ফকিরাপুলে ডিবিকে লক্ষ্য করে গুলির ঘটনায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী বাপ্পি’সহ গ্রেপ্তার ৩
Published: 29th, June 2025 GMT
রাজধানীর ফকিরাপুলে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের ঘটনায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মো. বাপ্পিকে যশোর থেকে দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে তিনটি বিদেশি পিস্তল, ছয়টি গুলিভর্তি ম্যাগাজিন ও ১৫১টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ রোববার বিকেলে ডিবির যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বাপ্পি ওরফে মো.
পুলিশ কর্মকর্তা নাসিরুল ইসলাম বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বাপ্পি ও তাঁর দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বাপ্পির দেহ তল্লাশি করে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও সাতটি গুলি পাওয়া যায়। বাপ্পির দেওয়া তথ্যে ঢাকার ডেমরা থানার বাদশা মিয়া রোডের একটি ফ্ল্যাট থেকে আরও দুটি বিদেশি পিস্তল, চারটি গুলিভর্তি ম্যাগাজিন ও ১৪৪টি গুলি উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুনমাদক কারবারিদের গুলিতে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে হাসপাতালে আইজিপি১৯ জুন ২০২৫এর আগে ১৮ জুন রাতে ফকিরাপুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে এক হাজার ইয়াবাসহ আবদুর রহমান নামের এক মাদক কারবারিকে আটক করে ডিবি। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরদিন ১৯ জুন মধ্যরাতে ফকিরাপুল থেকে পল্টনমুখী একটি প্রাইভেট কার থামানোর চেষ্টা করলে গাড়িতে থাকা দুই মাদক কারবারি পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় ডিবির তিন সদস্য গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে। এরপর পলাতক অস্ত্রধারী মাদক চক্রের সদস্যদের শনাক্তে অভিযান শুরু করে ডিবি। তদন্তে মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে বাপ্পির নাম উঠে আসে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আত্মগোপনে থাকা আ.লীগ নেতা বেন্টু ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আত্মগোপনে থাকা আজিজুল আলম বেন্টু (৫৩), তার স্ত্রী গৃহবধূ নাসিমা আলম (৪৮) ও ছেলে রুহিত আমিনের (২৯) বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই আজিজুল আলম বেন্টু আত্মগোপনে রয়েছেন।
রোববার সকালে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন।
মামলার বাদী আমির হোসাইন জানান, আজিজুল আলম বেন্টু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একচেটিয়া বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। অল্প টাকায় বালুমহাল ইজারা নেওয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। বালুমহাল থেকেই তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। বৈধ আয়ের উৎস না থাকলেও বিপুল সম্পদের মালিক তার স্ত্রী গৃহবধূ নাসিমা আলম (৪৮) ও ছেলে রুহিত আমিন (২৯)।
দুদক জানায়, তার পরিবারের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু হয় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই। আজিজুল আলম বেন্টু, তার স্ত্রী নাসিমা আলম ও ছেলে রুহিত আমিনের নামে দুদক ৩৬টি দলিলে ৯ দশমিক ৪০০৮১৮৯ একর জমির সন্ধান পেয়েছে। অনুসন্ধানে তাদের ১৮ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৮ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়।
সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপন করে দুদককে ৭ কোটি ৬৪ লাখ ২৬ হাজার ৯৪৫ টাকার সম্পদের বিবরণ দেওয়া হয়। ফলে আয়বর্হিভূত ১০ কোটি ৪৬ লাখ ৪৪ হাজার ৬৮১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ দেখা যায়।
অনুসন্ধানকালে দুদক দেখেছে, বেন্টুর স্ত্রী নাসিমা আলম একজন গৃহিনী হলেও তার নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। ২০২৩-২৪ করবর্ষে নাসিমা আলমের দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, তার নামে মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৫৭ লাখ ৮৪ হাজার ৯৬৭ টাকার। অনুসন্ধানকালে নাসিমা আলমের আয়ের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। স্বামী বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তার নিজের আয়কর ফাইলে দেখিয়ে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। ছেলে রুহিত আমিনের পেশা ছাত্র হলেও তার নামেও আয়কর নথি খোলা হয়েছে।
২০২৩-২৪ করবর্ষে দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, তার নামে মোট সম্পদ ৭৮ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৯ টাকার। তারও আয়ের বৈধ কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। বাবা বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তার আয়কর ফাইলে দেখিয়ে নিজ নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। আয়কর নথিতে দেখা যায়, বেন্টু তার স্ত্রী এবং ছেলেকে গাড়ি কেনার জন্য ৬৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকাও দিয়েছেন।
দুদক বলছে, নাসিমা আলম তার স্বামী আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। একইভাবে ছেলে রুহিত আমিনও তার বাবা আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত অবৈধ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। এসব অবৈধ সম্পদ নিজেদের নামে রেখে ও ভোগদখল করে তারাও অপরাধ করেছেন। তাই মামলায় বেন্টুর স্ত্রী-ছেলেকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বলেন, ‘মামলটি দায়ের করার পর রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে নথি পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।’