দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক থাকলেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। ইসরায়েল ছাড়াও অন্য ‘শত্রু’ দেশগুলোর সঙ্গেও ইরানের কোনো মানুষ যোগাযোগ রাখতে পারবে না। মঙ্গলবার ইরানের সংসদে নতুন এ আইন পাস হয়েছে।

নতুন আইনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে গোয়েন্দা কার্যক্রম চালানো, গুপ্তচরগিরি; ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য শত্রু দেশের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ‘পৃথিবীতে দুর্নীতির’ অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। যার শাস্তি হলো মৃত্যুদণ্ড। বিশেষভাবে ইসরায়েলের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, যারা ইসরায়েলকে সামরিক, আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে, তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ভোগ করতে হবে।

অন্যদিকে, স্টারলিংকসহ অন্যান্য অননুমোদিত ইন্টারনেট সেবার সরঞ্জাম ক্রয়, বিক্রি ও কাছে রাখা গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। কেউ এ অপরাধে অভিযুক্ত হলে তাকে ছয় মাস থেকে দুই বছরের কারাদণ্ড পেতে হবে। আর যারা এসব নিষিদ্ধ যন্ত্রাংশ ১০টির বেশি উৎপাদন বা আমদানি করবে, তাদের ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে।

রয়টার্স জানায়, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছেন জি৭ ভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। সেই সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চুক্তির উদ্দেশ্যে আলোচনা পুনরায় শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন তারা। সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান তারা। 

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে একটি নতুন কূটনৈতিক সমাধান খুঁজতে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে তেহরান ও ওয়াশিংটন আলোচনা চালিয়ে আসছে। তেহরান বলছে, তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। তবে ইসরায়েল ও তার মিত্ররা নিশ্চিত করতে চায়, ইরান যেন কোনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে।

ইসরায়েলি আক্রমণের জবাবে ইরানের প্রতিশোধমূলক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় দখলদার দেশটির কমপক্ষে ৩১ হাজার ভবন ও ৪ হাজার যানবাহন ধ্বংস বা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সোমবার ইরানের সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইট ডেফা প্রেসের বরাত দিয়ে এ তথ্য দিয়েছে বার্তা সংস্থা মেহের। 

ডেফা প্রেস বলছে, এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করে, সংঘাতের সময় ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের ‘বিশাল ও অপূরণীয় ক্ষতি’ করেছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইসর য় ল র

এছাড়াও পড়ুন:

ত্রাণবাহী জাহাজে বাধা মানবতার বিরুদ্ধে ঘৃণ্যতম অপরাধ: জামায়া‌ত

গাজামুখী ত্রাণবাহী জাহাজ আটক করার ঘটনায় দখলদার ইসরাইলের ন্যক্কারজনক ভূমিকার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জা‌নি‌য়ে‌ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আন্তর্জাতিক পানিসীমায় ত্রাণবাহী জাহাজে বাধা দেওয়া‌কে মানবতার বিরুদ্ধে ঘৃণ্যতম অপরাধও ব‌লে‌ছে দল‌টি।

ত্রাণবাহী জাহাজগুলোর নিরাপত্তা বিধানের আহ্বান জানিয়ে বৃহস্প‌তিবার এক বিবৃ‌তি‌তে দল‌টির সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

ব্রাজিল ও সুই‌ডে‌নের রাষ্ট্রদূতের স‌ঙ্গে জামায়াত আমিরের বৈঠক

নির্বাচনের প্রস্তুতিতে জামায়াত ৫ পার্সেন্ট এগিয়ে: দুদু

তি‌নি ব‌লেন, “২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় প্রায় ৭০ হাজার নিরীহ মানুষ শহীদ হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, গাজায় ইতোমধ্যেই দুর্ভিক্ষ ও রোগব্যাধি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ পৌঁছাতে না পারলে হাজার হাজার নারী-শিশুর মৃত্যু অনিবার্য হয়ে পড়বে।”

“আমরা জেনেছি, ইসরাইল ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র ১৩টি ত্রাণবাহী নৌযান এবং সেখানে থাকা বহু মানবাধিকার কর্মীকে আটক করেছে। অথচ এই নৌযানগুলো গাজাবাসীর জন্য খাদ্য, পানি ও ওষুধ বহন করছিল। আমি ইসরাইলের এই অমানবিক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”

জামায়া‌তের সে‌ক্রেটা‌রি জেনা‌রেল বলেন, “আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী মানবিক সহায়তা গন্তব্যে পৌঁছাতে কাউকে বিরত রাখা যায় না। দখলদার ইসরাইল নৌযান ও মানবাধিকার কর্মীদের আটক করে মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধ করেছে। ইতোমধ্যেই এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও ইসরাইলের এ কর্মকাণ্ডকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, এটি নিরীহ মানুষের জীবনকে মারাত্মকভাবে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।”

তিনি বলেন, “মূলত দখলদার ইসরাইল ফিলিস্তিনে জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে। আন্তর্জাতিক পানিসীমায় ত্রাণবাহী জাহাজে বাধা দিয়ে তারা চরম অপরাধ সংঘটিত করেছে। এ হামলা মানবতার বিরুদ্ধে এক ঘৃণ্যতম অপরাধ।”

তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর প্রাণ বাঁচাতে ত্রাণবাহী জাহাজগুলো যাতে নিরাপদে গাজায় পৌঁছতে পারে, সেজন্য ইসরাইলের ওপর অবিলম্বে চাপ সৃষ্টি করতে হবে। একই সাথে আটক মানবাধিকার কর্মীদের নিরাপত্তা ও নিঃশর্ত মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।”

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ত্রাণবাহী জাহাজে বাধা মানবতার বিরুদ্ধে ঘৃণ্যতম অপরাধ: জামায়া‌ত