ইউপি সদস্যকে কোপানোর পর দুই ছেলেকে গুলি করে পালাল দুর্বৃত্তরা
Published: 12th, August 2025 GMT
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় মো. রফিক উদ্দিন (৫০) নামের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। তাঁর দুই ছেলেও ওই দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের কুমিরাঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
রফিক উদ্দিন বড়হাতিয়া ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি স্থানীয় মনুফকির হাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি। হামলায় গুলিবিদ্ধ তাঁর এক ছেলে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তাঁর নাম মো.
জানতে চাইলে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাহিদ হাসান আজ মঙ্গলবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, রাতে ইউপি সদস্য ও তাঁর দুই ছেলেকে হাসপাতালে আনা হয়। ইউপি সদস্যর দুই হাত ও দুই পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুই ছেলের মধ্যে মিশালের চোখে ও ফয়সালের পায়ে গুলি লেগেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহত মো. ফয়সাল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, রাতে তাঁর বাবা স্থানীয় মনুফকির হাট বাজার থেকে মোটরসাইকেলে ফিরছিলেন। তাঁর বাবা বাড়ির সামনে পৌঁছালে ওত পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। চিৎকার শুনে তাঁরা দুই ভাই এগিয়ে গেলে তাঁদের ওপর গুলি চালানো হয়। ফয়সালের দাবি, এলাকার একটি ডাকাত দলের লোকজন এ হামলা করছে।
জানতে চাইলে লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ব্যাপারে আমরা তদন্ত করছি। শিগগিরই জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘একশটা টেস্টই যেন শেষ না হয়’
যে ক্ষণটার জন্য অপেক্ষা ছিল, যে সময়টার জন্য প্রতীক্ষা ছিল তার খুব কাছাকাছি ক্রিকেটাঙ্গন। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম যিনি টেস্ট ক্রিকেটের তিন অঙ্কে পৌঁছতে যাচ্ছেন। ১৯ নভেম্বর ঢাকায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট। এই টেস্টেই শততম টেস্টে মাইলফলক স্পর্শ করবেন মুশফিকুর।
সময় তাই যত ঘনিয়ে আসছে ততই মুশফিকুরকে ঘিরে বাড়ছে উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা ও রোমাঞ্চ। যা ছুঁয়ে যাচ্ছেন মুশফিকুরের কোচদেরও। যাদের সঙ্গে ক্যারিয়ারের বিভিন্ন সময় কাজ করেছেন, তাদের সবার চাওয়া মাইলফলক ছোঁয়া এই সময়টা তিনি উপভোগ করুক প্রাণ খুলে। নিজের আনন্দে খেলুক। শুধু তা-ই নয়, একশ টেস্টেই যেন থমকে না যায় মুশফিকুর ব্যাট। অন্তত এক-দুই বছর তাকে টেস্ট অঙ্গনে দেখতে চান প্রত্যেকে।
আরো পড়ুন:
মুশফিকুরের শততম টেস্ট নিয়ে আশরাফুলের উচ্ছ্বাস
লর্ডসে প্রথম, মিরপুরে শততম টেস্ট মুশফিকুর
সোহেল ইসলাম
কোচ, বিসিবির গেম ডেভেলাপমেন্ট বিভাগ
‘‘আমাদের দেশে যারা টেস্ট খেলে তাদের টেস্টের সংখ্যা কম। এটা যদি ইংল্যান্ড হইতো বা অস্ট্রেলিয়াতে হতো বা ভারতেরও হতো, ওর যতদিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার, এতদিনে দেড়শ টেস্ট খেলে ফেলতো। সেই হিসাবে ইদানিং আমাদের একটু টেস্ট সংখ্যা বেড়েছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের কারণে। আগে তো অনেক কম হইতো। সেখান থেকে একশটা টেস্ট খেলা মানে বিশাল কিছু।’’
‘‘ওর সফরটা দেখেন আপনি। শুধু একশ টেস্ট বলবেন…ও কতদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে। এমন না যে অযথাই খেলছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কিন্তু আপনার পারফর্ম করে খেলতে হয়। আপনি পারফর্ম ছাড়া থাকলে আপনাকে কিন্তু খেলাবে না।’’
‘‘মুশফিকুরকে তার পারফরম্যান্সটা ধরে রাখতে হয়েছে। আমাদের দেশের প্রথম একজন যে একশ টেস্ট খেলতে যাচ্ছে। এজন্য ও নিজেকে প্রস্তুত রেখেছে। ওই ক্ষুধাটা তার ছিল। ওই জেদটা তার ছিল। আমি আশা করব, যদি দলের চাহিদা থাকে এবং তারও খেলার ইচ্ছা তাহলে যেন আরো খেলা চালিয়ে যায়। আরো বেশিদিন মাঠে থাকে। মানে একশটা টেস্ট যেন শেষ না হয়।’’
মিজানুর রহমান বাবুল
কোচ, বিসিবির গেম ডেভেলাপমেন্ট বিভাগ
‘‘মুশফিকুরকে শুভকামনা। একজন পারফেক্ট ব্যাটসম্যান। একজন পারফেক্ট স্পোর্টসম্যান। যাকে আপনি অনুসরণ করলে, যাকে আপনি মেনে চললে, আদর্শ ভাবলে ক্যারিয়ারে উন্নতি করতে পারবেন। বাংলাদেশের ক্রিকেট যেভাবে চলে, যে ধাঁচে এগিয়ে যায় সেখানে একজনের ক্যারিয়ার শীর্ষ পর্যায়ে ২০ বছর টিকে থাকা মুশকিল। মুশফিকুর প্রমাণ করেছে যদি আপনার নিবেদন থাকে, ভালো করার ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনি পারবেন।’’
‘‘ব্যাটসম্যান মুশফিকুর সব সময়ই বাংলাদেশ দলের সেরা। মিডল অর্ডারে লম্বা সময় বাংলাদেশকে সার্ভ করেছে। দেখুন তাকে চ্যালেঞ্জ করে কেউ তাকে রিপ্লেস করতে পারেনি। পারফর্ম করেই সে টিকে আছে এবং খেলে যাচ্ছে। আমি চাই সে সেই ধারাবাহিকতাই ধরে রাখুক। এখনো ফিট আছে। অন্যদের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করছে। খেলার প্রতি ভালোবাসা না থাকলে এটা হয় না।’’
‘‘শততম টেস্টটায় সেঞ্চুরি লাগবেই, এমনটাই নয়। হলে ভালো। না হলেও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। থামলে হবে না। ওর অভিজ্ঞতাটা এই দলের প্রয়োজন এখন। যতদিন খেলতে মন চায় খেলুক। ও তো পারফর্ম না করে আর খেলবে না। তরুণ একজন ক্রিকেটার যদি তার ডেডিকেশন সম্পর্কে জানতে পারে সেটাই হবে বড় পাওয়া।’’
ঢাকা/ইয়াসিন