ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ইরানের
Published: 30th, June 2025 GMT
জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির-সাঈদ ইরাভানি বলেছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইরানের ‘অপরিহার্য অধিকার’ এবং তারা এই কার্যক্রম কখনোই বন্ধ করবে না।
সিবিএস নিউজ-এর ফেইস দ্য নেশন অনুষ্ঠানে ইরাভানি বলেন, যতক্ষণ নির্ধারিত সীমার মধ্যে থাকে ততক্ষণ পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে ইরান শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক প্রযুক্তি উৎপাদন করতে পারে, যার মধ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণও রয়েছে।
তিনি বলেন, “তাই সমৃদ্ধকরণ আমাদের অধিকার, একটি অপরিহার্য অধিকার এবং আমরা এই অধিকার প্রয়োগ করতে চাই। আমি মনে করি, সমৃদ্ধকরণ কখনোই বন্ধ হবে না।”
আরো পড়ুন:
৪ কোটি শিশুকে শরণার্থী বানিয়েছে যুদ্ধ আর সংঘাত
৫০০ ধরনের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনে রাশিয়ার ভয়াবহ হামলা
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিমান হামলার আগে ইরান প্রায় ৬০ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছিল, যা আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) ও তেহরানের পরমাণু কর্মসূচির সমালোচকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির কাছে পৌঁছে গেছে- এমন অভিযোগ তুলে দেশটিতে হামলা চালায় ইসরায়েল। টানা ১২ দিনের এই হামলার জবাব দেয় তেহরান। হামলা-পাল্টা হামলার মধ্যে যুক্ত হয়ে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত করে যুক্তরাষ্ট্র; দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, ইরানের সব পামাণবিক স্থাপনা শেষ; তারা আর বোমা বানাতে পারবে না। পরে মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে আসে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় খুব বেশি ক্ষতি হয়নি।
ঢাকা/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইউর ন য
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে ৩০ শতাংশ শিশু খর্বাকৃতি, ওজনস্বল্পতায় ভুগছে ২১ শতাংশ
বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে পুষ্টিহীনতার চিত্র এখনো উদ্বেগজনক। দেশে প্রায় ৩০ দশমিক ৭ শতাংশ শিশু খর্বাকৃতি, ৮ দশমিক ৪ শতাংশ শিশু অপুষ্টিজনিত ক্ষয়রোগে (ওয়েস্টিং) ভুগছে এবং ২১ দশমিক ৮ শতাংশ শিশু ওজনস্বল্পতায় ভুগছে। খর্বাকৃতি ও ওজনস্বল্পতার হার শহর ও গ্রামাঞ্চলের শিশুদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে ভিন্ন।
‘বাংলাদেশে বৃহৎ পরিসরে ফুড ফর্টিফিকেশন (খাদ্য সমৃদ্ধকরণ)’ শীর্ষক এক কর্মশালার মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ শোয়েব। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অনুষদের ডিন কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এ কর্মশালা শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহাম্মদ হোসেন কেন্দ্রীয় গবেষণাগার ও আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশনের (জিএআইএন) যৌথ উদ্যোগে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে অধ্যাপক মোহাম্মদ শোয়েব আরও বলেন, ফুড ফর্টিফিকেশন বা খাদ্য সমৃদ্ধকরণ হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে কোনো খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে এক বা একাধিক ভিটামিন বা খনিজ উপাদান নির্দিষ্ট পরিমাণে মিশিয়ে খাদ্যের পুষ্টিমান বৃদ্ধি করা হয়। বর্তমানে চালের ফর্টিফিকেশনে ছয়টি পুষ্টি উপাদান সংযোজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পুষ্টি উপাদানগুলো হলো ভিটামিন এ, বি-১ ও বি-১২, ফলিক অ্যাসিড, আয়রন ও জিঙ্ক। এ ছাড়া ভোজ্যতেলে ভিটামিন এ সমৃদ্ধকরণের মাধ্যমে নারী ও শিশুর ভিটামিন এর ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।
এ সময় দেশের নারীদের অপুষ্টিজনিত অবস্থার পরিসংখ্যান তুলে ধরে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রজননক্ষম বয়সী (১৫ থেকে ৪৯ বছর) বিবাহিত নারীর সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ নারী পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন। এর মধ্যে ৫০ লাখ নারী অপুষ্টির কারণে কম ওজন এবং ১ কোটি ২০ লাখ নারী অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতায় আক্রান্ত। অপুষ্টিজনিত সমস্যার টেকসই সমাধানের অন্যতম কার্যকর উপায় হলো ফুড ফর্টিফিকেশন অর্থাৎ খাদ্য সমৃদ্ধকরণ। তবে এটি শুরু করাটাই কেবল যথেষ্ট নয়, এর যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও জরুরি। ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছানো পর্যন্ত খাদ্যের গুণগত মান, সঠিক ডোজ, নিরাপদ সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
অধ্যাপক মুহাম্মদ হোসেন কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের পরিচালক অধ্যাপক আমির হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) কৃষি কেন্দ্রের পরিচালক মো. হারুনুর রশিদ এবং জিএআইএনের বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রুদাবা খন্দকার। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শতাধিক শিক্ষক ও গবেষক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় বিশ্বের অন্যান্য দেশে ফুড ফর্টিফিকেশনবিষয়ক ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। পাশাপাশি দেশে জাতীয় ফুড ফর্টিফিকেশন কর্মসূচির অংশ হিসেবে একটি বিশেষ কেন্দ্র স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই, কৌশলপত্র প্রণয়ন, খাদ্যমান নিয়ন্ত্রণ, বাজার তদারকি এবং দেশের চাহিদা অনুযায়ী যুগোপযোগী ফুড ফর্টিফিকেশন কর্মসূচি গ্রহণের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন বিশেষজ্ঞরা। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প–উদ্যোক্তাদের উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, অপুষ্টিজনিত রোগবালাই হ্রাস এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা করা হয়।