‘আমাদের দেশে তরুণের সংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি। আর বছরে রক্তের চাহিদা রয়েছে আনুমানিক ১০ লাখ ব্যাগ। দেশের পাঁচ কোটি তরুণের ২ শতাংশ যদি বছরে মাত্র একবার রক্ত দেন, তাহলেও আমাদের দেশ বিশ্বের সেরা নিরাপদ রক্ত সরবরাহকারী একটি দেশে রূপান্তরিত হতে পারে। ফলে রক্তের অভাবে এদেশের কোনো মুমূর্ষু রোগীকে মৃত্যুবরণ করতে হবে না।’

রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলস্থ আইডিইবি মিলনায়তনে স্বেচ্ছাসেবী সঙ্ঘ কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত তরুণ রক্তদাতা মিলনমেলা ও সম্মাননা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ‘আমার রক্তে বাঁচুক শত প্রাণ’ স্লোগানকে সাথে নিয়ে তরুণ রক্তদাতাদের ব্যতিক্রমী মিলনমেলা ও সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.

খন্দকার মোহাম্মদ আশরাফুল মুনিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান। অনুষ্ঠানে তরুণ স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের উত্তরীয় পরিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। 

তরুণদের সাধুবাদ জানিয়ে প্রধান অতিথি বলেন, সমাজের বিভিন্ন সংকটে তরুণরাই সবার আগে এগিয়ে আসে। স্বেচ্ছা রক্তদানের মতো মহৎ কাজে তরুণদের ভূমিকা অভাবনীয়। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুনির হাসান বলেন, কোটি কোটি মানুষ নয়, শুরু করতে হবে এই মুহূর্তে যার সাথে আছি, তার ভালো করার মধ্যদিয়ে। আর দেশের ভালো করতে হলে, যার যার নিজের কাজটাই সবচেয়ে ভালোভাবে করতে হবে।

এর আগে বিকেলে প্রথম পর্বে রক্তদানের অনুভূতি, মজার মজার গেম, কুইজ আর দেশের রক্তচাহিদা পূরণে তরুণ রক্তদাতাদের ভাবনা বিষয়ক বিশেষ মিলনমেলার আয়োজন করা হয়। পর্বটি সঞ্চালনা করেন ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিক মোসাদ্দিক।

অনুষ্ঠানে আলোচকরা জানান, ২০০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৭ লক্ষাধিক ইউনিট রক্ত দিয়ে মুমূর্ষু মানুষকে ধারাবাহিক সেবা দিতে পেরেছে কোয়ান্টাম। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা সেবাদানকারী এ সঙ্ঘের রয়েছে ৫ লক্ষাধিক ডোনার পুল। অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি দেশের সম্পূর্ণ রক্তচাহিদা মেটাতে তরুণদের মানবিক এ সেবায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।

কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক নাহার আল বোখারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের পরিচালক মোটিভেশন এম রেজাউল হাসান।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন তর ণ র

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনকে ‘শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ দিতে রাজি হয়েছেন পুতিন: ট্রাম্পের দূত

ইউক্রেনকে ‘শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ দিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাজি হয়েছেন। রোববার সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে এ তথ্য জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। এটিকে মোড় বদলে দেওয়ার মতো ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় বৈঠক করেন ট্রাম্প ও পুতিন। ওই বৈঠক থেকে যুদ্ধ বন্ধের চুক্তির ঘোষণা আসবে বলে আশা করা হচ্ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত এমন কিছু ঘটেনি। কোনো চুক্তি ছাড়াই মস্কো ফিরে যান পুতিন। আর কয়েক দিন আগেও দ্রুত যুদ্ধবিরতির কথা বলা ট্রাম্প সুর বদলে বলেন, যুদ্ধ বন্ধের চুক্তি রাশিয়া ও ইউক্রেনকে করতে হবে।

এরপর সোমবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। সেখানে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নেতারা যোগ দেবেন। তাঁদের আহ্বান—যুদ্ধ বন্ধের কোনো চুক্তির ক্ষেত্রে যেন ইউক্রেনের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখা হয়।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে পুতিনের রাজি হওয়ার বিষয়টি সামনে আনলেন উইটকফ। সিএনএনকে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার বিষয়টিতে রাজি হয়েছেন পুতিন। একে আমি মোড় বদলে দেওয়ার মতো ঘটনা বলে উল্লেখ করব।’

উইটকফ বলেন, ‘আমরা একমত হয়েছি যে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য দেশগুলো অনুচ্ছেদ–৫–এর মতো ভাষা কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারবে।’ অনুচ্ছেদ–৫ বলতে উইটকফ পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর বিধানের পাঁচ নম্বর অনুচ্ছেদের কথা বুঝিয়েছেন।

এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জোটের কোনো সদস্যদেশ আক্রান্ত হলে অন্য সদস্যরা তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে। অনেক আগে থেকেই ন্যাটোর সদস্য হতে চায় ইউক্রেন। তবে এ নিয়ে আপত্তি রয়েছে রাশিয়ার। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরুর অন্যতম প্রধান কারণ ছিল, ইউক্রেনের ন্যাটোর সদস্য হওয়ার প্রচেষ্টা।

সোমবার ট্রাম্প–জেলেনস্কি বৈঠক থেকে ভালো কিছুর আশা করছেন স্টিভ উইটকফ। তিনি বলেন, আলাস্কা থেকে ফেরার পথে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের খুঁটিনাটি আলাপ হয়েছে। ওয়াশিংটনে সোমবারের বৈঠক ফলপ্রসূ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ