জাবিতে ফের উপড়ে ফেলা হলো অর্ধশতাধিক গাছ
Published: 30th, June 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণের জন্য ৫০টির বেশি গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে। সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যলয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) ভবনের সামনের নির্ধারিত ওই স্থানে এস্কেভেটর দিয়ে গাছগুলো উপড়ে ফেলেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, তাদের অনুমতি ছাড়াই গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে।
গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অবস্থান দেখা গেছে। ক্লাস, পরীক্ষা, ল্যাব ও গবেষণা কার্যক্রম নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার প্রয়োজন তুলে ধরে ওই স্থানে ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ও গণিত ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি আবু রুম্মান বলেন, আমরা প্রথমত গাছ কাটার বিপক্ষে। তবে আমাদের বিভাগের শ্রেণিকক্ষ সংকট, ল্যাব সংকট, শিক্ষকদের বসার জায়গা ও আমাদের চলাচলেরও জায়গা নেই। সেহেতু আমাদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম গতিশীল রাখতে আমাদের ভবন দরকার। সে জায়গা থেকে পরিবেশের ন্যুনতম ক্ষতি করে হলেও আমাদের ভবন দরকার।
তবে দীর্ঘদিন ধরে মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া এভাবে যত্রতত্র ভবন নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছে আরেক দল শিক্ষার্থী। তারা বলছে, লেকচার থিয়েটারে সব একাডেমিক কার্যক্রম সম্পন্ন করার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও গাছ কেটে সব বিভাগের আলাদা ভবন চাওয়া অযৌক্তিক। মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না।
ভবন নির্মানের ঠিকাদার মাহবুব ব্রাদার্সের ব্যবস্থাপক আব্দুল আজিজের ভাষ্য, কয়েকদিন আগে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আবু রুম্মান তাকে ফোন করে বলেছে কাজ শুরু করতে পারেন। সে জন্যই তিনি গাছ কেটে ভবনের কাজ শুরু করেছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে আবু রুম্মান বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছি, কিন্তু এসব আলোচনা থেকে কার্যকর কোনো সমাধান আসেনি। গত ২৩ মার্চ এক বৈঠকে উপাচার্য মৌখিকভাবে কাজ শুরু করার সম্মতি দেন। তাই রোববার বিকেলে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী নিয়ে আমরা মাহবুব ব্রাদার্সের ব্যবস্থাপকের সঙ্গে দেখা করি এবং তাকে নির্মাণকাজ শুরু করার অনুরোধ জানাই।
তবে কোনো শিক্ষার্থী প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক অনুমতি ছাড়া কোনো ঠিকাদারকে কাজ শুরু করতে বলতে পারে কিনা, জানতে চাইলে রুম্মান সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। তিনি শুধু বলেন, আমি মনে করি না, তারা শুধুমাত্র আমাদের অনুরোধের ভিত্তিতে কাজ শুরু করেছে।
এদিকে গাছ কাটার খবর পেয়ে সেখানে ছুঁটে যান ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট ও সাংস্কৃতিক জোটের নেতাকর্মীরা। তারা গাছ কাটার প্রতিবাদ জানান। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসান ও অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) নাসির উদ্দীনসহ কয়েকজন শিক্ষকও ঘটনাস্থলে যান। এ সময় শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের জবাবে তারা জানান, কার অনুমতি নিয়ে গাছ কাটা হয়েছে, তারা জানেন না। পরে উপাচার্যের নির্দেশে গাছ উপড়ে ফেলা বন্ধ করা হয়।
উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, এতগুলো গাছ কাটা হয়েছে, আমি সেটা আগে জানতাম না। আমার কোনো অনুমতি ছাড়াই এটা করা হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালকও যদি বলেন, তিনি গাছ কাটার বিষয়ে জানতেন না। তাহলে এটা কীভাবে হলো, আমি বুঝতে পারছি না। আমরা আগেই জানিয়েছিলাম, মাস্টারপ্ল্যান দৃশ্যমান না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্মাণকাজ চলবে না। সেই প্রক্রিয়া এখনও চলমান। আমরা শিগগিরই মাস্টারপ্ল্যান তৈরির জন্য দরপত্র আহ্বান করবো।
গাছ উপড়ে ফেলার প্রতিবাদে সোমবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ‘জাহাঙ্গীরনগর বাঁচাও আন্দোলন’–এর ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সামনে (যেখানে গাছগুলো উপড়ে ফেলা হয়েছে) গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানেই সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ভবন ন র ম ণ উপ চ র য গ ছ উপড় আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
ফায়ারফক্সে আসছে এআই উইন্ডো
কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা বা এআইকেন্দ্রিক ব্রাউজারের বাজার দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। এই প্রতিযোগিতার মধ্যেই ফায়ারফক্সে নতুন এআই উইন্ডো নামের বিশেষ সুবিধা যুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে মজিলা। সুবিধাটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় প্রয়োজন অনুসারে একটি সমন্বিত এআই সহকারীর সাহায্য নিতে পারবেন। পুরো প্রক্রিয়াই থাকবে ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণে।
এক ব্লগ বার্তায় মজিলা জানায়, এআই উইন্ডো ব্রাউজিংয়ে ক্ষেত্রে এআই নির্দেশনা ও ব্যক্তিগত সহায়তার সুবিধা দেবে। সুবিধাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় থাকবে না। আগ্রহী ব্যবহারকারীরা চাইলে নিজে থেকেই চালু করবেন। যেকোনো সময় বন্ধ করা যাবে। এআইনির্ভর এই সুবিধা ওপেন সোর্স প্রযুক্তির ভিত্তিতে তৈরি করা হচ্ছে।
ফিচারটি পরীক্ষামূলক সংস্করণ কিছু ব্যবহারকারীর কাছে উপলব্ধ হয়েছে। মজিলা জানিয়েছে, যে কেউ চাইলে আগের মতোই ফায়ারফক্স ব্যবহার করে নিজের পছন্দমতো কাস্টমাইজড অভিজ্ঞতা পাবেন। আরও বেশি গোপনীয়তা চাইলে প্রাইভেট উইন্ডো ব্যবহার করতে পারবেন। এআই উইন্ডো ব্রাউজিংকে আরও ব্যক্তিগত উপায়ে ব্যবহারের সুযোগ দেবে।
এআই চালিত ব্রাউজারের ব্যবহার বাড়তে থাকায় বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি এখন সার্চবারের জায়গায় চ্যাটবট যুক্ত করা বা সম্পূর্ণ এআইনির্ভর ব্রাউজার তৈরিতে মনোযোগ দিচ্ছে। ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস বা পারপ্লেক্সিটির কমেট পুরোপুরি এআই এজেন্টকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে।
ভবিষ্যতে লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলনির্ভর ব্রাউজারের বড় সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিযোগিতার মধ্যেও ভিন্ন অবস্থান তৈরি করতে চেষ্টা করছে মজিলা। তারা বলছে, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও ব্যবহারকারীর স্বাধীনতা—এই তিন নীতি সামনে রেখে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা দেওয়া হচ্ছে। ওয়েবকে সবার জন্য উন্মুক্ত, মুক্ত ও নিরাপদ রাখতে চায় মজিলা। মজিলার ভাষ্য অনুযায়ী, ফায়ারফক্সে কোনো একক ইকোসিস্টেমে ব্যবহারকারীকে আটকে রাখা হবে না। এআই ব্যবহারের ওপর কোনো বাধ্যবাধকতাও থাকবে না। কখন, কীভাবে বা আদৌ এটি ব্যবহার করবেন কি না, এমন সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ব্যবহারকারীর।
এ বছরের জুনে ফায়ারফক্সের অ্যাড্রেসবারে থাকা ইউনিফায়েড সার্চ সুবিধায় সরাসরি পারপ্লেক্সিটি এআইয়ের মাধ্যমে অনুসন্ধানের অপশন যুক্ত করে মজিলা। নতুন এআই উইন্ডো ফিচার যুক্ত হলে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা আরও বহুমাত্রিক হয়ে উঠবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস