জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও সদস্যের বিরুদ্ধে কর আদায়ে ঘুষ গ্রহণ, কর ফাঁকির সুযোগ দেওয়া এবং হয়রানির অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

যাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে, তাঁরা হলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য লুৎফুল আজীম, ভ্যাটের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) অতিরিক্ত কমিশনার আবদুর রশীদ মিয়া, কর গোয়েন্দা সেলের (সিআইসি) সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, কর অঞ্চল–১৬–এর উপকর কমিশনার মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলাম ও এনবিআরের যুগ্ম কমিশনার তারেক হাসান।

দুদক জানায়, এই কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে কর ও শুল্ক ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দুদক সূত্র জানায়, তথ্য-উপাত্ত ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর কর্মকর্তারা মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে কিছু করদাতাকে কর ফাঁকির সুযোগ করে দিচ্ছেন। আবার নির্ধারিত পরিমাণ কর আদায় না করে ইচ্ছাকৃতভাবে কর কমিয়ে দেন—যাতে করদাতা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উভয়ে লাভবান হন। এর ফলে সরকার প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।

এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে, কিছু কর্মকর্তা ঘুষ না পেলে কর ফাঁকির মিথ্যা মামলা দিয়ে করদাতা ও প্রতিষ্ঠানের মালিকদের হয়রানি করেন। কর ফেরতের ক্ষেত্রেও অনিয়ম চলছে দীর্ঘদিন ধরে। করদাতারা আগাম কর দেওয়ার পর কিংবা বেশি কর পরিশোধের পর নিয়ম অনুযায়ী তা ফেরত পাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা ফেরত পেতে গেলে অনেক সময় অতিরিক্ত করের অর্ধেক পরিমাণ ঘুষ দিতে হয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাই এসব টাকা নিজেদের পকেটে ভরছেন বলে জানা গেছে।

দুদকের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, এনবিআরের কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শুল্ক, ভ্যাট ও আয়কর আদায়ের ক্ষেত্রে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত র করদ ত

এছাড়াও পড়ুন:

আমিরাত থেকে আমদানি হবে ১৭ কার্গো এলএনজি

সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে ‘সরকার টু সরকার’ পদ্ধতিতে দুই বছরে ১৭ কার্গো এলএনজি আমদানি করতে চায় সরকার। এ জন্য দেশটির সঙ্গে চুক্তির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠকের অনুমোদিত প্রস্তাবের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জিটুজি ভিত্তিতে ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড, ইউএই থেকে ২০২৫ ও ২০২৬ সালে সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ায় এলএনজি ক্রয়ের দরপ্রস্তাব ও ড্রাফট এলএনজি সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এসপিএ) অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। চুক্তির আওতায় স্বল্প মেয়াদে চলতি বছরে ৫ কার্গো এবং আগামী বছর ১২ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হবে। 

বৈঠকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় ১ লাখ ১০ হাজার টন সার আমদানি করার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ হাজার টন ইউরিয়া এবং ৮০ হাজার টন ডিএপি সার রয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৮৫০ কোটি ৫০ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) জন্য পাঁচটি এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়। এ ছয় প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৩৭০ কোটি টাকা। 
এ ছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের তিনটি প্রস্তাবে অনুমোদন হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৪০৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা। বিদ্যুতের ১০ সাবস্টেশন নির্মাণে ২৩৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রস্তাবও অনুমোদন করেছে কমিটি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ