কোরবানির ঈদের পরও দেশে বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসা বাড়ছে। চলতি জুলাই মাসের প্রথম ২৬ দিনে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার প্রবাসী আয় এসেছে, তা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি। যা দেশের ডলারের দামে স্থিতিশীলতা ধরে রাখার পাশাপাশি রিজার্ভ ধরে রাখতে সহায়তা করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত ১ থেকে ১৬ জুলাই ১৪২ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। গত বছরের একই সময়ে ১৩১ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল। তার মানে, চলতি মাসের প্রথম ১৬ দিনে প্রবাসী আয় আসা বেড়েছে ৭ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর ১ থেকে ২৬ জুলাই সময়ে আয় এসেছে ১৯৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে আয় এসেছিল ১৫৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে ৩০ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। তার মানে, বৈধ পথে বা ব্যাংক মাধ্যমে ৩ হাজার ৪ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসীরা। দেশের ইতিহাসে আগে কোনো অর্থবছরে এই পরিমাণ প্রবাসী আয় আসেনি। তার আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রবাসী আয় এসেছিল ২৩ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। ফলে বিদায়ী অর্থবছরে প্রবাসী আয় আসা বেড়েছে প্রায় ২৬ শতাংশ।

এদিকে দেশে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি এবং তার বিপরীতে আমদানি কম থাকায় ডলারের চাহিদা কমেছে। সে কারণে টাকার তুলনায় মার্কিন ডলারের দাম কমতে শুরু করেছিল। এই পরিস্থিতিতে ডলারের দাম ধরে রাখতে নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ হলো, আশপাশের দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশে প্রতি ডলারের দাম আপাতত ১২০ থেকে ১২৫ টাকার মধ্যে থাকবে। গতকাল রোববার ব্যাংকগুলো ১২২ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ৮৩ পয়সা দরে ডলার কেনাবেচার করেছে। এর আগের রোববার ব্যাংকগুলোর ডলার কেনাবেচায় দাম ছিল ১২১ টাকা ৪৯ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫৩ পয়সার মধ্যে। ফলে চলতি সপ্তাহে ডলারের দাম কিছুটা বেড়েছে।

বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, মুদ্রাবাজারে ডলার সরবরাহে স্বস্তি ফিরে আসায় এখন আমদানি বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার সময় এসেছে। পাশাপাশি বিলাসপণ্য আমদানিতে যেসব বাড়তি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছিল, সেগুলোও তুলে নিতে হবে। তাহলে আমদানি বাড়বে, যা ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফেরানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।

এদিকে প্রবাসী আয় ও পণ্য রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় থাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত বৃহস্পতিবার ছিল ৩০ বিলিয়ন ডলার। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাবপদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার। প্রবাসী আয়ের পাশাপাশি রিজার্ভ বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণের অর্থ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র র প রব স আমদ ন ই সময় দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ

‎পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

আরো পড়ুন:

সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা

পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা

‎গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‎বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

‎সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি। 

এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

‎ঢাকা/এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
  • সেপ্টেম্বরের ১৬ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ২০ হাজার কোটি টাকা
  • বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিনে ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ডলার কিনল কেন