বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ৬৫ জন চিকিৎসকের নিয়োগ বাতিলের সুপারিশ করেছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। মন্ত্রণালয় কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই নিয়োগ বাতিল করে হাসপাতালের পরিচালনা বোর্ড বলছে, নিয়োগে ত্রুটি ছিল।

পরিচালনা বোর্ড অনুমোদন দেওয়ার পর গত মাসের শেষ দিনে শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৬৫ জন চিকিৎসককে নিয়োগ দেয়। এক মাস না যেতেই সেই পরিচালনা বোর্ড বলছে, নিয়োগে ত্রুটি ছিল। তাই নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার শিশু হাসপাতালের পরিচালনা বোর্ডের তিনজন সদস্যের সঙ্গে এই প্রতিনিধির কথা হয়। কেউ বিস্তারিত কথা বলতে চাননি। প্রত্যেকেই বলেছেন, নিয়োগ বাতিল হয়েছে। শিশু হাসপাতালের পরিচালনা বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম আজিজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা নিয়োগ বাতিল করেছি। আমাদের এই সিদ্ধান্ত আমরা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।’

আরও পড়ুনশিশু হাসপাতালে ৬৫ চিকিৎসকের নিয়োগ বাতিল করতে বলেছে তদন্ত কমিটি ২৪ জুলাই ২০২৫

এই নিয়োগের আগে সংবাদপত্রে কোনো বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়নি। আবেদন করেন শুধু শিশু হাসপাতালে প্রশিক্ষণরত ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত চিকিৎসকেরা। নিয়োগপ্রাপ্তদের মেধা ও দক্ষতা যাচাইয়ে লিখিত বা মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়নি।

অভিযোগ ওঠে, ৬৫ জন চিকিৎসকই বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) অনুসারী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ড্যাবের বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও শিশু হাসপাতাল পরিচালনা বোর্ডের সদস্য এম এ কামাল তাঁর বক্তব্যে বলেন, নিয়োগ পাওয়া ৬৫ জন চিকিৎসকই ড্যাবের।

আরও পড়ুনপরীক্ষা ছাড়া ৬৫ চিকিৎসক নিয়োগ শিশু হাসপাতালে ১৩ জুলাই ২০২৫

এ নিয়ে ১৩ জুলাই প্রথম আলোতে ‘অনিয়মের অভিযোগ, পরীক্ষা ছাড়া ৬৫ চিকিৎসক নিয়োগ শিশু হাসপাতালে’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা হতে থাকে। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কমিটির সদস্যরা ১৪ জুলাই প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এই নিয়োগে অনিয়ম ধরা পড়ে। তদন্ত কমিটি নিয়োগ বাতিলের সুপারিশ করে।

তদন্ত কমিটি নিয়োগ বাতিলের সুপারিশ করেছে আবার হাসপাতালের পরিচালনা বোর্ডও নিয়োগ বাতিল করেছে, এখন মন্ত্রণালয় কী করবে? জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েরে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো.

সাঈদুর রহমান বলেন, ‘আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে চিঠি দিয়েছি।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন য় গ ব ত ল কর চ ক ৎসক র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

আসামি শতবর্ষী ইদ্রিস শেখের আদালতে হাজিরা ও প্রিজন ভ্যানে যাত্রা

তখন সময় দুপুর ১২টা ৩ মিনিট। ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের তৃতীয় তলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১–এর এজলাস কক্ষ থেকে একজন বৃদ্ধ ব্যক্তিকে একজন পুলিশ সদস্য হাত ধরে সিঁড়ির কাছে নিয়ে যেতে থাকেন। সেই বৃদ্ধের ডান হাতে একখানা লাঠি। লাঠির ওপর ভর দিয়ে তিনি সিঁড়ির কাছে যেতে থাকেন।

সিঁড়ির কাছে যাওয়ার পর তিনি কোনোভাবেই সেই সিঁড়ি বেয়ে তৃতীয় তলা থেকে দ্বিতীয় তলায় আসতে পারছিলেন না। দুজন পুলিশ কনস্টেবল অশীতিপর এই বৃদ্ধের দুই বাহু ধরে রাখেন।

পরে ইদ্রিস শেখের দুই বাহু ধরে দ্বিতীয় তলায় আনা হয়। তখন ইদ্রিস শেখ হাঁপাচ্ছিলেন। পরে দুজন কনস্টেবল আবার ইদ্রিস শেখের দুই বহু ধরে রাখেন। এরপর খুব সাবধানে দুই তলার সিঁড়ি দিয়ে ইদ্রিস শেখ লাঠির ওপর ভর করে নিচতলায় নামেন। তৃতীয় তলা থেকে নিচতলায় নামতে ইদ্রিস শেখের সময় লেগেছে পাঁচ থেকে সাত মিনিট। ইদ্রিস শেখকে যখন নিচতলার সিঁড়ি দিয়ে হাজতখানার সামনে আনা হয়, তখন তাঁর ছেলে বাবুল শেখ কেঁদে ফেলেন।

বাবুল শেখ তখন চিৎকার দিয়ে বলে ওঠেন, ‘আমার বাবার বয়স এখন ১২০ বছর। এই ১২০ বছর বয়সেও আমার বাবাকে জেলের ঘানি টানতে হবে।’

প্রিজন ভ্যানে ইদ্রিস শেখ। মঙ্গলবার ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণে

সম্পর্কিত নিবন্ধ