ছাত্র-জনতার ভয়ে পালাতে গিয়ে যশোরের কেশবপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও রাজনীতিতে নিষিদ্ধ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম কচুরিপানায় ভরা একটি ডোবায় ঝাঁপ দিয়েছেন। ছাত্র-জনতা তাকে ডোকা থেকে তুলে পরে পুলিশে সোপর্দ করে।

বুধবার (২ জুলাই) দুপুর ৩টার দিকে পৌর শহরের ভবানীপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। 

কেশবপুর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গ্রেপ্তার রফিকুল ইসলামকে বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হচ্ছে।

আরো পড়ুন:

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল ছেলেরও

আরিফুলকে হত্যা করে তারই ২ বন্ধু: পুলিশ

পুলিশ জানায়, গত বছরের ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রফিকুল ইসলাম তার বাড়ি ভবানীপুর মোড়লপাড়া এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। আজ দুপুরের দিকে তার বাড়িতে যান স্থানীয় ছাত্র-জনতা। বিষয়টি বুঝতে পেরে রফিকুল ইসলাম একই এলাকার আরিফুর রহমান মিলনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। ছাত্র-জনতা সেখানে গিয়ে তাকে ধাওয়া করে।

এসময় পালাতে গিয়ে কচুরিপানায় ভরা একটি ডোবায় ঝাঁপ দেন রফিকুল। পরে ছাত্র-জনতা ডোবা থেকে তুলে রফিকুলকে পুলিশে সোপর্দ করে।

কেশবপুর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, “ছাত্র-জনতা  সাবেক মেয়রকে ঘিরে রাখে। তার বিরুদ্ধে নাশকতা, চাঁদাবাজিসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে। আওয়ামী লীগের আমলে কেশবপুরে ত্রাস সৃষ্টি করত জামাল বাহিনী। সেই বাহিনীর পরিচালনা করতেন সাবেক মেয়র রফিকুল। একটি বিস্ফোরক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হচ্ছে।”

ঢাকা/রিটন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত র জনত ক শবপ র

এছাড়াও পড়ুন:

বাঁকবদলের নাম উৎসব

গেল ঈদে মুক্তি পেয়েছে তারকাবহুল সিনেমা ‘উৎসব’। সম্পর্ক, পরিবার ও সামাজিক বাস্তবতাকে কেন্দ্র করে এটি নির্মাণ করেছেন তানিম নূর। চলচ্চিত্রটি দর্শকমহলে বেশ সাড়া জাগিয়েছে। এখানকার দর্শকহৃদয় জয় করে বিদেশেও রেকর্ড গড়েছে সিনেমাটি। এর নির্মাণ, সাফল্য ও অন্যান্য প্রসঙ্গের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেছেন এমদাদুল হক মিলটন

‘একসময় মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে সিনেমা দেখতে যেত হলে। এমনকি তাদের বাজারের তালিকায় থাকত সিনেমার টিকিটের কথা। ওই সময়ের পারিবারিক গল্পের সিনেমাগুলো ছিল বেশ উপভোগ্য। মাঝে এ চিরচেনা দৃশ্য যেন হারিয়ে যেতে বসেছিল। উৎসব দেখে মনে হলো, আবার ফিরে এসেছে সেইসব দিন’– রাজধানীর বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘উৎসব’ সিনেমা দেখতে আসা শফিকুল করিমের মন্তব্য ছিল এমনই। শুধু শফিকুল করিম নন, এ ধরনের মন্তব্য করেছেন অনেকেই। কেউ বলেছেন, বাঁকবদলের নাম ‘উৎসব’। সিনেমা হলের দর্শক ঢল সে কথাই মনে করিয়ে দেয়। অনেক সিনেমা দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রের বাঁকবদল হয়েছে। সেই তালিকায় এবার যোগ হলো উৎসবের নাম। শুধু মাল্টিপ্লেক্স নয়, সিঙ্গেল স্ক্রিনেও ভালো চলছে উৎসব। 

চার্লস ডিকেন্সের ‘আ ক্রিসমাস ক্যারোল’ অবলম্বনে ছবিটি নির্মাণ করেছেন তানিম নূর। ১৮২ বছর আগের গল্প এটি। ভিন্ন নামে বহুবার এসেছে চলচ্চিত্রে। সব জনরায়েই এ সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে। এবার যুক্ত হয়েছে বাংলা ভার্সনেও। পরিবার ছাড়া দেখা নিষেধ– এমন ট্যাগলাইন নিয়ে গত ঈদে মুক্তি পেয়েছে ‘উৎসব’। মুক্তির পর দেখা গেল, কথাটা পুরোপুরি সত্য। ট্যাগলাইনের কথায় কনটেন্টের কাজে মিল ছিল। এ কারণে এবারের ঈদে ‘উৎসব’ হয়ে উঠেছে পারিবারিক দর্শকের প্রথম পছন্দের সিনেমা। দিন যত যাচ্ছে, সিনেমাটি ঘিরে দর্শকের আগ্রহ তৈরি হচ্ছে। সিনেমাটি দেখার পর দর্শকেরা ফিরে যাচ্ছেন তাদের সোনালি অতীতে।

প্রেক্ষাগৃহ থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সবখানেই পাওয়া যাচ্ছে ইতিবাচক মন্তব্য। ঈদের ৬ দিন আগে আসা সিনেমার টিজারটি দর্শককে হলে টেনে নিয়ে গেছে। সেখান থেকেই দর্শক হলমুখী হয়েছে। ঈদের প্রায় সব সিনেমা ছিল মারপিট, ভায়োলেন্সে ভরপুর। সেখানে উৎসবের টিজার দর্শকদের নিয়ে গেছে ভিন্ন আবহে। একজন খাইষ্টা লোকের কাছে তিন ভূত আসে। এরপর তাঁর ভূত, ভবিষ্যৎ ও বর্তমান দেখায়। গল্পটি পর্দায় খুব সহজভাবে বলেছেন নির্মাতা। সামাজিক বন্ধন, সম্পর্ক, আচরণ, পরিবর্তন– প্রতিটি অধ্যায় দর্শককে নিয়ে গেছে চিন্তার জগতে। ১ ঘণ্টা ৫৩ মিনিটের সিনেমাটিতে দর্শক চেনাজানা মানুষের ছায়া খুঁজে পেয়েছেন। সিনেমাটি নিয়ে দর্শকের এমন সাড়ায় অভিভূত নির্মাতা তানিম নূর। তিনি বলেন, ‘সিনেমাটি দর্শককে পারিবারিক উৎসবে নিয়ে গেছে। তাদের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পাচ্ছি, এটিই আমার কাছে অনেক বড় ঘটনা। আমরা চাই, ছবিটি আরও দর্শকের কাছে পৌঁছাক।’ 

তারকাবহুল আয়োজন

ঢালিউডে তারকাদের সমাবেশ থাকত সিনেমায়। উৎসব সিনেমায় অনেক গুণী শিল্পীকে একত্র করেছেন নির্মাতা। সিনেমায় জয়া আহসান, জাহিদ হাসান, অপি করিম, চঞ্চল চৌধুরী, আফসানা মিমি, তারিক আনাম খান, আজাদ আবুল কালাম, ইন্তেখাব দিনারের মতো নন্দিত তারকাদের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন বর্তমান সময়ের সুনেরাহ বিনতে কামাল, সৌম্য জ্যোতি, সাদিয়া আয়মানসহ অনেকে। সিনেমায় তারকাশিল্পীদের ব্যাপ্তিকাল কম হলেও প্রতিটি চরিত্র ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ। সিনেমাটির গল্প লিখেছেন তানিম নূর, আয়মান আসিব স্বাধীন, সুস্ময় সরকার ও সামিউল ভূঁইয়া। ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফি হিসেবে কাজ করেছেন রাশেদ জামান। চিত্রনাট্য ও সংলাপ আয়মান আসিব স্বাধীন ও সামিউল ভূঁইয়ার। অনেক বছর পর মুক্তি পেল এমন তারকাবহুল সিনেমা। 

আয়ের রেকর্ড

দেশের ভেতরে উৎসব সিনেমাটি দর্শক যেমন দেখছেন, তেমনি দেশের বাইরেও সিনেমাটি নিয়ে সাড়া পাচ্ছেন নির্মাতা। ২০ জুন দেশের বাইরে মুক্তি পেয়ে উত্তর আমেরিকায় রেকর্ড আয় করেছে সিনেমাটি। ‘উৎসব’ মুক্তির এখন ২৬তম দিন চলছে। অনেক সিনেমার দর্শকসংখ্যা কমলেও ব্যতিক্রম ‘উৎসব’। চতুর্থ সপ্তাহে এসেও বেশির ভাগ শো হাউসফুল। উত্তর আমেরিকায় প্রথম সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি আয় করা ঢালিউড সিনেমাগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে এটি। এমনটিই জানিয়েছেন উত্তর আমেরিকার আন্তর্জাতিক পরিবেশক প্রতিষ্ঠান স্বপ্ন স্কেয়ারক্রোর স্বত্বাধিকারী অলিউল্লাহ সজীব।

সম্পর্কিত নিবন্ধ