চাপড়ে তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা করে গেছেন। খুব সম্ভবত তাঁদের একজন পগবার আপন কেউ, অন্যজন এএস মোনাকোর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।

ভিডিওর ক্যাপশনে এএস মোনাকো লিখেছে, ‘পল পগবার জন্য এটি এক আবেগঘন মুহূর্ত।’

পগবা কেন এভাবে কান্নায় ভেঙে পড়লেন, তা অনেকেই হয়তো উপলব্ধি করতে পারছেন। ৩২ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার আবার পেশাদার ফুটবলে ফিরতে পারবেন, তা কয়জন ভেবেছিলেন!

ডোপ টেস্টে পজিটিভ হয়ে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে সব ধরনের ফুটবল থেক সাময়িক নিষিদ্ধ হন পল পগবা। সে সময় তিনি খেলতেন ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাসে। তদন্ত শেষে নিষিদ্ধ দ্রব্য সেবনের সত্যতা মেলায় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে ৪ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।

পল পগবার সঙ্গে ২ বছরের চুক্তি করেছে এএস মোনাকো.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এএস ম ন ক সইয় র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ চালু করবে রাবি প্রশাসন

প্রায় ১৭ হাজার দুর্লভ প্রত্ননিদর্শনসমৃদ্ধ ১৯১০ সালে প্রতিষ্ঠিত বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর পরিচালনা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ না থাকায় গবেষণার অভাবে দেশের প্রথম জাদুঘরের প্রত্নসম্পদ হারিয়ে যেতে বসেছে। এতে করে বরেন্দ্র অঞ্চলের সমৃদ্ধ প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যকে কেন্দ্র করে এবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।

ইতোমধ্যে নীতিগত সব সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাবি প্রশাসন এবং খুব শিগগিরই ইউজিসির সঙ্গে আলোচনা করে বিভাগ নিয়ে কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানা গেছে।

শনিবার (২৮ জুন) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন রাইজিংবিডি ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আরো পড়ুন:

জাবিতে ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে রাবি শিক্ষার্থী আটক

৯ দফা দাবিতে রাবির প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের নতুন পরিচালক ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মো. মোস্তাফিজুর রহমানও এ উদ্যোগের কথা জানান।

তিনি বলেন, “প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ চালুর বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজশাহীতেই প্রথম হওয়া উচিত ছিল। কারণ উত্তরবঙ্গে যেভাবে আর্টিফ্যাক্ট পাওয়া যাচ্ছে এবং সবচেয়ে বড় বিষয় হলো—এতো বড় মিউজিয়াম তো আর কোথাও নেই। আমরা আশা করছি দ্রুতই এটি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। তখন একটি বিভাগ আলাদাভাবে গবেষণা থেকে শুরু করে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিতে পারবে।”

১৯৯২ সালে প্রথম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ যাত্রা শুরু করে। ২০১৩ সালে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েও খোলা হয় বিভাগটি। এছাড়া ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও ‘ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব’ নামে বিভাগ রয়েছে, কিন্তু রাবিতে নেই। গবেষণা, সংরক্ষণ এবং উচ্চশিক্ষার এ উদ্যোগকে সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন ইতিহাসবিদ ও গবেষকরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল হোসেন বলেন, “দেশের সবচেয়ে প্রাচীন বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরটি রাজশাহীতে অবস্থিত। অথচ এটিকে ঘিরে গবেষণার জন্য কোনো স্বতন্ত্র বিভাগ ছিল না, এটি দুঃখজনক। প্রশাসন যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাকে সাধুবাদ জানাই। আশা করছি, এই বিভাগ চালু হলে প্রত্নসম্পদ গবেষণা, সংরক্ষণ এবং উচ্চশিক্ষার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মো. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা ঐতিহ্যবাহী জাদুঘর আছে এবং এ অঞ্চলের সবচেয়ে প্রাচীন মিউজিয়াম এটি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয় হলেও এখানে কোনো আর্কিওলজি বিভাগ নেই।”

তিনি বলেন, “জাবি, বেরোবি ও কুবিতে এ বিভাগ রয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে এবং আমাদের বরেন্দ্র রিসার্চ মিউজিয়ামের পাশে একটা জমি আছে, যেখানে আমরা উদ্যোগ নিলে মনে করি এটা সম্ভব।”

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ চালুর বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, “বাংলার প্রথম জাদুঘর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে এখানে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ চালু করা প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে আমরা গুরুত্বসহ চিন্তা করছি। আমাদের নীতিগত সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, জাদুঘরের নিদর্শন সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের কাজ চলছে। এসব প্রস্তুতি শেষ হলে ইউজিসির অনুমতি নিয়ে খুব শিগগিরই বিভাগ খোলার চেষ্টা করা হবে।”

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “গবেষণাভিত্তিক একটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও এটি সময়সাপেক্ষ একটি প্রক্রিয়া, তবুও আমরা আশাবাদী। উত্তরবঙ্গে প্রত্নতত্ত্ব গবেষণার জন্য এটি একটি উপযুক্ত স্থান। একটি সমৃদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রাজশাহীতে অবশ্যই এই বিভাগ থাকা উচিত। আমরা আমাদের চিন্তা-ভাবনাকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি।”

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ চালু হওয়া স্বতন্ত্র বিভাগ হলো ‘ফারসি ভাষা ও সাহিত্য’ বিভাগ। এটি ২০১৬ সালের ২৬ নভেম্বর থেকে কার্যক্রম শুরু করে।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ