অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডার মতো অস্ট্রেলিয়াও সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে।

আলবানিজের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বিবিসি লিখেছে, অস্ট্রেলিয়া ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) কাছ থেকে কয়েকটি প্রতিশ্রুতি পেয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে নিরস্ত্রীকরণ, সাধারণ নির্বাচন আয়োজন এবং ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকারকে অব্যাহতভাবে স্বীকৃতি দেওয়া।

সোমবার (১১ আগস্ট) ঘোষণা করা এই পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, “দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই মধ্যপ্রাচ্যে সহিংসতার চক্র ভাঙা এবং গাজায় সংঘাত, ভোগান্তি ও অনাহারের অবসান ঘটানোর জন্য মানবতার সর্বোত্তম আশা।”

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠনই বলছে, ‘গাজায় গণহত্যা চলছে’

‘আমরা মরে যাচ্ছি’, গণঅনাহারে বৈশ্বিক নীরবতায় গাজার ধিক্কার

গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে থাকা ইসরায়েল বলেছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া ‘সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করা’।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিবিসি লিখেছে, শনিবার (৯ আগস্ট) থেকে গাজায় অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, যা নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৭ জনে।

প্রসঙ্গত, গাজা যুদ্ধের প্রতিবেদনে ফিলিস্তিনি ‘গণহত্যা’ ও ‘গাজায় দুর্ক্ষিভ’ শব্দ ব্যবহার করে না ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন-বিবিসি। এর জন্য মানবাধিকারকর্মীদের কঠোর সমালোচনার মুখে রয়েছে ব্রিটেনের রাষ্ট্রীয় অর্থে পরিচালিত সাংবাদমাধ্যমটি।

ইসরায়েলের অধিকৃত পশ্চিম তীরের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এর আগে বলেছে, রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পাওয়া তাদের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের জন্য ক্রমবর্ধমান সমর্থনকে তুলে ধরে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ জানান, তার সরকার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, ভবিষ্যতের কোনো রাষ্ট্রে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না।

তিনি আরো বলেন, গত দুই সপ্তাহে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, নিউজিল্যান্ড ও জাপানের সঙ্গে আলোচনার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, “এখানে একটি সুযোগের মুহূর্ত এসেছে এবং অস্ট্রেলিয়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে এটি কাজে লাগাবে।”

গত রবিবার ফিলিস্তিনের পক্ষে হাজার হাজার মানুষ সিডনি হারবার ব্রিজে পদযাত্রা করে। এই কর্মসূচির জন্য আদালতের রায় নিতে হয় আয়োজকদের।

যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা এই পথে হাঁটবে না। তারা মনে করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া মানে হামাসকে পুরস্কৃত করা।

রবিবার (১০ আগস্ট) মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স পুনরায় বলেন, কার্যকর সরকার না থাকার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই।

এদিন এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনাকারী দেশগুলোর সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, “ইউরোপীয় দেশগুলো এবং অস্ট্রেলিয়ার এভাবে সেই গর্তে ঝাঁপিয়ে পড়া হতাশাজনক এবং আমার মনে হয়, এটা আসলে লজ্জাজনক।”

“তারা জানে, যদি মেলবোর্নের পাশেই বা সিডনির পাশেই এমন ভয়াবহ হামলা হতো, তবে তারা কী করত। আমি মনে করি, আপনারা অন্তত আমরা যা করছি, তা-ই করতেন।”

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা নিয়ে ইসরায়েল তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। জাতিসংঘে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা এই পদক্ষেপের নিন্দা করেছেন। যদিও নেতানিয়াহুর দাবি, এটিই যুদ্ধ শেষ করার ‘সেরা উপায়’।

গত বছর স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তাদের আশা ছিল, এটি হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি উৎসাহিত করবে।

বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৪৭টি দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের মর্যাদা একটি ‘স্থায়ী পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র’ হিসেবে। এই মর্যাদায় জাতিসংঘের কার্যক্রমে অংশ নেওয়া যায় কিন্তু ভোটাধিকার প্রয়োগ করা যায় না।

ঢাকা/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ফ ল স ত ন র ষ ট রক র জন য য ক তর ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

ফায়ারফক্সে আসছে এআই উইন্ডো

কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা বা এআইকেন্দ্রিক ব্রাউজারের বাজার দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। এই প্রতিযোগিতার মধ্যেই ফায়ারফক্সে নতুন এআই উইন্ডো নামের বিশেষ সুবিধা যুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে মজিলা। সুবিধাটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় প্রয়োজন অনুসারে একটি সমন্বিত এআই সহকারীর সাহায্য নিতে পারবেন। পুরো প্রক্রিয়াই থাকবে ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণে।

এক ব্লগ বার্তায় মজিলা জানায়, এআই উইন্ডো ব্রাউজিংয়ে ক্ষেত্রে এআই নির্দেশনা ও ব্যক্তিগত সহায়তার সুবিধা দেবে। সুবিধাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় থাকবে না। আগ্রহী ব্যবহারকারীরা চাইলে নিজে থেকেই চালু করবেন। যেকোনো সময় বন্ধ করা যাবে। এআইনির্ভর এই সুবিধা ওপেন সোর্স প্রযুক্তির ভিত্তিতে তৈরি করা হচ্ছে।

ফিচারটি পরীক্ষামূলক সংস্করণ কিছু ব্যবহারকারীর কাছে উপলব্ধ হয়েছে। মজিলা জানিয়েছে, যে কেউ চাইলে আগের মতোই ফায়ারফক্স ব্যবহার করে নিজের পছন্দমতো কাস্টমাইজড অভিজ্ঞতা পাবেন। আরও বেশি গোপনীয়তা চাইলে প্রাইভেট উইন্ডো ব্যবহার করতে পারবেন। এআই উইন্ডো ব্রাউজিংকে আরও ব্যক্তিগত উপায়ে ব্যবহারের সুযোগ দেবে।

এআই চালিত ব্রাউজারের ব্যবহার বাড়তে থাকায় বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি এখন সার্চবারের জায়গায় চ্যাটবট যুক্ত করা বা সম্পূর্ণ এআইনির্ভর ব্রাউজার তৈরিতে মনোযোগ দিচ্ছে। ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস বা পারপ্লেক্সিটির কমেট পুরোপুরি এআই এজেন্টকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে।

ভবিষ্যতে লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলনির্ভর ব্রাউজারের বড় সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিযোগিতার মধ্যেও ভিন্ন অবস্থান তৈরি করতে চেষ্টা করছে মজিলা। তারা বলছে, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও ব্যবহারকারীর স্বাধীনতা—এই তিন নীতি সামনে রেখে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা দেওয়া হচ্ছে। ওয়েবকে সবার জন্য উন্মুক্ত, মুক্ত ও নিরাপদ রাখতে চায় মজিলা। মজিলার ভাষ্য অনুযায়ী, ফায়ারফক্সে কোনো একক ইকোসিস্টেমে ব্যবহারকারীকে আটকে রাখা হবে না। এআই ব্যবহারের ওপর কোনো বাধ্যবাধকতাও থাকবে না। কখন, কীভাবে বা আদৌ এটি ব্যবহার করবেন কি না, এমন সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ব্যবহারকারীর।

এ বছরের জুনে ফায়ারফক্সের অ্যাড্রেসবারে থাকা ইউনিফায়েড সার্চ সুবিধায় সরাসরি পারপ্লেক্সিটি এআইয়ের মাধ্যমে অনুসন্ধানের অপশন যুক্ত করে মজিলা। নতুন এআই উইন্ডো ফিচার যুক্ত হলে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা আরও বহুমাত্রিক হয়ে উঠবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ