চ্যাম্পিয়নস লিগের রানার্সআপ ইন্টার মিলান, যারা ইউরোপীয় ফুটবলের এক বর্ণময় দল। তাদেরই স্বপ্নভঙ্গ ঘটাল দক্ষিণ আমেরিকার প্রতিনিধিত্বকারী ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেন্সে। ক্লাব বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সাহস, দক্ষতা ও শৈল্পিক ফুটবলের দুর্দান্ত প্রদর্শনীতে ২-০ গোলে জয় তুলে নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে তারা।

সোমবার (৩০ জুন) দিবাগত রাতে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিকে বলা যায়, এক নিখাদ নাট্য রোমাঞ্চ। শুরুতেই জার্মান কানোর গোল এবং অতিরিক্ত সময়ে বদলি খেলোয়াড় হারকিউলিসের গোলে ফ্লুমিনেন্সের ইতিহাসের পাতায় লেখা হয় এক স্বর্ণালি অধ্যায়।

কৌশল আর সাহসের মিশেলে গড়া ফ্লুমিনেন্সের কোচ রেনাতোর পরিকল্পনা যেন ছিল এক জাদুকরের ছোঁয়া। তিন ডিফেন্ডার নিয়ে গড়া এক সুসংহত রক্ষণভাগের কৌশল ইন্টারকে পুরোপুরি অবাক করে দেয়। ম্যাচজুড়ে ছিল তাদের নিয়ন্ত্রিত ছন্দ আর আত্মবিশ্বাসের প্রবাহ।

মাত্র তৃতীয় মিনিটেই ম্যাচে রঙ লাগান কানো। একটি ক্রস ইন্টারের ডিফেন্ডারে লেগে দিক বদলে গেলে কানো বলটি হেড করে পাঠান জালে—আর বলটি যেন সুঁইয়ের মতো ছেদ করে যায় গোলকিপার ইয়ান সোমারের দুই পায়ের মাঝখান দিয়ে। শুরু হয় এক রূপকথার।

ইন্টার মিলান বল দখলে আধিপত্য বিস্তার করলেও, ফ্লুমিনেন্সের আক্রমণ ছিল বেশি ধারালো ও চমকপ্রদ। কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড জন আরিয়াস বারবার ভেঙে দেন ইন্টারের রক্ষণ। গোলরক্ষক সোমারকে বানিয়ে ফেলেন বিভ্রান্ত পথিক।

৩৯ মিনিটে ইগনাসিওর করা গোল যদিও অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। তবুও খেলায় ফ্লুমিনেন্সের আধিপত্য ছিল সুস্পষ্ট। দ্বিতীয়ার্ধে ইন্টার মরিয়া হয়ে ওঠে সমতা ফেরাতে। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান রক্ষণ যেন এক অদৃশ্য প্রাচীর হয়ে দাঁড়ায়।

ইন্টার ডিফেন্ডার স্তেফান ডি ফ্রেইজ কাছ থেকে সুযোগ মিস করেন। বদলি এসপোসিতোর শট ঠেকিয়ে দেন অভিজ্ঞ গোলরক্ষক ফাবিও। এরপর লওতারো মার্টিনেজের শট গোলপোস্টে লেগে ফিরে এলে ফিকে হয়ে যায় ইন্টারের প্রত্যাবর্তনের আশা।

অতিরিক্ত সময়ের তৃতীয় মিনিটে বদলি খেলোয়াড় হারকিউলিস যখন বক্সের বাইরে থেকে নিখুঁত এক শটে বল পাঠান জালে, তখন পুরো স্টেডিয়াম যেন মুহূর্তেই নীরবতা ভেঙে আনন্দের ঢেউয়ে ভেসে যায়। সেই গোল শুধু জয়ই নিশ্চিত করে না, পৌঁছে দেয় দলকে শেষ আটে। যেখানে শুক্রবার তাদের মুখোমুখি হবে ম্যানচেস্টার সিটি অথবা আল হিলাল, অরল্যান্ডো শহরের আলোঝলমলে এক রাতে।

৪৪ বছর বয়সী গোলরক্ষক ফাবিওর পারফরম্যান্স এই জয়ের ছায়ানট। প্রতিপক্ষের একের পর এক আক্রমণ ঠেকিয়ে তিনি প্রমাণ করেন, বয়স কেবল একটি সংখ্যা, আর অভিজ্ঞতা ফুটবলের এক নির্ভরতার নাম।

ম্যাচ শেষে ফুটবলারদের চোখেমুখে ছিল উচ্ছ্বাসের ঝিলিক। সাইডলাইনে তারা লাফিয়ে ওঠেন আনন্দে, আর মাঠজুড়ে দেখা যায় দলগত উল্লাসের এক মধুর আবহ। একসঙ্গে জড়িয়ে ধরে বিজয়ের তালে লাফিয়ে ওঠে গোটা দল।

এর আগে পালমেইরাস বোটাফোগোকে হারিয়ে ব্রাজিলিয়ান প্রতিনিধি হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল। ফ্লুমিনেন্স এবার তাদের পাশে এসে দাঁড়াল দ্বিতীয় প্রতিনিধি হিসেবে। এক কথায়, ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফুটবলের জন্য এটি ছিল এক গর্বে ভরা, রোমাঞ্চে মোড়া রাত্রি। যেখানে স্বপ্ন সত্যি হয়, আর ইতিহাস তৈরি হয় হৃদয়ের স্পন্দনে!

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইন ট র র ফ টবল র

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুক্তি পাচ্ছে নতুন দুই সিনেমা, হলে আছে আরও ৭ সিনেমা

কুয়াকাটায় একদল ব্যাচেলর
করোনার সময় দীর্ঘদিন ঘরবন্দী ছিল মানুষ। বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে কুয়াকাটায় ঘুরতে যায় একদল ব্যাচেলর। সেখানে নারীদের একটি দলের সঙ্গে তাদের দেখা হয়ে যায়। তাদের কেন্দ্র করেই রোমান্টিক, কমেডি ও থ্রিলারের মিশেলে তৈরি হয়েছে নাসিম সাহনিকের ‘ব্যাচেলর ইন ট্রিপ।’

সিনেমাটির শুটিং শুরু হয় ২০২২ সালের শেষ দিকে। প্রথম লটে এক সপ্তাহের মতো শুটিং করার কথা থাকলেও বাজেটের সমস্যায় দুই দিন পর শুটিং টিমকে রেখেই ঢাকায় চলে গেছেন পরিচালক—এমন একটা অভিযোগ সে সময় এনেছিলেন সিনেমার নায়িকা শিরিন শিলা। পরে তিনি আরও জানান, নায়ক-নায়িকাসহ শিল্পীদের থাকা, খাওয়া—সবকিছুতেই অব্যবস্থাপনা ছিল। এতে ইউনিটে অসন্তোষ তৈরি হয়। সে সময় কলাকুশলীরা ধরেই নিয়েছিলেন, এ সিনেমার শুটিং আর হবে না। দ্বন্দ্ব মিটিয়ে পরের বছর শেষ হয় শুটিং। ডাবিং ও পোস্টের কাজ শেষ করতে লেগে যায় আরও এক বছর।

সিনেমায় জুটি হয়েছেন শিরিন শিলা ও কায়েস আরজু। ছবি: কায়েসের সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ