ক্লাব বিশ্বকাপের নকআউট পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে বেনফিকাকে ৪-১ গোলে হারিয়েছে চেলসি। ছোট এই বাক্যের মতো চেলসির জয় সহজ ছিল না, সহজে ম্যাচটিও শেষ হয়নি। নির্ধারিত সময়ের খেলা মাত্র ৫ মিনিট বাকি ছিল। এরপর বৈরি আবহাওয়ার কারণে প্রায় দুই ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়েছিল ম্যাচ।

শনিবার রাতে ব্যাংক অব আমেরিকা স্টেডিয়ামে ৬৪ মিনিটে রিচ জেমসের গোলে ১-০ গোলের লিড নেয় চেলসি। খেলা শেষ হওয়ার ৫ মিনিট আগে বৈকি আবহাওয়া ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে খেলা বন্ধ রাখা হয়। ১ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট পরে পুনরায় শুরু হয় ম্যাচ।

নির্ধারিত সময়ের যোগ করা সময়ে বিতর্কিত পেনাল্টি পায় বেনফিকা। ডি মারিয়ার গোলে ১-১ গোলে সমতা হয় ম্যাচ। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। সেখানে ক্রিস্টোফার এনকুনকু ১০৮ মিনিটে চেলসিকে ২-১ গোলে এগিয়ে নেন। পরেই গোল করেন পেদ্রো নেতো ও কিয়েরনান হল।

ম্যাচ শেষে চেলসি কোচ এনজো মারেস্কা ক্ষোভ ঝেড়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র ক্লাব বিশ্বকাপ তো বটেই ২০২৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপের জন্য কতটা প্রস্তুত ওই প্রশ্নও তুলেছেন। কারণ বৈরি আবহাওয়া ও ফ্লাইট বিলম্বের কারণে এরই মধ্যে আটটি ম্যাচ এমন স্থগিত হয়ে বিলম্বে শুরু ও শেষ হতে দেখা গেছে।

মারেস্কা বলেন, ‘৮৫ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচ আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। বিরতির পর ম্যাচ পরিস্থিতি বদলে গিয়েছিল। আমার দৃষ্টিতে এটা ফুটবল নয়, এরই মধ্যে আট-নয়টি ম্যাচ স্থগিত হয়েছে, সূচি বিপর্যয় হয়েছে। সত্যি বলতে এটাকে ফুটবল নয় ফাজলামি মনে হচ্ছে।’ 

মারেস্কা বলেন, ‘নিরাপত্তা জনিত কারণে একটা ম্যাচ স্থগিত বা বিলম্ব হলে একটা কথা ছিল। কিন্তু যখন আট-নয়টা ম্যাচের সঙ্গে এমন হচ্ছে এর অর্থে আয়োজকরা এমন টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুত না। টুর্নামেন্টে একটার পর একটা ম্যাচ স্থগিত করে দিলে তা আর ফুটবল থাকে না।’

এটাকে ফুটবল না বলার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন চেলসির কোচ মারেস্কা। বেনফিকার বিপক্ষে ম্যাচ স্থগিত হওয়ার পর খেলোয়াড়দের ড্রেসিংরুমে অবস্থান নিতে বলা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা ড্রেসিংরুমে আবদ্ধ থাকার কারণে খেলোয়াড়রা হাতে ফোন নিয়েছেন, পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন, সোস্যাল মিডিয়া দেখেছেন, ভারি খাবার খেয়েছেন, গল্প আড্ডায় মেতেছেন। অথচ সাধারণ কোন প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচেও খেলোয়াড়রা এগুলো করেন না।        

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ লস ক ল ব ব শ বক প ফ টবল ন

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে একটি কেন্দ্রে ভুল সেটে পরীক্ষা গ্রহণ

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা শহরের লক্ষ্মীপাশা আদর্শ মহিলা কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষায় ৪র্থ সেটের পরিবর্তে ২য় সেটের প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। পরীক্ষা শেষে বিষয়টি জানাজানি হলে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে উৎকণ্ঠা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে শিক্ষক ও পরীক্ষার্থী কলেজ কেন্দ্রে এসে ভিড় জমায় এবং ক্ষোভ প্রকাশ করে। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র সচিব বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়েন।

এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র সচিবসহ দুইজন কে দায়িত্ব হতে অব্যাহতি ও কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষাবোর্ড। পাশাপাশি পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে পরীক্ষা নেয়া প্রশ্নপত্রে খাতা মূল্যায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন যশোর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের ঘোষণা অনুযায়ী রবিবার (২৯ জুন) সকাল ১০টা হতে বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় ৫৬০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষায় বোর্ডের নির্দেশনা ছিল ৪ নং সেটে পরীক্ষা গ্রহণের। কিন্তু ভুলবশতঃ লক্ষ্মীপাশা আদর্শ মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ২ নং সেটে পরীক্ষা নেয়া হয়। পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীরা বাইরে এলে অন্য কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা হলে তারা প্রশ্ন মেলায়। তখন সেটের ভিন্নতার কারণে বিভ্রান্তিতে পড়ে। একপর্যায়ে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা যাচাই-বাছাই করে জানতে পারেন লক্ষ্মীপাশা আদর্শ মহিলা কলেজের প্রশ্নের সেট পবির্তন হয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কলেজে এসে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে বেকায়দায় পড়েন। এ সময় ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা।

আরো পড়ুন:

চাকসু নির্বাচনসহ ৭ দাবিতে চবিতে ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলন

আন্দোলন নিয়ে ‘হতবাক’ শহীদ আবু সাঈদের পরিবার

লোহাগড়া সরকারি আদর্শ কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী হাসিবুল হাসান অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ভুল সেটে পরীক্ষা নেয়ার ঘটনা পরীক্ষা শেষ হলে কিছুক্ষণ পর জানতে পারি। বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তিত। আমাদের উত্তরপত্রের বিষয়ে কী হবে, তা নিয়েও আমরা চিন্তিত।’’

এ বিষয়ে কেন্দ্র সচিব ও লক্ষ্মীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজল কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলার জন্য মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রিয়াদ জানান, লক্ষ্মীপাশা আদর্শ মহিলা কলেজের কেন্দ্র সচিবের দায়িত্বে ছিলেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজল কুমার বিশ্বাস এবং ট্যাগ অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন লোহাগড়া উপজেলা সহকারী কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম। তাদের দায়িত্বহীনতার বিষয়ে যশোর শিক্ষাবোর্ড কে জানানো হয়েছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষাবোর্ড যশোরের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ প্রফেসর আব্দুল মতিন বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থীদের যাতে ক্ষতি না হয়, সে বিষয়টি বিবেচনা করে যে সেটে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে, ওই সেটের প্রশ্ন দিয়ে খাতা মূল্যায়ন করা হবে। এছাড়া দায়িত্বে অবহেলার জন্য  সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজল কুমার বিশ্বাস ও ট্যাগ অফিসার লোহাগড়া উপজেলা সহকারী কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম কে দায়িত্ব হতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আগামীতে যাতে ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করা যায়, সেই ব্যাপারে আরো সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।’’
 

ঢাকা/শরিফুল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ