চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় মো. রফিক উদ্দিন (৫০) নামের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। তাঁর দুই ছেলেও ওই দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের কুমিরাঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রফিক উদ্দিন বড়হাতিয়া ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি স্থানীয় মনুফকির হাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি। হামলায় গুলিবিদ্ধ তাঁর এক ছেলে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তাঁর নাম মো.

ফয়সাল (২৬)। আরেক ছেলের নাম মো. মিশাল (২৩)। তিনি একটি কলেজে অধ্যয়ন করছেন। তাঁরা সবাই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

জানতে চাইলে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাহিদ হাসান আজ মঙ্গলবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, রাতে ইউপি সদস্য ও তাঁর দুই ছেলেকে হাসপাতালে আনা হয়। ইউপি সদস্যর দুই হাত ও দুই পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুই ছেলের মধ্যে মিশালের চোখে ও ফয়সালের পায়ে গুলি লেগেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আহত মো. ফয়সাল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, রাতে তাঁর বাবা স্থানীয় মনুফকির হাট বাজার থেকে মোটরসাইকেলে ফিরছিলেন। তাঁর বাবা বাড়ির সামনে পৌঁছালে ওত পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। চিৎকার শুনে তাঁরা দুই ভাই এগিয়ে গেলে তাঁদের ওপর গুলি চালানো হয়। ফয়সালের দাবি, এলাকার একটি ডাকাত দলের লোকজন এ হামলা করছে।

জানতে চাইলে লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ব্যাপারে আমরা তদন্ত করছি। শিগগিরই জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফয়স ল সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

মালয়েশিয়ায় আরো বাংলাদেশি কাজ করার সুযোগ পাবেন: আশা প্রধান উপদেষ্টার

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে আরো অধিকসংখ্যক বাংলাদেশি কাজ করার সুযোগ পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

মালয়েশিয়া সফরের দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ আশা প্রকাশ করেন তিনি। এর আগে কুয়ালালামপুরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। এরপর দুই দেশের মধ্যে ৫টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং তিনটি সহযোগিতামূলক নোট বিনিময় স্বাক্ষর করা হয়। 

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় কাজ করছে। তারা উপার্জিত অর্থ দেশে পাঠান, যা তাদের পরিবারের সদস্যদের জীবনযাপন, সন্তানের লেখাপড়া এবং ভালো শিক্ষা গ্রহণে সহায়তা করছে। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের জন্য এই দরজা খোলা থাকবে এবং আমাদের দেশের আরো অধিকসংখ্যক তরুণ-তরুণী এখানে কাজ করার সুযোগ পাবেন।” 

বাংলাদেশের কর্মীদের মালয়েশিয়ায় কাজ করার সুযোগ দেওয়ায় দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, “মালয়েশিয়ার জনগণ তাদের সঙ্গে পরিবারের একজন সদস্য এবং বন্ধুর মত আচরণ করে। এতে তারা খুব খুশি। তারা অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি এখান থেকে অনেক কিছু শেখে, যা দেশে ফিরে যাওয়ার পর নিজের ব্যবসা দাঁড় করাতে সহায়ক হয়।” 

মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমরা বাংলাদেশকে একটা উৎপাদনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আপনারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন এবং প্রযুক্তি নিয়ে আসুন। আমাদের মানবসম্পদকে কাজে লাগিয়ে আপনারা পণ্য উৎপাদন করে বিদেশে রপ্তানি করতে পারেন।” 

একটা টেকসই অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশকে বিনিয়োগ ও ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

গত বছরের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গত বছর ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমেছিল। আন্দোলনের মুখে স্বৈরশাসক বিদায় নিয়েছে। এরপর নতুন সরকারের দায়িত্ব নিয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশে স্থিতিশীলতা ফেরাতে আমরা সহযোগিতা খুঁজছিলাম, আর তখন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বন্ধুর মত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি আমাদের শক্তি জুগিয়েছিলেন। ”

বাংলাদেশে সঠিক পথ নিশ্চিত করতে দৃঢ় সংকল্পের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমরা দেশে শৃঙ্খলা ফেরাতে পেরেছি। অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করেছি।”
“ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে আবারও কার্যকর করা গেছে। যে কারণে এক বছরের মাথায় এসে আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পারছি।” আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথাও জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সংকট নিরসন এবং আসিয়ানের সদস্যপদ প্রাপ্তির জন্য মালয়েশিয়ার জোরালো সমর্থন চান।

সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম আশা প্রকাশ করে বলেন, “দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্ক উভয় দেশের জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে সহায়ক হবে।” 

তথ্যসূত্র: বাসস

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ