উজানের ঢল আর অতিবৃষ্টিতে পদ্মা নদীর পানি গত কয়েকদিন ধরে সতর্কসীমায় প্রবাহিত হচ্ছে। অনেক এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। মাঠ ছাপিয়ে শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে পড়ায় চাঁপাইনববাগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের পাঁচটি ইউনিয়নের ৪১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থার মধ্যেই পাঠদান চালিয়ে নেওয়ার কথা বলছেন শিক্ষা কর্মকর্তারা।

প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা জানান, জেলা সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার ১৩টি করে মোট ২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ৯টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ছয়টি মাদরাসার অবস্থাও একই। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আলাতুলি ইউনিয়নের পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নারায়ণপুর ইউনিয়নের আটটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুইটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এবং একটি মাদরাসার শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। 

আরো পড়ুন:

বিদ্যালয়ের সিঁড়ির রেলিং থে‌কে প‌ড়ে ছাত্রীর মৃত্যু

‘সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১৬৫ উপজেলায় স্কুল ফিডিং কার্যক্রম শুরু হবে’

শিবগঞ্জ উপজেলার দুলর্ভপুর ইউনিয়নের পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাঁচটি মাদরাসা ও চারটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং পাঁকা ইউনিয়নের সাতটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। উজিরপুর ইউনিয়নের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি রয়েছে। ফলে পাঠদান ব্যাহত হওয়ায় ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর মাহমুদা মতিউল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা.

হামিদা খাতুন বলেন, ‍“আমাদের বিদ্যালয়ে প্রায় ৭৯২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়টিতে ক্লাস হয়েছিল। গত রবিবার বিদ্যালয়ের মাঠ আর শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করে। ফলে তিনদিন ধরে এখানে পাঠদান পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।” 

তিনি বলেন, “বিদ্যালয়ের আশপাশে শুকনো জায়গা না থাকায় ক্লাস চালিয়ে নিতে পারছি না।”

শিবগঞ্জ উপজেলার শিংনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ বলেন, “বিদ্যালয়ের চারপাশেই পানি। এরমধ্যে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা চালিয়ে নিতে বলেছিলেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পানির মধ্যে অভিভাবকরা বাচ্চাদের ক্লাসে পাঠাতে অনাগ্রহী। যে কারণে সোমবার থেকে বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।”

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা জানান, পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চলের ২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার খুবই কম। এরপরও ওইসব প্রাথমিকের শিক্ষকদের ভিন্ন উপায়ে ক্লাস চালিয়ে নিতে বলা হয়েছে। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জেছের আলী বলেন, “পদ্মার তীরবর্তী নিচু এলাকাগুলোর কিছু বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। যে কারণে পাঠাদান ব্যাহত হচ্ছে। আশপাশের উচুঁ জায়গাগুলোয় পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।”

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন বলেন, “নিম্নাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঠ ও শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এর মাঝেও পাঠাদান কার্যক্রম চালানোর জন্য নির্দশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি পানি দ্রুত নেমে গেলে পাঠদান কার্যক্রম পুরোদমে চলবে।”

ঢাকা/মেহেদী/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নদ শ বগঞ জ উপজ ল প ইনব বগঞ জ কর মকর ত র উপজ ল র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্লোটিলা বহরে ভেসে চলা একমাত্র জাহাজ ম্যারিনেট কোথায়

ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-এর একটি মাত্র নৌযান এখনো আটক করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। এই নৌযানটি হলো দ্য ম্যারিনেট।

পোল্যান্ডের পতাকাবাহী এই নৌযানে ছয়জন আরোহী রয়েছেন ।

ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার অনুযায়ী, ম্যারিনেট আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেসে চলেছে। এর গতি ঘণ্টায় প্রায় ২.১৬ নট (ঘণ্টায় প্রায় ৪ কিলোমিটার) , গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে ম্যারিনেটের দূরত্ব  প্রায় ১০০ কিলোমিটার।

বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাহাজটির ক্যাপ্টেন বলেন, ম্যারিনেটের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছিল। এটি  এখন সারানো  হয়েছে।

ফ্লোটিলা আয়োজকেরা বলছেন, ম্যারিনেট নৌযান এখনো স্টারলিঙ্কের মাধ্যমে সংযুক্ত। এটি যোগাযোগের আওতার মধ্যেই রয়েছে। লাইভস্ট্রিমও সক্রিয় আছে।  

ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, অন্য জাহাজগুলো আটক করলেও ম্যারিনেট এখনো ভেসে চলছে।

ম্যারিনেট ফিরে যাবে না বলেও ওই পোস্টে জানানো হয়েছে।  পোস্টে বলা হয়েছে, ‘ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়। ম্যারিনেট হলো ভয়, অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তা।’

ফ্লোটিলা আয়োজকরা আরও লিখেছেন, ‘গাজা একা নয়।’ ‘ফিলিস্তিনকে কেউ ভুলে যায়নি। আমরা কোথাও যাচ্ছি না।’

ফ্লোটিলা বহরের প্রায় সব নৌযানে থাকা অধিকারকর্মীদের আটক করেছে ইসরায়েল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে অনেক দেশ। বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভও হয়েছে।

আরও পড়ুনগাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের৬ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ