‘দেশের ২ শতাংশ তরুণ রক্ত দিলেই চাহিদা মেটানো সম্ভব’
Published: 29th, June 2025 GMT
‘আমাদের দেশে তরুণের সংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি। আর বছরে রক্তের চাহিদা রয়েছে আনুমানিক ১০ লাখ ব্যাগ। দেশের পাঁচ কোটি তরুণের ২ শতাংশ যদি বছরে মাত্র একবার রক্ত দেন, তাহলেও আমাদের দেশ বিশ্বের সেরা নিরাপদ রক্ত সরবরাহকারী একটি দেশে রূপান্তরিত হতে পারে। ফলে রক্তের অভাবে এদেশের কোনো মুমূর্ষু রোগীকে মৃত্যুবরণ করতে হবে না।’
রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলস্থ আইডিইবি মিলনায়তনে স্বেচ্ছাসেবী সঙ্ঘ কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত তরুণ রক্তদাতা মিলনমেলা ও সম্মাননা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ‘আমার রক্তে বাঁচুক শত প্রাণ’ স্লোগানকে সাথে নিয়ে তরুণ রক্তদাতাদের ব্যতিক্রমী মিলনমেলা ও সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
তরুণদের সাধুবাদ জানিয়ে প্রধান অতিথি বলেন, সমাজের বিভিন্ন সংকটে তরুণরাই সবার আগে এগিয়ে আসে। স্বেচ্ছা রক্তদানের মতো মহৎ কাজে তরুণদের ভূমিকা অভাবনীয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুনির হাসান বলেন, কোটি কোটি মানুষ নয়, শুরু করতে হবে এই মুহূর্তে যার সাথে আছি, তার ভালো করার মধ্যদিয়ে। আর দেশের ভালো করতে হলে, যার যার নিজের কাজটাই সবচেয়ে ভালোভাবে করতে হবে।
এর আগে বিকেলে প্রথম পর্বে রক্তদানের অনুভূতি, মজার মজার গেম, কুইজ আর দেশের রক্তচাহিদা পূরণে তরুণ রক্তদাতাদের ভাবনা বিষয়ক বিশেষ মিলনমেলার আয়োজন করা হয়। পর্বটি সঞ্চালনা করেন ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিক মোসাদ্দিক।
অনুষ্ঠানে আলোচকরা জানান, ২০০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৭ লক্ষাধিক ইউনিট রক্ত দিয়ে মুমূর্ষু মানুষকে ধারাবাহিক সেবা দিতে পেরেছে কোয়ান্টাম। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা সেবাদানকারী এ সঙ্ঘের রয়েছে ৫ লক্ষাধিক ডোনার পুল। অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি দেশের সম্পূর্ণ রক্তচাহিদা মেটাতে তরুণদের মানবিক এ সেবায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক নাহার আল বোখারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের পরিচালক মোটিভেশন এম রেজাউল হাসান।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আত্মগোপনে থাকা আ.লীগ নেতা বেন্টু ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আত্মগোপনে থাকা আজিজুল আলম বেন্টু (৫৩), তার স্ত্রী গৃহবধূ নাসিমা আলম (৪৮) ও ছেলে রুহিত আমিনের (২৯) বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই আজিজুল আলম বেন্টু আত্মগোপনে রয়েছেন।
রোববার সকালে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন।
মামলার বাদী আমির হোসাইন জানান, আজিজুল আলম বেন্টু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একচেটিয়া বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। অল্প টাকায় বালুমহাল ইজারা নেওয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। বালুমহাল থেকেই তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। বৈধ আয়ের উৎস না থাকলেও বিপুল সম্পদের মালিক তার স্ত্রী গৃহবধূ নাসিমা আলম (৪৮) ও ছেলে রুহিত আমিন (২৯)।
দুদক জানায়, তার পরিবারের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু হয় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই। আজিজুল আলম বেন্টু, তার স্ত্রী নাসিমা আলম ও ছেলে রুহিত আমিনের নামে দুদক ৩৬টি দলিলে ৯ দশমিক ৪০০৮১৮৯ একর জমির সন্ধান পেয়েছে। অনুসন্ধানে তাদের ১৮ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৮ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়।
সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপন করে দুদককে ৭ কোটি ৬৪ লাখ ২৬ হাজার ৯৪৫ টাকার সম্পদের বিবরণ দেওয়া হয়। ফলে আয়বর্হিভূত ১০ কোটি ৪৬ লাখ ৪৪ হাজার ৬৮১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ দেখা যায়।
অনুসন্ধানকালে দুদক দেখেছে, বেন্টুর স্ত্রী নাসিমা আলম একজন গৃহিনী হলেও তার নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। ২০২৩-২৪ করবর্ষে নাসিমা আলমের দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, তার নামে মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৫৭ লাখ ৮৪ হাজার ৯৬৭ টাকার। অনুসন্ধানকালে নাসিমা আলমের আয়ের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। স্বামী বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তার নিজের আয়কর ফাইলে দেখিয়ে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। ছেলে রুহিত আমিনের পেশা ছাত্র হলেও তার নামেও আয়কর নথি খোলা হয়েছে।
২০২৩-২৪ করবর্ষে দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, তার নামে মোট সম্পদ ৭৮ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৯ টাকার। তারও আয়ের বৈধ কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। বাবা বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তার আয়কর ফাইলে দেখিয়ে নিজ নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। আয়কর নথিতে দেখা যায়, বেন্টু তার স্ত্রী এবং ছেলেকে গাড়ি কেনার জন্য ৬৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকাও দিয়েছেন।
দুদক বলছে, নাসিমা আলম তার স্বামী আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। একইভাবে ছেলে রুহিত আমিনও তার বাবা আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত অবৈধ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। এসব অবৈধ সম্পদ নিজেদের নামে রেখে ও ভোগদখল করে তারাও অপরাধ করেছেন। তাই মামলায় বেন্টুর স্ত্রী-ছেলেকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বলেন, ‘মামলটি দায়ের করার পর রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে নথি পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।’