অধিকৃত পশ্চিম তীর ও জর্ডান উপত্যকা সংযুক্ত করতে ইসরায়েলের পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাস
Published: 24th, July 2025 GMT
ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে গতকাল বুধবার জর্ডান উপত্যকাসহ পুরো অধিকৃত পশ্চিম তীর ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত করার বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। এতে করে বিষয়টি আলোচনার জন্য পার্লামেন্টের এজেন্ডায় যুক্ত হলো। প্রস্তাবের ভাষ্য অনুযায়ী, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ধারণা নেসেটের ‘আলোচ্যসূচি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে’।
ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওত আহারোনোতের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১২০ আসনের নেটেসে প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট পড়েছে ৭১টি। বিপক্ষে পড়েছে ১৩টি। কাহোল লাভান এবং ইয়েশ আতিদ পার্টি প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল।
আহারোনোতের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রস্তাবটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক নয়। অর্থাৎ এটা বাস্তবে কোনো আইন বা নিয়ম হিসেবে কার্যকর হবে না। তবে নেসেটের ঘোষণা হিসেবে এর রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।
খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীর ‘ইহুদি জনগণের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক মাতৃভূমির অবিচ্ছেদ্য অংশ’। প্রস্তাবে দাবি করা হয়েছে, হেবরন ও নাবলুসের মতো ফিলিস্তিনি অধ্যুষিত শহর এবং শিলোহ ও বাইত এলের মতো অবৈধ ইসরায়েলি বসতিগুলো ‘ইসরায়েলের ভূমিতে ইহুদি উপস্থিতির ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা’র ইঙ্গিত দেয়।
প্রস্তাবে দাবি করা হয়েছে, ৭ অক্টোবরের আন্তসীমান্ত হামলা প্রমাণ করে যে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে তা ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে এবং তাতে করে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাও বিপন্ন হবে।
নেসেট ইসরায়েল সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, পশ্চিম তীর ও জর্ডান উপত্যকায় অবস্থিত সব ইহুদি বসতিতে কালবিলম্ব না করে ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব, তথা ইসরায়েলের আইন, বিচার ও প্রশাসন সম্প্রসারিত করতে হবে। যাতে করে ইসরায়েল রাষ্ট্রের নিরাপত্তা মজবুত হয় এবং ইহুদি জনগণের মাতৃভূমিতে শান্তি ও নিরাপত্তার মৌলিক অধিকার কোনোভাবেই ক্ষুণ্ন না হয়।
১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকা দখল করে নিয়েছিল ইসরায়েল। ৩৮ বছর পর ২০০৫ সালে গাজা থেকে সেনা ও বসতি প্রত্যাহার করেছিল দেশটি। কিন্তু এখন আবার গাজা দখলের পাঁয়তারা করছে।
জর্ডান উপত্যকা অধিকৃত পশ্চিম তীরের পূর্ব অংশে অবস্থিত, যা জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরে প্রসারিত একটি উর্বর ও কৌশলগত অঞ্চল। এটি প্রায় ১০ হাজার বর্গকিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত এবং ফিলিস্তিনি কৃষি, জীবনযাপন ও ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ। ইসরায়েল ১৯৬৭ সাল থেকে এই অঞ্চলটিও দখলে রেখেছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে শুধু পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনা ও অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের হামলায় প্রায় ১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে সাত হাজারের বেশি।
গত জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) এক মতামতে ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল অবৈধ বলে ঘোষণা করেছিলেন। পাশাপাশি অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের সব বসতি খালি করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রস ত ব ইসর য় ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘‘বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি তোলা উচিত, চব্বিশ এবং আগের গণহত্যা, নির্যাতন-নিপীড়ন, ভোটাধিকার হরণ—এসবের জন্য যদি আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হতে পারে। তাহলে একাত্তরে গণহত্যা, ধর্ষণ, নারকীয় হত্যাযজ্ঞের জন্য জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। তাদের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করতে হবে। একই অপরাধে দুই রকমের বিচার হতে পারে না।’’
শনিবার (১ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: দুলু
নৌকা ডুবেছে, শাপলা ভাসবে: এনসিপির তুষার
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘‘যদি আওয়ামী লীগের মতো একই ধরনের অপরাধে জামায়াতের বিচার না হয়, তাহলে সেটা হবে ইতিহাসের প্রতি অবিচার।’’
তিনি বলেন, ‘‘আজকে জামায়াত তাদের পোশাক-চেহারা, আচরণ পাল্টে নতুন রূপে হাজির হয়েছে। তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক করছে। কিন্তু, মূল উদ্দেশ্য বিএনপিকে আক্রমণ করা। এই বহুরূপীদের চেহারা জনগণ চিনে ফেলেছে।’’
বিএনপির এই নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে বিএনপিই একমাত্র শক্তি। অথচ এই শক্তিকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র চলছে। সরকার নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনের নামে প্রক্রিয়া চালালেও জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আলাল আরো বলেন, ‘‘বর্তমান সরকার মনে করেছে, দেশের সব অনাচারের মূলে সংবিধান। কিন্তু সমস্যার মূল সংবিধান নয়—ক্ষমতার অপব্যবহার ও জনগণের ভোটাধিকার হরণ। শেখ হাসিনার ১৬-১৭ বছরের শাসনে এই অন্যায়, নির্যাতন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারই হয়েছে সবচেয়ে বড় বাস্তবতা।’’
ঢাকা/রায়হান/রাজীব