ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে গতকাল বুধবার জর্ডান উপত্যকাসহ পুরো অধিকৃত পশ্চিম তীর ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত করার বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। এতে করে বিষয়টি আলোচনার জন্য পার্লামেন্টের এজেন্ডায় যুক্ত হলো। প্রস্তাবের ভাষ্য অনুযায়ী, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ধারণা নেসেটের ‘আলোচ্যসূচি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে’।

ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওত আহারোনোতের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১২০ আসনের নেটেসে প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট পড়েছে ৭১টি। বিপক্ষে পড়েছে ১৩টি। কাহোল লাভান এবং ইয়েশ আতিদ পার্টি প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল।

আহারোনোতের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রস্তাবটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক নয়। অর্থাৎ এটা বাস্তবে কোনো আইন বা নিয়ম হিসেবে কার্যকর হবে না। তবে নেসেটের ঘোষণা হিসেবে এর রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।

খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীর ‘ইহুদি জনগণের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক মাতৃভূমির অবিচ্ছেদ্য অংশ’। প্রস্তাবে দাবি করা হয়েছে, হেবরন ও নাবলুসের মতো ফিলিস্তিনি অধ্যুষিত শহর এবং শিলোহ ও বাইত এলের মতো অবৈধ ইসরায়েলি বসতিগুলো ‘ইসরায়েলের ভূমিতে ইহুদি উপস্থিতির ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা’র ইঙ্গিত দেয়।

প্রস্তাবে দাবি করা হয়েছে, ৭ অক্টোবরের আন্তসীমান্ত হামলা প্রমাণ করে যে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে তা ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে এবং তাতে করে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাও বিপন্ন হবে।

নেসেট ইসরায়েল সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, পশ্চিম তীর ও জর্ডান উপত্যকায় অবস্থিত সব ইহুদি বসতিতে কালবিলম্ব না করে ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব, তথা ইসরায়েলের আইন, বিচার ও প্রশাসন সম্প্রসারিত করতে হবে। যাতে করে ইসরায়েল রাষ্ট্রের নিরাপত্তা মজবুত হয় এবং ইহুদি জনগণের মাতৃভূমিতে শান্তি ও নিরাপত্তার মৌলিক অধিকার কোনোভাবেই ক্ষুণ্ন না হয়।

১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকা দখল করে নিয়েছিল ইসরায়েল। ৩৮ বছর পর ২০০৫ সালে গাজা থেকে সেনা ও বসতি প্রত্যাহার করেছিল দেশটি। কিন্তু এখন আবার গাজা দখলের পাঁয়তারা করছে।

জর্ডান উপত্যকা অধিকৃত পশ্চিম তীরের পূর্ব অংশে অবস্থিত, যা জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরে প্রসারিত একটি উর্বর ও কৌশলগত অঞ্চল। এটি প্রায় ১০ হাজার বর্গকিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত এবং ফিলিস্তিনি কৃষি, জীবনযাপন ও ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ। ইসরায়েল ১৯৬৭ সাল থেকে এই অঞ্চলটিও দখলে রেখেছে।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে শুধু পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনা ও অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের হামলায় প্রায় ১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে সাত হাজারের বেশি।

গত জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) এক মতামতে ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল অবৈধ বলে ঘোষণা করেছিলেন। পাশাপাশি অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের সব বসতি খালি করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ত ব ইসর য় ল ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

খালেদা জিয়া নির্বাচন করবেন: মিন্টু

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, “নির্বাচনে ফেনীর ইতিহাস সবাই জানে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ইনশাআল্লাহ এখানে বিএনপি জয়লাভ করবে। আমাদের দলের নেত্রীও (খালেদা জিয়া) নির্বাচন করবেন। তিনি এখন সুস্থ আছেন। নির্বাচন নিয়ে ফেনীতে কোনো চিন্তা নেই।”

বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে ফেনী শহরের গ্র্যান্ড সুলতান কনভেনশন হলে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। 

আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, “লন্ডনে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যৌথ বিবৃতি দিয়েছিল। আমরা সেটিতে আস্থা রাখতে চাই যে, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে। তবে, দেশের বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় তার আগেও নির্বাচন হয়ে যেতে পারে। হয়তো জানুয়ারিতেও হয়ে যেতে পারে। কারণ, সুপ্রিম কোর্টে কেয়ারটেকার সরকার নিয়ে একটি মামলা চলমান আছে। যদি কেয়ারটেকার সরকার পুনঃপ্রবর্তন হয়, তাহলে এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কেয়ারটেকার হবে না। কেয়ারটেকার সরকারে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার কথা বলা আছে।”

আরো পড়ুন:

প্রাথমিক পর্যায়ে ঐকমত্যের তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিতে আমরা কাজ করছি: প্রধান উপদেষ্টা

সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না থাকলে ভালো কাজ করবে না, উল্লেখ করে আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, “বিগত ১৯ বছর আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছি। কেউ যদি বলে, আমরা হঠাৎ করে নির্বাচন চাচ্ছি, বিষয়টি সঠিক নয়। বরং, ২০০৬ সাল থেকে আমরা নির্বাচন চেয়ে আসছি। একটি দেশের সরকার যদি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না থাকে, তাহলে তারা কখনো ভালো কাজ করবে না। তাই, আমরা চাচ্ছি নির্বাচন হোক।”

বিএনপির এ সিনিয়র নেতা আরো বলেন, “আমরা বলে আসছি, ২০০৮ সালে যে নির্বাচন হয়েছে, সেটি অবাধ ও সুষ্ঠ হয়নি। ২০০৬ সাল থেকে দেশে কোনো নির্বাচনকালীন সরকার নেই। দুই যুগ ধরে যদি নির্বাচিত সরকার না থাকে, তাহলে মানুষের অর্থনৈতিক বা জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হবে না। নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত থাকে একটি সরকার, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকে।”

ঢাকা/সাহাব উদ্দিন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রতিনিধিত্ব করার ‘প্রতীকহীন’ সুযোগ 
  • ১০ হাজার বছর আগের এক নারীর প্রতিকৃতি বানালেন গবেষকেরা
  • সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে দেশে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিতে পারে: তারেক রহমান
  • বিএনপি নেতাকর্মীদের জনবান্ধব হতে হবে : সাখাওয়াত
  • সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান
  • ট্রাম্পের প্রতি মার্কিন জনগণের সমর্থন ৪০ শতাংশে ঠেকেছে
  • কক্সবাজারে ৩৫ পুলিশ সদস্যের পোশাকে থাকবে ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’
  • খালেদা জিয়া নির্বাচন করবেন: মিন্টু
  • জাতিসংঘে সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশ-পাকিস্তান বৈঠক, ফিলিস্তিন ইস্যুতে উদ্বেগ
  • মনোনয়ন নিয়ে চিন্তা করবেন না, জনগণের পাশে থাকুন : আজাদ